চুয়াডাঙ্গায় প্রভাষকসহ ৭ মেহেরপুরে চিকিৎসকসহ ৪ জন করোনা আক্রান্ত 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় এক প্রভাষকসহ আরও ৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাতে স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে আসা ৩৬টি রিপোর্টের মধ্যে ৭ জনের পজিটিভ হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা জেলায় মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২শ ২৯। মেহেরপুরে আইসোলেশন ইউনিটে কর্মরত এক নারী চিকিৎসকসহ চারজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তিন উপজেলার ৫৬টি নমুনা পরীক্ষায় এ চারজনের করোনভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৮০ জন। তবে, বাকি তিনজন কিভাবে আক্রান্ত হয়েছেন তার নির্দিষ্ট তথ্য পাইনি স্বাস্থ্য বিভাগ। ফলে সামাজিক সংক্রমণ নিয়ে নতুন দুশ্চিন্তা শুরু হয়েছে মেহেরপুরে।
চুয়াডাঙ্গায় আরও ৭ জনের করোনা আক্রান্তের বিষয় নিশ্চিত হয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বুধবার রাতে স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে আসা ৩৬টি রিপোর্টের মধ্যে ৭ জনের পজিটিভ হয়েছে। এদের মধ্যে আলমডাঙ্গার হারদী কলেজের একজন প্রভাষকও রয়েছেন। করোনা উপসর্গ থাকায় বুধবার চুয়াডাঙ্গার আরও ৩৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে প্রেরণ করা হয়েছে।
বুধবার যে ৭ জনের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে তাদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়ার একজন, গুলশানপাড়ার দুজন ও সদরের রেশমা নামের এক নারী। তার ঠিকানা পাওয়া যায়নি। আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদী কলেজের একজন প্রভাষক ও গোবিন্দপুরের একজন, দামুড়হুদা উপজেলার হাউলি জয়রামপুরের একজন। এ নিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলায় এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২৯। বুধবার আরও ৯ জন সুস্থতা পেয়েছেন। মোট আক্রান্তের মধ্যে মোট সুস্থ হওয়ার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১শ ৪১ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল আইসোলেশনে রয়েছেন ২১ জন। বাকিরা রয়েছেন বাড়ি। এদের মধ্যে তিতুদহের গবরগাড়ারর একজন সম্প্রতি ঢাকা থেকে করোনা উপসর্গ নিয়ে বাড়ি ফেরেন। স্থানীয়দের চাপের মুখে নমুনা দেয়। তার করোনা পজিটিভ হলেও তিনি নিরুদ্দেশ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ঢাকা থেকে বাড়ি গবরগাড়ায ফিরে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ঘুরেছে ইচ্ছেমতো। নমুনা দেয়ার পর থেকেই সে বাড়ি ছাড়া।
প্রসঙ্গত: চুয়াডাঙ্গায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন মোট ৫ জন। এদের মধ্যে ৩ জনের রিপোর্ট পজিটিভ হয়েছে। একজনের নেগেটিভ। অপরজন দর্শনা শ্যামপুরের। তার রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, বুধবার রাত নয়টা পূর্ব ২৪ ঘন্টায় জেলায় চিকিৎসক ও পুলিশ সদস্যসহ আরও চারজন কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়েছেন। এ সময়ে জেলার তিন উপজেলা থেকে সংগ্রহকৃত ৫৬টি নমুনা পরীক্ষায় এ চারজন করোনভাইরাস সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছে বলে জানান সিভিল সার্জন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৮০ জন। মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দীন জানান, আক্রান্ত চারজনের মধ্যে একজন মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের এক নারী মেডিকেল অফিসার। ওই নারী চিকিৎসক করোনা আইসোলেশন ইউনিটে কর্মরত। আক্রান্ত আরেকজন হচ্ছেন পুলিশ কনস্টেবল। তিনি মেহেরপুর পুলিশ লাইনে কর্মরত। অপরজন শহরের মল্লিকপাড়ার বাসিন্দা। যিনি ৩৭ বছর বয়সী এক নারী। আক্রান্ত অপরজন হচ্ছেন মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান গ্রামের এক নারী। যার বয়স ৪০ বছর। আক্রান্ত চিকিৎসক করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা দিতে গিয়ে সংক্রমিত হয়েছেন বলে ধারণা করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে পুলিশ সদস্য এবং ওই দুই নারী স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত। তারা কার মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন তা নির্দিষ্ট তথ্য পাইনি স্বাস্থ্য বিভাগ। ফলে সামাজিক সংক্রমণ নিয়ে নতুন দুশ্চিন্তা শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বুধবার (০১ জুলাই) পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্ত ৮০ জনের মধ্যে সদরে ৪০, গাংনীতে ৩৩ ও মুজিবনগরে ৭ জন। এর মধ্যে মোট সুস্থ হয়েছেন ২৫ জন আর মৃত্যু ৫ জনের। স্স্থুদের মধ্যে সদরে ১২, গাংনীতে ১০ ও মুজিবনগরে ৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে অন্যত্র প্রেরণ করা হয়েছে ৫জনকে। তাই জেলায় বর্তমানে পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ৩৪ জন বলে সির্ভিল সার্জন সূত্রে জানা গেছে।
ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে, কোটচাঁদপুরে আইজউদ্দীন (৬০) নামে এক ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মারা গেছেন। তিনি উপজেলার কুশনা গ্রামের বাসিন্দা ও মৃত সমশের ম-লের ছেলে। মৃত আইজউদ্দীন ছিলেন মালয়েশিয়া প্রবাসী। তিনি গত রোজার আগে দেশে আসেন। ঈদুল ফিতরে তার ছেলে ঢাকা থেকে বাড়িতে এসেছিলেন। আইজদ্দীন, তার স্ত্রী ও ছেলের নমুনা পরীক্ষা করা হলে তিনজনের রেজাল্টই পজেটিভ আসে। ছেলের থেকে আইজউদ্দীন ও তার স্ত্রীর শরীরে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে বলে স্থানীয়দের ধারণা। করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত হওয়ার পর তারা যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। ছেলে ও স্ত্রী সুস্থ হয়ে গেলেও মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আইজউদ্দীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজনিন সুলতানা। তিনি দাফনের জন্য মরহুমের নিকটতম স্বজনদের মধ্যে ৩-৪ জনকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন এবং দাফনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দেন। সেই মোতাবেক রাতেই মরহুমের লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More