আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গা বিএনপির পরিচ্ছন্ন সংগঠক এমদাদুল হক ডাবু আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল রোববার বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস ও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। ভারত থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। শেষবারের মতো আর ফেরেননি। তার মৃত্যুতে বিভিন্ন মহল শোক জানিয়েছে। এক শোকবার্তায় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদল গভীর শোক প্রকাশ করেছে। জেলা ছাত্রদল এক শোকবার্তায় বলেন, এমদাদুল হক ডাবু ছিলেন জাতীয়তাবাদী পরিবারের অকৃত্রিম বন্ধু, দলের নিবেদিত অন্তপ্রাণ মানুষ। তার মৃত্যুতে দলের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেলো। জেলা ছাত্রদল শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করছে।
রাজনৈতিক জীবন: জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দর্শনের অবিচল সেনানী ছিলেন তিনি। জাতীয়তাবাদী মতাদর্শ পথের নীরব বিশ্বাসের অক্লান্ত পথিক ছিলেন। কালিদাসপুরের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেয়া এমদাদুল হক ডাবুর রাজনীতিতে হাতেখড়ি ছাত্রদল দিয়ে। তার পিতা প্রয়াত আব্দুল মালেক মিয়া ছিলেন জাতীয়তাবাদী দলের বিশিষ্ট নেতা। তার অন্যান্য ভাই ও চাচাতো ভাইয়েরাও বিএনপির নেতৃত্বের সাথে ওতপ্রোতোভাবে জড়িত। এমদাদুল হক ডাবু ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা যুবদলের প্রাক্তন সভাপতি, চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য (সাবেক) ও বর্তমানে আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি। ব্যক্তিজীবনে একজন আদর্শবাদী মানুষ হিসেবে পরিবারেও ছিলেন দায়িত্বশীল। তার স্ত্রী ও একমাত্র পুত্র সন্তানকে নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন এক আত্মিক আবহ। নানাবিধ দায়িত্ব ও ব্যস্ততার মাঝেও পরিবারের প্রতি নিবেদিত ছিলেন। শিক্ষিত, নম্র ও সমাজসচেতন সন্তান রেখে গেছেন তিনি।
শোকের ছায়া: তার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই আলমডাঙ্গার আকাশটা যেন ভারি হয়ে ওঠে। অব্যক্ত যন্ত্রণায় মুক হয়ে যায়। মুহূর্তে শহর বিষন্নতার কালো মেঘে ছেয়ে যায়। বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, সুশীল সমাজ ও সাধারণ মানুষ শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। তার আকস্মিক মৃত্যুতে আলমডাঙ্গা উপজেলা ও পৌর বিএনপির পক্ষ থেকে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়েছে। আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ সাইফুল ইসলামও অনুরূপ শোকবার্তা প্রদান করেছেন। নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেছেন, ‘এমদাদুল হক ডাবু ছিলেন সংগঠনের আদর্শিক সৈনিক। তার মৃত্যু আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’ বিপক্ষ মতের রাজনীতিকরাও তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন। কারণ তিনি কখনোই কাউকে অপমান করেননি, ব্যঙ্গ করেননি, গালিগালাজ করেননি। জানাজা শেষে আজ সোমবার সকাল ১০টায় মরহুমের লাশ কালিদাসপুর দক্ষিণপাড়া গোরস্তানে দাফন করা হবে। মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনায় পরিবারের পক্ষ থেকে সকলের নিকট দোয়া চাওয়া হয়েছে। আজকের পর পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক এমদাদুল হক ডাবুকে আর দেখা যাবে না। তিনি হারিয়ে গেলেন, কিন্তু রেখে গেলেন এক ধ্রুপদী শূন্যতা যেখানে কেউ হয়তো দাঁড়িয়ে থাকবে কিন্তু কেউ আর হবেন না এমদাদুল হক ডাবু।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.