মুজিবনগর উপজেলায় সবুজ সার হিসেবে ধৈঞ্চা চাষ

শেখ শফি: মুজিবনগর উপজেলায় প্রণোদনা কার্যক্রমের আওতায় মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় চাষকৃত ধৈঞ্চা গাছ মাটিতে মেশানো হচ্ছে। আফ্রিকান জাতের এসব ধৈঞ্চা গাছের শিকড়, কাণ্ড এবং পাতার নিচে ছোট ছোট দানার মত গঠন তৈরি হয়। এ গুলোকে নডিউল বলা হয়। ধৈঞ্চা গাছ বাতাসের নাইট্রোজেন সংগ্রহ করে এসব নডিউলে জমা রাখে। এ জন্য ধৈঞ্চা গাছ মাটিতে মিশিয়ে দিলে সেই জমিতে ইউরিয়া সারের অভাব দুর হয়। এছাড়া ধৈঞ্চা গাছের সবুজ পাতা ও কাণ্ড মাটিতে পচে জৈব সারের ঘাটতি পূরণ করে। এ জন্য এটাকে সবুজ সার হিসেবে গণ্য করা হয়।

মুজিবনগর উপজেলা কৃষি অফিসার মোফাক্খারুল ইসলাম জানান, চলতি বছরে মুজিবনগর উপজেলায় প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বল্লভপুর ও যতারপুর গ্রামের ১০ জন কৃষককে বীজ সহায়তা দেয়া হয়েছিলো। এছাড়া মুজিবনগর সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আরো ৩০ জন চাষীকে সবুজ সার হিসেবে ধৈঞ্চা চাষের জন্য বীজ, সার ও অন্যান্য উপকরণ দেয়া হয়েছে। সকলেই আবাদ করেছেন। ইতোমধ্যে অনেকেই মাটির সাথে ধৈঞ্চা গাছ চাষ দিয়ে মিশিয়ে দিয়েছেন। জৈব সারকে মাটির প্রাণ বলা হয়। সবুজ সারও এক প্রকার জৈব সার। সুতরাং জমি পতিত না রেখে সবুজ সার হিসেবে ধৈঞ্চার আবাদ করার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এটা একটা উত্তম পদ্ধতি। মাটির গুনগত মান বজায় রাখার জন্য জৈব সারের বিকল্প নাই। সরেজমিনে মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে সবুজ সার হিসেবে ধৈঞ্চা গাছ মাটিতে মিশানোর দৃশ্য চোখে পড়ে। সংশ্লিষ্ট কৃষকরা মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কৃষি বান্ধব সরকারের এ মহতি উদ্যোগের ভূয়শী প্রশংসা করেছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রম বেশি বেশি গ্রহণ করার জন্য জোর দাবি জানিয়েছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদাপূরণের জন্য রাসায়নিক সারের প্রয়োজন আছে বটে। তবে মাটিতে জৈব পদার্থ না থাকলে কাঙ্খিত ফলন পাওয়া যায় না। তাই জৈব সারের প্রতি কৃষকদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। তাছাড়া নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য জৈব সার একটি অপরিহার্য্য উপকরণ।