আসুন সম্মিলিতভাবে জঙ্গিবাদ নির্মূল করে দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাই

 

এম আর বাবু/সালাউদ্দীন কাজল: জীবননগর উপজেলায় ইসলামের দৃষ্টিতে জঙ্গিবাদ ও জঙ্গি নির্মূলে করণীয় শীর্ষক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা পরিষদ চত্বরে গতকাল শনিবার বেলা ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগরের উদ্যোগে এ আলোচনাসভায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশে একটি মহল বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতা থেকে অবৈধভাবে অপসারণ করতে ও দেশের ভাবমূর্তি বিদেশিদের নিকট বিনষ্ট করতে দেশে জঙ্গিবাদের সৃষ্টি করা হচ্ছে। কিছু বিপথগামী তরুণ ও যুবকদের মগজ ধোলাই করে জঙ্গি বানিয়ে গুলশানে হলি অর্টিজান বেকারিতে এবং শোলাকিয়ায় ঈদের জামায়াতের কাছে হামলা চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, আমার কাছে এমন তথ্য আছে, কিছু মেসে জঙ্গিদের আনাগোনা আছে। তিনি বাড়ি মালিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, মেস ভাড়া দেয়ার আগে ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে তারপর ভাড়া দিতে হবে। এছাড়াও বাইরে যাদের ছেলে-মেয়ে লেখাপড়া করছে তার কি করছে তার খবর নিয়মিত পরিবারকে রাখতে হবে।

সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর আরও বলেন, যারা ইসলাম সম্পর্কে কিছুই বোঝে না এমন ছাত্রদের মগজ ধোলাই করে জঙ্গি বানানো হচ্ছে। তিনি বলেন, আমার কাছে এমন তথ্য আছে যে জীবননগর উপজেলার বাঁকা ও মাধবপুরে জঙ্গি আছে। তিনি বলেন বর্তমান সরকার মাদরাসা ও মসজিদের উন্নয়নে ব্যপক কাজ করেছে। এমন কোনো মসজিদ-মাদরাসা নেই যেখানে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। প্রধান অতিথি বলেন, আসেন আমরা সম্মিলিতভাবে এই জঙ্গিবাদকে নির্মূল করে বর্তমান সরকারে যে লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করে উন্নতির শিখরে নিয়ে যায়।

উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মো. আব্দুল লতিফ অমলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক দিয়ে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন  চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মো. রশীদুল হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ১৪ দলীয় জেলা সমন্বয়ক আজাদুল ইসলাম আজাদ, জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরুল হাফিজ, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোশাররফ হোসেন মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোর্তূজা, পৌর মেয়র জাহাঙ্গীল আলম ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাজি হাফিজুর রহমান।

উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম ঈশার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় এছাড়াও ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলী আখতার, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলী আহাম্মদ, রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান তাহাজ্জত হোসেন, উপজেলা আলিম মাদরসার অধ্যক্ষ মাও. আব্দুল খালেক, হাসাদাহ মডেল ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাও. আক্তারুজ্জামান, মনোহরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সোহরাব হোসেন খান সুরুদ্দিন, মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আকরাম হোসেন সন্টু ও উথলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোয়াইব হোসেন  বক্তব্য রাখেন।

সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে কোনোভাবেই জঙ্গিবাদের উত্থান হতে দেয়া যাবে না। যেখানে ইসলামের দৃষ্টিতে বিনা কারণে একটি গাছের পাতাও ছেঁড়া যায় না, সেখানে মানুষ হত্যার কি কারণ থাকতে পারে? মানুষ হয়ে মানুষ হত্যা করে বেহেস্তে যাওয়া যাবে না। বক্তারা আরও বলেন, বাড়ির পোষা ছাগলটি সন্ধ্যার পর বাড়ি না ফিরলে আমরা টাকা খরচ করে মাইকে প্রচার করে থাকি অথচ ছেলে-মেয়ে বাড়ি ফিরলো কি-না তার খবর আমরা রাখি না। তবে এ ব্যাপারে অবশ্যই অবিভাবকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সভায় মসজিদের ইমাম. স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষক, রাজনৈতিক দলের নের্তৃবৃন্দ ও সূধীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।