অজ্ঞানপার্টি : বিশ্বাসঘাতক বিষ নিঃশ্বাস ছাড়ছে ঘাড়ে

 

সর্বনাশ! অজ্ঞানপার্টি আমাদের অন্দরে পৌঁছে গেছে। বিষ নিঃশ্বাস ছাড়ছে ঘাড়ের কাছে। ফলে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের পদস্থদের একটু তৎপর না হলে কারোরই আর রেহাই নেই। একটি জেলা শহরের খাবার হোটেলের খাবার খেয়েও যদি অজ্ঞান হতে হয়, তাহলে আমরা তথা আমজনতা কতোটা অসহায়? একটু ভেবে দেখুন কর্তাবাবুরা।

অজ্ঞান পার্টির ক’জন সদস্য নিয়ে কবে তাদের অপতৎপরতা শুরু করে তা নিয়ে বির্তক থাকলেও ওই পার্টির সদস্য সংখ্যা যে বেড়েছে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। শুধু কি সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি? বেড়েছে প্রতারণার পরিধি। একসময় দূরপাল্লার ট্রেন, বাস, স্টিমার, লঞ্চে ওদের উপস্থিতি তথা অপকর্মের ছাপ পাওয়া যেতো। শক্তহাতে দমাতে না পারার কারণে ওদের অপতৎপরতা বেড়েই চলেছে। ফলে পথে-ঘাটে হাটে-মাঠে যেখানে সেখানেই এখন ওরা প্রতারণার ফাঁদ পাতে। ফাঁদের টোপেও এনেছে অভিনবত্ব বিশ্বাসঘাতকতা। যে কারণে শুধু অপরিচিতের কিছু দেয়া না খাওয়া বা লোভ সম্পর্কে সতর্ক থাকলেই হচ্ছে না, বিশ্বাসভঙ্গের তথা বিশ্বাসঘাতকার শিকার হওয়ার শঙ্কা এখন পদে পদে। একটি হোটেলের খেঁচুড়ি খেয়ে অজ্ঞান হওয়া কি বিশ্বাসঘাতকতা নয়? ভাগ্যিস একজন রুটি খেয়েছিলেন। না হলে ওদের কাছে থাকা সাড়ে সাত লাখ টাকাই শুধু হারাতে হতো না, প্রাণটাও ঝরে যাওয়ার শঙ্কা ছিলো।

টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার পশুহাট থেকে গরু কিনে বিভিন্ন শহরে চালান করেন। তাদের আবাসিক হোটেলে থাকতে হয়, খাওয়ার হোটেলে খেতে হয়। বাস-ট্রেনে চলতে হয়। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারার ব্যর্থতা অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের। এলাকার দায়িত্বশীলরাও দায় এড়াতে পারেন না। যেকোনো এলাকার অর্থনৈতিক সচ্ছলতা কতোটা সেটা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নির্ভর করে সার্বিক নিরাপত্তার ওপর। একটি হোটেলে খেতে বসে হোটেলে নিযুক্ত কর্মচারীর সরবরাহকৃত খাবার খেয়ে যদি প্রতারিত হতে হয় তাহলে বুঝতে আর বাকি থাকে না, ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা কতোটা নড়বড়ে অবস্থায় পৌঁছেছে। অবশ্যই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আর তা করতে হলে দরকার আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের মাঠপর্যায়ে কর্মরতদের আন্তরিক প্রচেষ্টা।

চুয়াডাঙ্গার কোন হোটেলের কোন কর্মচারী নাকি হোটেল মালিকও অজ্ঞানপার্টির সদস্য তা নিশ্চিত করতে দরকার তদন্ত। হোটেলের খাবার খেয়ে প্রতারিতরা যেহেতু বহিরাগত, সেহেতু তাদের নিকট থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়ার আশা করা অবান্তর। দোষী হোটেলসহ দোষীদের ধরে আইনে সোপর্দ করে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করার দায়িত্ব পুলিশেরই।