সমাজে মানুষ বাড়লে অমানুষ কমে

(অ)মানুষ এর ‌‌'অ' দূর করার দায়িত্ব মানুষেরই। 

পুলিশ-জনতা সোচ্চার হলে চোর লুকোনোর জায়গা পাবে না
চোর যতোই চতুর হোক, ধরুক ছদ্মবেশ। একটু সোচ্চার হলেই ওদের ধরা সম্ভব। কথায় আছে, চোরের সাতদিন গেরস্থের একদিন। কথিত উক্তির ওপর ভর করে সাতদিন অপেক্ষা করলে খেসারতের মাত্রা কতদূর গিয়ে ঠেকবে তা বলা মুশকিল। চোর চুরি করছে আর গৃহস্ত বা গেরস্থ তা দেখছে আর বলছে ‘দেখি না কী হয়।’ সমাজে এ রকম মানুষও রয়েছে। চোর এ রকম মানুষই খোঁজে। একের পর এক চুরি করে ধরা না পড়লে চোর এক পর্যায়ে সকলকেই বোকা ভাবতে শুরু করে। চুরির মাত্রা বেড়ে যায়। তখনই মূলত বিষয়টি সমাজের দায়িত্বশীলদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেমন মোটরসাইকেলযোগে গ্রাম বাংলার রাস্তায় ঘুরে সুযোগ বুঝে রাজহাঁস ছাগল থেকে শুরু করে শিশু-কিশোরদের হাতে থাকা সেলফোন হাতিয়ে নিয়ে পালানোর ঘটনা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের শিরোনামেই ‘সাবধান’ শব্দটি জুড়ে দেয়া হয়েছে। এতে কি চুরি থামবে, থেমেছে কি কখনো? না।
এক সময় গ্রাম বাংলায় সিঁধেল চোরের উপদ্রব ছিলো, তারা মাটির ঘরের দেয়ালের নিচের কিছু অংশ কেটে ভেতরে ঢুকে চুরি করতো। ধরা পড়লেও যাতে হাতফসকে পালাতে পারে সে জন্য গায়ে চুপচুপে করে তেল মাখতো। এখন সেই সিঁধেল চোর নেই বললেই চলে। তবে সম্প্রতি বরিশালে একদল সিঁধেল চোর ঘরে ঢুকে চুরির পাশাপাশি এক বধূকে ধর্ষণ করে পুলিশকেও বোকা বানিয়েছে। অবশ্য চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুরসহ পাশর্^বর্তী এলাকায় বহুদিন ধরেই ওরকম চুরির খবর পাওয়া যায়নি। তাই বলে কি চোর নেই। না, চোর আছে সিঁধ কাটার মতো ঘরের দেয়াল পায় না। আর সেটা পায় না বলেই ওরা এখন গ্রিল কাটে। স্বর্ণকারের দোকানেও লোহার শাটার কেটে দিব্যি চোর পালিয়ে যায়, পালিয়ে থাকে। এইতো একদিন আগেই মেহেরপুর জেলা শহরে এক জুয়েলারি দোকানে চোর চুরি করে পালিয়েছে। গতকালের দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় এ খবরটিও যেমন উঠে এসেছে, তেমনই গ্রামের রাস্তা ঘাটে মোটরসাইকেল নিয়ে ছদ্মবেশী চোর ছিনতাইকারী ঘুরঘুর করছে বলে একটি প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, চুয়াডাঙ্গার কুন্দিপুরসহ পাশর্^বর্তী এলাকায় কয়েকদিনের মধ্যেই দিবালোকে চোরের উপদ্রব লক্ষ্য করা গেছে। মোটরসাইকেলযোগে ছদ্মবেশে ঘোরা চোরদের অবশ্য এলাকাবাসী উড়ন্ত ছিনতাইকারী হিসেবে অখ্যায়িত করেছে। এ ধরনের চোর বা ছিনতাইকারী কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভয়ানক হয়। কেন না, ওরা শিশুদের দুর্বল ভেবে চুরি ছিনতাই করতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। ধরা পড়লে ওরা সটকে যাওয়ার জন্য বড় ধরনের সর্বনাশও ঘটিয়ে ফেলতে পারে।
চোর কিংবা ছদ্মবেশী চতুর ছেঁচড়া ছিনতাইকারীদের উপদ্রব ঠেকাতে পুলিশ এবং সমাজের সচেতনমহলকে বাড়তি দায়িত্ব পালন ছাড়া বিকল্প নেই। যদিও জনসংখ্যা অনুপাতে পুলিশের অপ্রতুলতা অস্বীকার করা যায় না। তবুও হাতেগোনা কিছু অপরাধীর কারণে সমাজের শান্তিপ্রিয় কোনো একজনের জানমাল নিরাপত্তাহীন হোক তা মেনে নেয়া যায় না। চোর বা ছিনতাইকারী আকাশ থেকে পড়ে না, ওরাও সমাজেরই বাসিন্দা। ওদের মধ্যে যে অপরাধ প্রবণতা আছে তা সমাজের জন্য ক্ষতিকর। অপরাধীদের যতো দ্রুত ধরে আইনে সোপর্দ করা সম্ভব হবে, সমাজ ততো দ্রুত অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি থেকে রক্ষা পাবে। যেহেতু পুলিশের গোপন সংবাদদাতা নিযুক্ত করার সুযোগ রয়েছে, রয়েছে গোয়েন্দা। এদের কাজে লাগিয়ে অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় নেয়া অসম্ভব নয়। পুলিশি তৎপরতার পাশাপাশি সমাজের সচেতন দায়িত্বশীলেরা আন্তরিক হলে চোর বা ছিনতাইকারী যতোই চালাক চতুর হোক তাদের পালাবার পথ থাকে না। লুকোবে কোথায়?

পুনশ্চঃ সমাজে মানুষ বাড়লে অমানুষ কমে। (অ)মানুষ এর ‌‌’অ’ দূর করার দায়িত্ব মানুষেরই। 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More