সময় নষ্ট করার সময় আর নেই: ডিক্যাপ্রিও

হলিউডের টাইটানিকখ্যাত অভিনেতা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর বহুল প্রতীক্ষিত ‘ওয়ান ব্যাটল আফটার অ্যানাদার’ সিনেমাটি মুক্তি পাচ্ছে। যদিও সেপ্টেম্বরে সীমিত পরিসরে সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে। তবে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী মুক্তি পাবে এ সিনেমা।

দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ‘ওয়ান ব্যাটল আফটার অ্যানাদার’ সিনেমাটি বানিয়েছেন অস্কারজয়ী নির্মাতা পল টমাস অ্যান্ডারসন। যেখানে সন্দেহপ্রবণ সাবেক বিপ্লবী ববের চরিত্রে অভিনয় করেছেন লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও। সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে এ সিনেমাটি মুক্তির আগে তার ক্যারিয়ার-ভাবনাসহ নানা প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন এ অভিনেতা।

সীমিত পরিসরে মুক্তি পাওয়া এ সিনেমাটি রাজনৈতিক ব্যঙ্গ, ব্ল্যাক কমেডি ও অ্যাকশন মিশ্রণে নির্মিত হয়েছে। এ নিয়ে সমালোচকরা প্রশংসা করেছেন। ব্রিটিশ দৈনিক দি ইনডিপেনডেন্ট বলেছে— ‘এটা মাস্টার পিস।’ দ্য গার্ডিয়ান লিখেছে— ‘এ সিনেমা অসন্তোষ, প্রতিবাদ আর সমাজের বাইরে থাকা একাকী নায়কের গল্প, যা আজকের আমেরিকায় খুব কম দেখা যায়।’

দ্য টেলিগ্রাফ শন পেন ও ডিক্যাপ্রিওর অভিনয়ের প্রশংসা করেছে, ডিক্যাপ্রিওকে তরুণ জ্যাক নিকলসনের সঙ্গে তুলনা করেছে। ছবিটিকে ‘ডিক্যাপ্রিওর ক্যারিয়ারসেরা কাজগুলোর একটি’ বলেছে দ্য টাইমস। একই সঙ্গে দৈনিকটি ভবিষ্যদ্বাণী করেছে— ‘অস্কারের দৌড়ে নিশ্চিতভাবেই থাকবে এ সিনেমা।

এক মার্কিন দম্পতিকে ঘিরে এ সিনেমার গল্প। তুষার আবৃত এক অচেনা ইউরোপীয় শহরে সন্তান দত্তক নিতে যান সেই দম্পতি। স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের ভেতরেই তারা পৌঁছে যান এক রহস্যময় হোটেলে। সেখানে থাকে অদ্ভুত সব চরিত্র—বৃদ্ধ গায়িকা আর লম্পট ব্যবসায়ী। তাদের যাত্রাকে আরও জটিল করে তোলেন তারা। সেখানে সন্তান পাওয়ার সংগ্রামে দম্পতি যতটা এগিয়ে যান, ততটাই নিজেদের সম্পর্ক ও জীবনের প্রশ্নে তারা দিশাহারা হয়ে পড়েন। এর মধ্যেই হঠাৎ মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় পুরোনো সঙ্গীদের সঙ্গে আবার তার দেখা হয়, মুখোমুখি হতে হয় বহু বছরের শত্রুর। এমন গল্প নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সিনেমা ‘ওয়ান ব্যাটল আফটার অ্যানাদার’।

এ সিনেমায় কাজ করেছেন ডিক্যাপ্রি ও জেনিফার লরেন্স। তবে জেনিফার লরেন্সকে ‘ওয়ান ব্যাটল আফটার অ্যানাদার’ সিনেমায় এবারই প্রথম দেখা যাবে।

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সিনেমাটিকে ‘সমাজের আয়না’ বলে অভিহিত করেছেন ডিক্যাপ্রিও। তিনি বলেন, ‘আমাদের সংস্কৃতির বিভাজন আর চরম মেরুকরণকে দেখায় এ সিনেমা। যদিও সিনেমার নির্দিষ্ট কোনো বার্তা নেই। তবে চরমপন্থার এক ধরনের প্রভাব এখানে কাজ করেছে। এ অভিনেতা বলেন, এটা রাজনৈতিক সিনেমা অবশ্যই; কিন্তু এখানে কোনো বক্তৃতা নেই, যা কিছু বলার সব বিনোদনের মোড়কেই বলা হয়েছে।

সিনেমায় বেনিসিও দেল তোরো অভিনয় করেছেন সার্জিও চরিত্রে— যিনি একজন মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষক, যা ববকে বিপদের সময় সাহায্য করেন। দেল তোরো বলেন, ‘এটা সময়ের কথা বলে, আবার একই সঙ্গে বিনোদন দেয়, মজা দেয় আর আবেগও ছুঁয়ে যায়।’ ডিক্যাপ্রিওর সঙ্গে কাজ করতে পেরে তিনি উচ্ছ্বসিত, ‘আমরা দুজন যেন একই ব্যাচের ছাত্র। এতদিন পর একসঙ্গে কাজ করতে পারা স্বপ্নপূরণের মতো বলে জানান বেনিসিও দেল তোরো।

সিনেমাটিকে পল টমাস অ্যান্ডারসনের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী প্রকল্প, যা ১৭৫ মিলিয়ন ডলারের বাজেটে নির্মিত হয়েছে। ডিক্যাপ্রিও বলেন, অ্যান্ডারসন সবসময় দারুণ সিনেমা বানান। প্রথমবার ‘বুগি নাইটস’ দেখে তার ভক্ত হয়ে যাই। তার সিনেমাগুলো মাথায় ঘুরে বেড়ায়, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আলোচনা হয়, টিকে থাকে। তবে এবার যেন নিজেকে ছাড়িয়ে গেছেন। তিনি বলেন, অ্যান্ডারসনের ‘ফ্যান্টম থ্রেড ও দেয়ার উইল বি ব্লাড’ আগেই অস্কার জিতেছে। নতুন ছবিটি নিয়েও চলছে একই প্রত্যাশা।

বয়স পঞ্চাশ পেরোনো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অ্যাওয়ার্ড, বক্স অফিস—এসব আসে যায়। কিন্তু যে সিনেমা মনে থেকে যায়, যেগুলো নিয়ে বছরের পর বছর প্রশ্ন করা যায়, আলোচনা করা যায়—ওগুলোই আসল শিল্প। পঞ্চাশে পৌঁছালে মনে হয়, সময় নষ্ট করার সময় আর নেই। এখন আরও সৎ হতে হবে বলে জানান এ টাইটানিকখ্যাত অভিনেতা।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More