জীবননগরে  জি¦নের মাধ্যমে টাকা দ্বিগুণ করে দেয়ার ফাদ নামে চলছে প্রতারণা

মা মেয়ের প্রতারণার দোকান

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলার হরিহরনগরে অর্ধশতাধিক মানুষের নিকট প্রতারণা করা হয়েছে। জি¦নের মাধ্যমে টাকা দ্বিগুণ করে দেয়ার নামে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মা ও মেয়েসহ ৩ জনের প্রতারক দল। প্রায় এক বছর পালিয়ে থাকা এ প্রতারক চক্রটি বুধবার প্রতারিতদের হাতে আটক হয়। পরে তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। চক্রটি এ সময় ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ ওঠে।
হরিহরনগর গ্রামের মৃত ফটিক বিশ্বাসের ছেলে ওমেদুল ইসলামের জীবননগর থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়, হরিহরনগর গ্রামের খয়ের খা’র স্ত্রী মাজেদা খাতুন (৪৫), মেয়ে মাসুরা খাতুন (২৭) ও তার স্বামী শাহিন জি¦নের মাধ্যমে টাকা দ্বিগুণ করে দেয়ার কথা প্রচার করে। তাদের কথা ও কৌশলে বিশ্বাস করে গ্রামের সহজ-সরল মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা তাদের হাতে তুলে দেয়। তাদের কাছে একই গ্রামের মৃত আজিজুল হকের ছেলে সালাম, উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের আরশেদ আলীর স্ত্রী বড় বুড়ি, দর্শনা থানার ডিহি কেষ্টপুর গ্রামের মৃত শুকুর আলীর ছেলে শাহাবুল ও ছয়ঘরিয়ার মোজাম্মেল হক মুলামের স্ত্রী সালমা খাতুন সহযোগিতা করে বলে অভিযোগ। অভিযোগে বলা হয়েছে প্রায় ৯ মাস পূর্বে প্রতারণার মাধ্যমে মাসুরা, মাজেদা ও শাহিন ৫০ হাজার টাকা দিলে যাদু বিদ্যার মাধ্যমে ৫ লক্ষ টাকা হয়ে যাবে বলে প্রলোভন দেখিয়ে অভিযোগকারী ওমেদুল ইসলামের নিকট হতে ১ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা, আমিরুল ইসলামের নিকট হতে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা, মতিয়ারের নিকট হতে ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা, সোনিয়া খাতুনের নিকট হতে ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা নেয়। একই ভাবে শতাধিক মানুষের নিকট হতে ৬৫ থেকে ৭০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তারা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ অবস্থায় গত বুধবার তাদেরকে আটক করে প্রতারিতরা। আটকদের পর তাদেরকে সীমান্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের নিকট নেওয়া হলে প্রতারকরা জানায়, কিছু টাকা সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা সালামের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ও কিছু টাকা বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট জমা রাখা আছে। পরে অভিযোগসহ তাদেরকে জীবননগর থানায় সোপর্দ করা হয়।
এ ব্যাপারে সোনালী ব্যাংক জীবননগর শাখার কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, আমার বাড়ি হরিহরনগরে হলেও গত ২৫-২৬ বছর যাবৎ আমি নতুন তেঁতুলিয়া গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করি। আমি বাইরে কর্মরত থাকার পর সম্প্রতি জীবননগর থানায় বদলি হয়ে এসেছি। অভিযুক্তদের মধ্যে মাজেদার বাড়ি আমার গ্রামে। তাকে আমি চিনি। তার মেয়ে মাসুরাকে আমি কোনদিন দেখিনি। ব্যাংকের কোনো কাজ হলে এলাকার অনেকেই আমার নিকট আসে সহযোগিতার জন্য। মাজেদা খাতুনও আমার নিকট আসে। তবে আমার নিকট কিংবা আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তারা টাকা গচ্ছিত রেখেছে বলে যে কথা বলছে তা সত্য নয়। হয়তো বাঁচার জন্য আমার কথা বলে আবারো প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে। তদন্ত করলে প্রকৃত সত্য বের হয়ে আসছে। সীমান্ত ইউপি চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন ময়েন বলেন, আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারকরা ব্যাংকের ক্যাশিয়ার আব্দুস সালামসহ বেশ কয়েক জনের নিকট টাকা গচ্ছিত রেখেছে বলে জানায়। পরে ব্যাংকে গিয়ে তাদেরকে সামনাসামনি করা হয়। তিনি বলেন, নিরীহ কেউ যাতে বিপদে না পড়ে সে জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More