ভেড়ামারায় ক্লিনিকের খামখেয়ালীপনায় নবজাতকের মৃত্যু

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ক্লিনিক মালিকের খামখেয়ালীপনায় এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ভেড়ামারা শহরস্থ নিরাময় ক্লিনিকে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এ ব্যাপারে নবজাতকের দাদা মজিবর রহমান বাদী হয়ে ভেড়ামারা থানাসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। স্থানীয় সুশীল সমাজ ক্লিনিকটি বন্ধের দাবি করছে।

লিখিত অভিযোগসূত্রে জানা যায়, গত ২২ মে’ ২০১৬ সকাল ৭টার দিকে মজিবর রহমানের পুত্রবধূ শাপলা খাতুনের (২০) প্রসব বেদনা উঠলে শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত নিরাময় ক্লিনিকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ রোগীর অবস্থা খারাপ উল্লেখ করে তড়িঘড়ি করে শাপলা খাতুনকে ভর্তি করে নেয়। এরপর সেখানে কর্তব্যরত ম্যানেজার আতিকুর রহমান নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে বলে যে, বাচ্চার পজিশন দেখার জন্য রোগীকে জরুরি ভিত্তিতে সনো করা প্রয়োজন। তারপর নিরাময় ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিজস্ব সনোতে রোগীর পরীক্ষা করানো হয়।

সনো রিপোর্ট দেখে ডাক্তার জানায়, বাচ্চা সুস্থ আছে এবং সকল রিপোর্ট স্বাভাবিক আছে। তখন কথিত ডাক্তার আতিকুর রহমান (ম্যানেজার) জানায় যে, বাচ্চা সুস্থ আছে তবে বাচ্চার পজিশন ঠিক নেই রোগীকে সিজার করতে হবে। এরপর কথিত ডাক্তার আতিকুর রহমান, ক্লিনিকের মালিক সিদ্দিকুর রহমান ও সেখানে কর্তব্যরত ৩ জন সেবিকাসহ রোগীকে নিয়ে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করে। এরপর তারা প্রায় ২ ঘণ্টা অপারেশন থিয়েটারে অবস্থান করে। রোগী এবং বাচ্চার অবস্থা বেগতিক দেখে তারা ডাক্তার সফর আলীকে খবর দেন। ডাক্তার আসার প্রায় ৩০ মিনিট পর জানানো হয় শাপলা খাতুন মৃত সন্তান প্রসব করেছেন।

রোগী শাপলা খাতুন জানান, অপারেশন চলাকালীন সময়ে তারা মোবাইলফোনে কথা বলতে থাকে। এক হাতে মোবাইলে কথা বলে এবং অপর হাত দিয়ে তারা অপারেশন কার্য চালাতে থাকে। অপারেশন করার সময় তাদের খাম খেয়ালীপনার জন্যই বাচ্চাটি মারা যায়। আমি বাচ্চাকে দেখতে চাইলে সাথে সাথে আমাকে ঘুমের ইনজেকশন পুশ করে। ঘুমানোর আগ মুহূর্তে আমি শুনতে পাই যে, তারা শলাপরামর্শ করছে বাচ্চাকে গরম পানিতে ডুবানো হোক যাতে বোঝা যায় যে, বাচ্চাটি ৩-৪ দিন আগেই পেটের মধ্যে মারা গেছে। এরপর আমি অচেতন হয়ে পড়ি।