করোনা উপসর্গ নিয়ে ২০ জনের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গতকাল ১১ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে একজনের করোনা পজেটিভ ছিলো এবং ১০ জন উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। এছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলায় সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টের মতো করোনা উপসর্গ নিয়ে দুজন শিক্ষক, একজন আওয়ামী লীগ নেতা ও একজন আইনজীবীসহ আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সব মিলিয়ে উপসর্গ নিয়ে ২০ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে হাসপাতালে নেয়ার পথে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ফেনীতে দুজন, কুমিল্লায় চারজন, রাজশাহীতে দুজন, ময়মনসিংহে একজন ও চট্টগ্রামে একজন মারা গেছেন। সংশ্লিষ্টদের বাড়িঘরও লকডাউন করেছে প্রশাসন। করোনা সন্দেহে পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করাও হচ্ছে। অনেকেই হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেলে মৃত্যু ১১ জনের: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ১১ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ১ জনের করোনা পজেটিভ ছিলো। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে গতকাল বিকেলের মধ্যে তারা মারা গেছেন। মৃত্যু ব্যক্তিরা হলেন আখতারুজ্জামান খান (৬৯), বশির উল্লাহ (৬০), মাকসুদা (৫৭), তাজুল ইসলাম (৫৫), আমিনা (৫ মাস), মজিবুর রহমান (৬৫), রহিমা (৫০), জুলফিকার (৪৫), তাহমিনা (২৮), আনোয়ার (৬৫) ও ফয়েজুর (৭০)।
জেলায় জেলায় ১০ জনের মৃত্যু: আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যানুযায়ী- ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় করোনা ভাইরাসের উপসর্গ জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে এক মাদরাসা শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম মো. ইব্রাহীম (৪৫)। তিনি সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি স্থানীয় এক মাদরাসার শিক্ষক ছিলেন।
এছাড়া ফেনীর ছাগলনাইয়ায় করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও এক শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা নেয়ার পথে আবদুল মোমিন পাটোয়ারী (৪৪) নামে ওই শিক্ষকের মৃত্যু হয় বলে বাঁশপাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান জানান। নিহত আবদুল মোমিন ছাগলনাইয়া পৌরসভার বাঁশপাড়া গ্রামের পাটোয়ারী বাড়ির বাসিন্দা ও ছাগলনাইয়া একাডেমি কিন্ডার গার্টেন স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক। জানা গেছে, তিনি করোনা উপসর্গ নিয়ে স্থানীয় এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার ঢাকায় নেয়ার পথে সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়।
কুমিল্লা কভিড-১৯ হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাতে ছয় ঘণ্টার মধ্যে চারজন মারা গেছেন। তাদের তিনজনই বৃদ্ধ। জানা গেছে, কুমিল্লা নগরের ৪৬ বছরের এক নারী বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটে মারা যান। জেলার চান্দিনা উপজেলার ৬০ বছরের এক বৃদ্ধ রাত ১০টায়, চান্দিনা উপজেলার ৬০ বছরের এক নারী রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে এবং লাকসাম উপজেলার এক বৃদ্ধ (৬৫) রাত ২টায় মারা গেছেন। এর মধ্যে নগরের ওই নারী ও চান্দিনার বৃদ্ধ গতকাল সকালে এসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। চান্দিনার বৃদ্ধ ২৩ জুন এবং লাকসামের বৃদ্ধ ২৪ জুন ভর্তি হন। তাদের প্রত্যেকেরই শ্বাসকষ্ট ছিলো। ক্রিটিক্যাল (সংকটাপন্ন) অবস্থা হওয়ায় মারা গেছেন। রাজশাহীতে একজন আইনজীবী করোনা উপসর্গ নিয়ে নিজ বাসায় মারা গেছেন। এছাড়া উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন রাজশাহী নগরীর পাঠানপাড়া এলাকার বাসিন্দা বুলবুলি বেগম (৬০)। তিনি উপসর্গ নিয়ে রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই তিনি মারা যান।
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় গলাব্যথা, শ্বাসকষ্ট ও জ্বর নিয়ে এক রিকশা-ভ্যান চালকের (৫৫) মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ভালুকা পৌর সদরের নিজ বাড়িতে ওই ব্যক্তি মারা যান। জানা যায়, কয়েক দিন ধরে ওই ব্যক্তি জ্বর, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। রাতে শ্বাসকষ্টের তীব্রতা বেড়ে যায়। বেশ কিছুক্ষণ পর নিজ বাড়িতেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। চট্টগ্রামের রাউজানে শ্বাসকষ্ট, জ্বরসহ কভিড-১৯ এর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আওয়ামী লীগের এক নেতা (৬৩)। গতকাল ভোররাত ৪টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মারা যাওয়া ব্যক্তি রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More