চতুর্থ ধাপের পৌরসভা নির্বাচন সম্পন্ন : পটিয়ায় কাউন্সিলর প্রার্থীর ভাই খুন

বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ বর্জন কেন্দ্র দখলে ভোটগ্রহণ

স্টাফ রিপোর্টার: বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, কেন্দ্র দখল, ককটেল বিস্ফোরণ ও ভোট বর্জনের মধ্যদিয়ে চতুর্থ ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। অন্তত ১১টি পৌরসভায় এসব ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে চট্টগ্রামের পটিয়ায় এক কাউন্সিলর প্রার্থীর ভাই খুন হয়েছেন। বেশ কয়েকটি পৌরসভায় গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে। ভোট দিতে গিয়ে গোলাগুলির এক পর্যায়ে ৭০ বছর বয়স্ক একজন নারীও গুলিবিদ্ধ হন। ভোটকেন্দ্র দখল ও সংঘাতের ঘটনায় তিনটি পৌরসভার সাতটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছেন সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসাররা। বেশ কয়েকটি পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থীরা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেন। বাকি পৌরসভাগুলোয় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। রোববার ৩৪টি জেলার ৫৫টি পৌরসভায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ২৯টিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ও ২৬টিতে কাগজের ব্যালটে ভোট হয়। নির্বাচন কমিশন আশা প্রকাশ করেছিলো, চতুর্থ ধাপ থেকে পরবর্তী নির্বাচনগুলোয় বড় ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটবে না। কিন্তু এ ধাপের নির্বাচনে ভোট চলাকালে কেন্দ্রের বাইরে সহিংসতায় একজনের প্রাণ গেছে। কেন্দ্র দখল ও অনিয়মের ঘটনায় যে সাতটির ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে সেগুলো হলো: নরসিংদী পৌরসভার চারটি, শরীয়তপুরের ডামুড্যা পৌরসভার দুটি ও নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী পৌরসভার একটি। তবে এ ধাপের পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোটগ্রহণ শেষে নির্বাচন ভবনে ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেছেন, ভালো ভোট হয়েছে। চট্টগ্রামের পটিয়ায় নির্বাচনি সংঘাতে প্রাণহানির জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীকে দায়ী করেন। তিনি দাবি করেন, খুনের ঘটনার পরও সেখানে ভোট দেয়ার মতো পরিবেশ ছিলো।
প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চট্টগ্রামের পটিয়ায় ভোট চলাকালে কেন্দ্রের বাইরে কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুল মান্নান ও সরোয়ার কামাল রাজিবের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি হয়। তারা দুজন আওয়ামী লীগ সমর্থক। সংঘর্ষের সময়ে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুল মান্নানের ছোট ভাই আবদুল মাবুদ মারা যান। সংঘর্ষে আটজন আহত হন। একই জেলার চন্দনাইশে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে দুপক্ষের অন্তত পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। এর মধ্যে ৭০ বছর বয়স্ক আনজুমান খাতুনও রয়েছেন।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে একজন গুলিবিদ্ধ ও অন্তত ১০ জন আহত হন। এ সময় দুজন সাংবাদিকও আহত হন। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ভোটকেন্দ্রের পাশে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। সাতক্ষীরা পৌরসভার রসুলপুর কেন্দ্রে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হন। হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে একটি কেন্দ্র দখল করতে হঠাৎ করে ৫০-৬০ জন যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান। এতে আতঙ্কে ভোটাররা দিগবিদিক ছুটে পালান।
লালমনিরহাট পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন চলাকালে একজন সাংবাদিককে মারধর করেন সরকার সমর্থকরা। রাজশাহীর নওহাটা পৌরসভায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা কেন্দ্র দখল করতে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে সহিংসতা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হন। ময়মনসিংহের ফুলপুর পৌরসভায় দুটি কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। নরসিংদী পৌরসভায় একটি কেন্দ্রে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ককটেল সাদৃশ বস্তু নিক্ষেপ করা হয়। টাঙ্গাইলের কালিহাতী পৌরসভায় দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত চারজন আহত হয়েছেন।
এছাড়া অনিয়মের অভিযোগে ফরিদগঞ্জ, লালমনিরহাট, তাহিরপুর, মুন্সীগঞ্জ, আলমডাঙ্গা, জীবননগর ও বাগেরহাটসহ বেশ কয়েকটি পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থীরা নির্বাচন বর্জন করেছেন। তবে বাকি পৌরসভায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More