সমমনা দলের বার্তা : ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে

বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে ১২ দলীয় জোটের বৈঠক

স্টাফ রিপোর্টার: ডিসেম্বরের মধ্যেই সংসদ নির্বাচন চায় বিএনপি এবং তাদের যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী দল ও জোট। এ সময়ে নির্বাচন আয়োজনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় বেধে দেয়ার জন্য বিএনপিকে বার্তা দেয়া হয়েছে। এই ইস্যুতে এপ্রিল কিংবা মে মাস থেকে যার যার অবস্থান থেকে দলীয় কর্মসূচি পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া যুগপৎভাবেও কর্মসূচি দেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। তবে এখনই বড় কর্মসূচিতে নয়, নির্বাচনের ইস্যুতে জনমত গঠনে সভা, সমাবেশ এবং গণসংযোগসহ জনসম্পৃক্তামূলক কর্মসূচির কথা ভাবা হচ্ছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে সমমনাদের বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে। বেলা ৩টার দিকে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএনপি। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠক হয়। এতে বিএনপির পক্ষে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও বেগম সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন। ওদিকে সন্ধ্যা ৭টায় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। এলডিপি’র মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি ও সমমনা দলের দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপি নির্বাচন ইস্যুতে সমমনাদের মতামত জানতে চেয়েছে। সেখানে সমমনা দলের নেতারা দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার কথা জানিয়েছেন। বলেন, তারা চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই সংসদ নির্বাচন চায়। এজন্য সরকারকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেধে দেয়ার কথা বিএনপিকে জানান। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ডিসেম্বর থেকে জুনে নির্বাচনের কথা বলেছেন বলে বৈঠকে আলোনায় উঠে আসে। সেখানে নেতারা বলেন, আগামী বছর রমজানসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে নির্বাচনের জন্য অনুকূল পরিবেশ থাকবে না। নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ ডিসেম্বরই। এর আগে সরকারের নির্বাচনের জন্য সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত বলে নেতারা মতামত দেন। বলেন, সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না থাকার কারণে নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ ভোট নিয়ে কোনো কাজ করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া বৈঠকে সংস্কার এবং ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের গণহত্যার বিচারের কথা আলোচনা হয়। সেখানে নেতারা বলেন, নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং গণহত্যার বিচারের কার্যক্রম দৃশ্যমান করা ডিসেম্বরের মধ্যে সম্ভব। বৈঠক শেষে নজরুল ইসলাম খান বলেন, এর আগে একটি আলোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা খুব স্পষ্টভাবে বলেছিলেন যে, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হবে। সম্প্রতি একদিন পত্রিকায় এসেছিল। কিছুক্ষণ পর সেটা বদলে যায়। উনারা ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন। এটাও বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মানে হলো, ডিসেম্বরে না এমন না। ডিসেম্বরেরও হতে পারে। কিন্তু আমরা বলেছি, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হবে। আর ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে, এটা ধরে নিয়ে একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত। কারণ এজন্য যা যা প্রস্তুতি দরকার, সেটা এরমধ্যে সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে আমরা মনে করি। জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, বিএনপি’র সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন করার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এটা ডিসেম্বরের মধ্যে করার জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি। আমাদের জোর দাবি, ডিসেম্বরের মধ্যেই এই নির্বাচন করা সম্ভব। দেশবাসীর প্রত্যাশাও সেটাই। একইসঙ্গে অবিলম্বে সুনির্দিষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানান তিনি। ১২ দলীয় জোটের পক্ষে বৈঠকে জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ এলডিপি’র চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায় ইসলামের মহাসচিব মুফতি গোলাম মুহিউদ্দিন ইকরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বেপারী, জাগপার সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মো. ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মওলানা আবদুর করিম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, বিএনপির চেয়ারম্যান ফিরোজ মো. লিটন এবং নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More