আলমডাঙ্গার খাদিমপুরে গ্রাম বাংলার ঐতিহাসিক সাপখেলা অনুষ্ঠিত, সাপুড়ে ও সাপের মনোমুগ্ধকর মিতালী

শরিফুল ইসলাম: কালের আবর্তনে প্রায় বিলুপ্তির পথে বাংলার ঐতিহ্যবাহী সাপ খেলা। তবে, এই পুরনো সংস্কৃতিকে ধরে রাখার প্রচেষ্টায় গতকাল বৃহস্পতিবার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর মাঠ পাড়ায় অনুষ্ঠিত হলো দিনব্যাপী এক বর্ণাঢ্য ঝাপান বা সাপের খেলা। শত শত উৎসুক জনতার ভিড়ে সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এই বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানে দুইটি দল অংশগ্রহণ করে।

মাঠ পাড়ার বিশেষ কয়েকজন গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঝাপান সাপ খেলাকে বাঁচিয়ে রাখতে এই খেলার আয়োজন করেন।
সাপুড়ে ও সাপের প্রেমের মিতালী
খেলায় সাপুড়েরা যখন বিষধর সাপ নিয়ে মাঠে নামেন, তখন তৈরি হয় এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। বাদ্যের তালে তালে সাপুড়েরা গান গেয়ে দর্শকদের মাতিয়ে তোলেন। মনে হচ্ছিল যেন সাপুড়ের ইশারায় সাপেরাও মাথা তুলে ছোবল মারতে উদ্যত হচ্ছে, যেখানে সাপ আর সাপুড়ের মধ্যে চলছে এক নিবিড় “প্রেমের মিতালী”।
একজন সাপুড়ের পরিবেশনা শেষ হলে তিনি তার সাপগুলোকে নিয়ে বসে যান, আর মঞ্চে আসেন নতুন এক সাপুড়ে। এভাবেই পালাক্রমে দিনভর চলে সাপের খেলা। নানা বয়সী মানুষ খেলা দেখতে ভিড় করেন এবং উপভোগ করেন এই গ্রামীণ ঐতিহ্য। সাপুড়েরা নেচে-গেয়ে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত দর্শকদের আনন্দ দেন। এদিন অন্তত ৫০টি বিভিন্ন প্রজাতির সাপ দিয়ে খেলা দেখানো হয়।
সাপুড়ের বার্তা ও সতর্কতা
সাপুড়েদের একজন, আব্দুল খলিল বলেন, “বিভিন্ন স্থানে খেলা দেখিয়ে নিজেরা আনন্দ পাই এবং দর্শকদেরও আনন্দ দিয়ে থাকি। সাপ খেলা দেখিয়ে মানুষের মনোরঞ্জন করি।” তিনি দর্শকদের সতর্ক করে বলেন, সাপে কামড়ালে কোনো রকম দেরি না করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এই ধরনের ঐতিহ্যবাহী আয়োজন গ্রাম বাংলার প্রাচীন সংস্কৃতিকে ধরে রাখার এক সুন্দর প্রচেষ্টা, যা বর্তমান প্রজন্মকে বিলুপ্তপ্রায় লোক-সংস্কৃতির সাথে পরিচিত করার সুযোগ করে দেয়।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More