স্টাফ রিপোর্টার:বিনোদন জগতের ছোটপর্দার মডেল-অভিনেত্রী তানজিম সাইয়ারা তটিনী ২০১৯ সালে মডেলিং দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি চরকির ওয়েব ধারাবাহিকের ‘কল্পনা’ খণ্ডে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তার অভিনয় জীবন শুরু। টিভি নাটকের জন্য স্বল্পদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্রে সেরা অভিনেত্রী বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো সমালোচক পুরস্কারও লাভ করেছেন তিনি। তটিনী অভিনয়ের পাশাপাশি দেশ-বিদেশে ঘুরতেও পছন্দ করেন।
একটি গণমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রীর এই ভ্রমণবিলাসী জীবনের কথা তুলে ধরেছেন। অভিনেত্রী বলেন— প্রথম, সবকিছু তুলনাহীন। ঘোরার জন্য প্রথমবার কাশ্মীর গিয়েছিলাম। এটি আমার কাছে অন্যকম সুন্দর একটি জায়গা। প্রকৃতি যেন সব কিছু আপন হাতে সাজিয়েছে রেখেছেন সেখানে। পেহেলগাম, দার্জিলিংও অন্যরকম টানে।
তিনি বলেন, নেপাল যেতেও ভালো লাগে। নেপাল তিনবার যাওয়া হয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে বেশ কয়েকবারই যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। করোনার প্রাদুর্ভাব কমার পরই ভারতে বেশি গেছি। একেকটা ভ্রমণে একেক রকম অভিজ্ঞতা রয়েছে। একবার বন্ধুরা মিলে গ্রুপ ট্যুরে গিয়েছিলাম দার্জিলিংয়ে। এটিই ছিল আমার সবচেয়ে আনন্দদায়ক ভ্রমণ।
তটিনী বলেন, সেসব দিনের কথা মনে পড়লে স্মৃতিকাতর হয়ে যাই। কাঠমান্ডুতে থামেল নামে একটি জায়গা আছে। সেই জায়গায় চারবার গেছি। নেপালে গেলে সেখানে যাওয়া আমার চাই-ই চাই। থামেলের প্রতিটি রাস্তা ভালো লাগে। এখানকার সবকিছু খুবই রঙিন মনে হয়। কোনো জায়গায় ঘুরতে গেলে সেখানকার স্থানীয় খাবারে গুরুত্ব দিই।
তিনি বলেন, ভ্রমণে যদি কাছের বন্ধুরা থাকে, তাহলে তো আর কথাই নেই। সম্প্রতি বন্ধুদের সঙ্গে থাইল্যান্ড গিয়েছিলাম সপ্তাহ দুয়েকের জন্য। আমার বন্ধুরা এখন অনেকেই চাকরিতে ঢুকে গেছেন। তাদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার সময় মেলানো অনেক কঠিন। ওদের সময়ের ওপর নির্ভর করে আমি এবার সময় বের করে নিয়েছি।
অভিনেত্রী বলেন, এর আগেও আমি একবার থাইল্যান্ড গিয়েছিলাম। ব্যাংকক, ফুকেট এসব জায়গায় থাকা হয়েছে। এবার আমি আইল্যান্ডগুলোতে বেশি ছিলাম। কোসামইতে বেশ কিছু দিন থাকা হয়েছে। এর আশপাশের আইল্যান্ডগুলোতে একদিন একদিন করে থেকেছি।
তিনি বলেন, এবার থাইল্যান্ডের অন্যরূপ দেখেছি। লোকজন কম ছিল, জায়গাটা একেবারে নিরিবিলি। সেখানকার স্থানীয়রা খুব ভালো। এ কারণে অনেক স্বস্তিতে দিনগুলো কেটেছে। একেবারে নিরিবিলি, ঠান্ডা পরিবেশ– মনটাই এবার ভরে গেছে। কোনো জায়গায় বেড়াতে গেলে সেখাকার দর্শনীয় জায়গা ঘুরে ঘুরে দেখার চেষ্টা করি। ফুকেটে ওল্ড টাউন বলে একটি জায়গা আছে। এই জায়গাটা আমার খুব পছন্দের। সেখানে প্রতি রোববার একটি বাজার বসে। বিভিন্ন খাবার, নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। এসবের মধ্যে ট্র্যাডিশনাল আইটেমই বেশি। গতবার যখন গেছি, সেখানে যাওয়ার সময় পাইনি। এ কারণে এবার সেখানে বেশি সময় দিয়েছি।
অভিনেত্রী বলেন, সেখান থেকে আমি মালয়েশিয়ায় এসেছিলাম। আসার পথে কুয়ালালামপুরে একদিন ছিলাম। সেখানে বেশি ঘুরিনি। আমার কাছে ওই জায়গাটা সেভাবে ভালোও লাগে না। অনেক ক্রাউড জায়গা। আমার কাছে নিরিবিলি স্থান, লোকজন কম– এ রকম জায়গা বেশি ভালো লাগে। এ বছর আর কোথাও যাওয়া হবে না– তাই হাতে একটু সময় নিয়েই বেরিয়ে পড়েছিলাম। বিদেশে এলে আমার অনেক অ্যাক্টিভিটিস করতে মন চায়। এবার স্কুবা ডাইভ করার খুব ইচ্ছা ছিল, কিন্তু সাঁতার জানি না বলে করতে পারিনি।
তটিনী বলেন, জীবনে অনেক দেশেই যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। এর মধ্যে শুটিংয়ে শুধু অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে গিয়েছিলাম। আর সব ব্যক্তিগতভাবেই যাওয়া হয়েছে। শুটিংয়ে দেশের বাইরে যাওয়ার অনেক প্রস্তাব থাকলেও যাইনি। দেশের বাইরে শুটিং আমার জন্য অনেক কষ্টের মনে হয়। বন্ধুদের সঙ্গে বিদেশ গেলে আনন্দটা দ্বিগুণ হয়। আমার কাছে মনে হয়েছে, থাইল্যান্ডের মতো দেশগুলোতে বন্ধুদের নিয়ে যাওয়াই ভালো।
বিদেশে খাবার প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, সত্যি কথা বলতে কী, আমার ভাত না খেলে খুব একটা সমস্যা হয় না। দুই সপ্তাহ ট্যুরে গেল, এক সপ্তাহ পরই আমার বন্ধুরা ভাত খেতে চায়। আমি উল্টো। নুডলস খেয়েও আরামে কয়েক দিন পার করতে পারি।
তিনি বলেন, শুধু দেশের বাইরে ঘুরে যে খুব আনন্দ পাই তা কিন্তু নয়, দেশেও ঘুরে আনন্দ পাই। আর দেশে ঘোরাঘুরির জন্য অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম আমার খুব পছন্দের জায়গা। সিলেট ঘুরতে ভালো লাগে। সুনামগঞ্জের সীমান্ত এলাকা ঘুরে অন্যরকম প্রশান্তি মেলে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.