গাংনীতে ৩২ মাসের নাটকীয়তার অবসান মালয়েশিয়া থেকে ফিরলো হৃদয়ের মরদেহ

স্টাফ রিপোর্টার: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বহুল আলোচিত ‘আশা অফিস হৃদয় নিখোঁজ’ নাটকের শেষ দৃশ্য হাজির হয়েছে ৩২ মাস পর। অবশেষে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেছে হৃদয় হোসেনের মরদেহ। ২০২২ সালের ২ অক্টোবর সকালে গাংনীর বাওট এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি এনজিও ‘আশা’র অফিসে সিঁড়ি ও কক্ষে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ দেখা গেলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। সেইসঙ্গে নিখোঁজ হন ওই অফিসের পিওন ও বাবুর্চি হিসেবে কর্মরত ১৮ বছর বয়সী হৃদয় হোসেন। ঘটনার পরপরই উত্তেজিত জনতা অফিসের শাখা ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামকে আটক করে বেদম মারধরের পর পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরিবারের অভিযোগ ছিল-১ অক্টোবর রাতে হৃদয়কে ম্যানেজার আমিনুল ইসলামসহ কয়েকজন লোক বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। তারা হৃদয়ের পরিবারের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেও হৃদয়কে আর ফেরত না পাঠিয়ে পরদিন সকালে ‘রক্তমাখা অফিস’ রেখে উধাও হয়ে যায়। হৃদয়ের পরিবার দাবি করে, অফিসের মাঠকর্মী ও শাখা ব্যবস্থাপকের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্কের ভিডিও হৃদয় ধারণ করে ফেলেছিলো। সে ভিডিও নিয়ে হৃদয়কে হুমকি দেয়া হয়েছিল। মনে হচ্ছে, পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে মরদেহ গুম করা হয়েছে। ঘটনার সময় এই অভিযোগে উত্তপ্ত হয় পুরো বাওট এলাকা। এনজিও অফিস ঘেরাও করে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরিবারও দাবি করে আসছিল হৃদয়কে হত্যার পর তার লাশ গুম করা হয়েছে। তবে সেই নাটকের মোড় ঘুরল ৩২ মাস পর। হঠাৎ করেই হৃদয়ের মৃত্যু সংবাদ পাওয়া যায় মালয়েশিয়া থেকে। জানা যায়, দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত হৃদয় সেখানে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার মরদেহ দেশে আনা হয়। স্থানীয়দের মধ্যে চলছে ভিন্নমত, বাওট এলাকায় এই ঘটনা ঘিরে নতুন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কেউ বলছেন, এতো বছর ধরে পরিবারের দাবি ছিল ছেলে গুম বা হত্যা হয়েছে। কিন্তু সে যে বিদেশে ছিল, এটা গোপন ছিল কীভাবে? তাহলে কি পুরো ঘটনাটাই সাজানো ছিল? আরও অনেকে বলছেন, হৃদয় হয়তো আশার অফিসে কোনো আর্থিক অনিয়ম বা অবৈধ কর্মকা- জেনে ফেলেছিল। পরে সেগুলো থেকে বাঁচতেই এই নাটক সাজানো হয়েছিল। কিংবা উল্টো হৃদয়ই কোনও অর্থ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে আত্মগোপনে মালয়েশিয়া চলে যায়।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More