প্রসঙ্গ : চিকিৎসাসেবা পাওয়ার অধিকার

 

ধনী-গরিব বিভাজনের সুযোগ নেই। চিকিৎসাসেবা পাওয়া সকলের অধিকার। এ অধিকার পূরণে সরকার সাংবিধানিকভাবে দায়বদ্ধ। এরপরও সরকারি হাসপাতালে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা যায়নি। যদিও সরকারের দাবি চেষ্টায় ত্রুটি নেই। অথচ ভ্যাকসিন না থাকার কারণে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর মৃত্যুর পরও কৈফিয়ত তলবের তেমন নজির মেলে না। সবই যেন গাঁসওয়া। সাপে কাটা রোগী যথাসময়ে হাসপাতালে নেয়ার পরও চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই খাটো করে দেখা উচিত নয়।

অবশ্যই অপচিকিৎসায় কেউ মারা গেলে তার দায় স্বাস্থ্য বিভাগ এড়াতে পারে না। যদিও অজুহাতের অন্ত নেই। ঝাঁড়ফুঁক, ওঝা-কবিরাজ হাতুড়ের অপচিকিৎসায় অসংখ্য মানুষের শুধু মৃত্যুই হয় না, ভুল চিকিৎসার কারণে জটিল রোগে ভুগে পুরো পরিবারকেই সর্বশান্ত করে মরতে হয় অনেকের। যদিও অপচিকিৎসা রোধে তেমন তোড়জোড় লক্ষ্য করা যায় না। এরপরও সচেতনতার আলো ছড়ানোর কারণে অনেকেই ওঝা-কবিরাজের অপচিকিৎসায় মরতে চান না। যেমন বিগত দিনের তুলনায় বর্তমানে সাপে কাটা রোগী বহুলাংশে কম মরা যায়। কারণ ওঝা-কবিরাজের ওই ঝাঁড়ফুঁক এড়িয়ে অধিকাংশকেই দ্রুত নেয়া হয় সদর হাসপাতালে। সরকারি হাসাতালে ভ্যাকসিনের অভাবে ভর্তি রোগীর মৃত্যুর পরও কি বলতে হবে, সকলের জন্য সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে?

সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর অধিকাংশেরই বাইরে থেকে ওষুধ কেনার জন্য চিরকুট ধরিয়ে দেয়া হয়। অথচ বছরান্তে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ-পথ্য পুড়িয়ে দেয়ার তথ্য পাওয়া যায়। রোগীর ওষুধ কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে, আর জনগণের অর্থে কেনা ওষুধ চুরির বিষয়টি যেমন অস্বীকার করা যায় না, তেমনই সরকারি ওষুধ প্রকৃত রোগীই পাবে তা নিশ্চিত করার মতো পদ্ধতিগত ত্রুটিও বিদ্যমান। তা না হলে মেয়াদোত্তীর্ণ হয় কীভাবে? কেনইবা ভ্যাকসিনের অভাবে রোগী মারা যায়?