ভোটার তালিকা আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি বছরের যেকোনো সময় ভোটার তালিকা করতে পারবে ইসি

স্টাফ রিপোর্টার: ভোটার তালিকা আইন সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এখন আর ২ মার্চ নয়, নির্বাচন কমিশন (ইসি) চাইলে বছরের যেকোনো সময় তফসিলের আগে ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে পারবে। গত বৃহস্পতিবার রাতে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে এ অধ্যাদেশ জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ‘এই অধ্যাদেশ ভোটার তালিকা (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ নামে অভিহিত হবে এবং এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।’ ২০০৯ সনের ৬ নং আইনের ধারা ৩-এর সংশোধন সংক্রান্ত অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯-এর ধারা ৩-এর দফা (জ)-এ ‘জানুয়ারি মাসের পহেলা তারিখ’ শব্দগুলির পর ‘কমিশন কর্তৃক ঘোষিত অন্য কোনো তারিখ’ শব্দগুলি সন্নিবেশিত হবে। এছাড়া ২০০৯ সনের ৬ নং আইনের ধারা ১১ সংশোধন করে নতুন উপ-ধারা (১) যোগ করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, ‘(১) কম্পিউটার ডাটাবেজে সংরক্ষিত বিদ্যমান সকল ভোটার তালিকা, প্রতি বছর ২ জানুয়ারি থেকে ২ মার্চ পর্যন্ত অথবা তফসিল ঘোষণার পূর্বে ধারা ৩-এর দফা (জ)-এর অধীন ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে হালনাগাদ করা হবে। যথা: (ক) যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে কিন্তু ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়নি, তাদের ভোটার তালিকাভুক্ত করা; (খ) যেসব ভোটার মৃত্যুবরণ করেছেন বা অযোগ্য হয়েছেন, তাদের নাম কর্তন করা এবং (গ) যারা এলাকার পরিবর্তন করেছেন, তাদের নাম পূর্বের তালিকা থেকে কেটে করে নতুন এলাকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা। তবে শর্ত থাকে যে, উপরের সময়সীমায় হালনাগাদ না হলেও ভোটার তালিকার বৈধতা বা ধারাবাহিকতা নষ্ট হবে না।’
আগের বিধান অনুযায়ী, পহেলা জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়, নির্বাচন এরপর যখনই অনুষ্ঠিত হোক পহেলা জানুয়ারির পরে যারা ১৮ বছর পূর্ণ করেন, তারা আর ভোটার তালিকায় যুক্ত হতে পারেন না। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচন। ওই নির্বাচনের ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছিল ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি যাদের ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছিল তাদের নিয়ে। অর্থাৎ মাঝখানের এক বছর যারা ১৮ বছর পূর্ণ করেছিলেন, তারা ভোট দেয়ার সুযোগ পাননি।
কিন্তু অধ্যাদেশে বলা হলো কমিশন অন্য কোনো তারিখ পর্যন্ত এখন নিতে পারবে। তার অর্থ জানুয়ারির ১ তারিখের পরে কমিশন যে সময় নির্ধারণ করবে সে সময় পর্যন্ত যোগ্য হওয়া নাগরিকদের ভোটার তালিকায় যুক্ত করা যাবে।
অধ্যাদেশে আরও বলা হয়েছে, ভোটার তালিকা প্রতি বছর ২ জানুয়ারি থেকে ২ মার্চ পর্যন্ত বা তফসিল ঘোষণার আগে ধারা ৩ এর দফা (জ) এর অধীন ঘোষিত সময়কালের মধ্যে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে হালনাগাদ করা হবে।
আগের বিধান অনুযায়ী, ২ মার্চের আগে পরে হালনাগাদ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা যেত না। আইনে সংশোধনের ফলে কমিশন যেকোনো সময় হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে পারবে।
এদিকে অধ্যাদেশ আকারে আইনের সংশোধন হওয়ায় ইসি চাইলে এখন থেকে বছরের যেকোনো সময় তালিকা থেকে মৃত ভোটার কর্তন করতে পারবে। সংশোধনের আগে এই সুযোগ ছিল না। এক্ষেত্রে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় মৃত ভোটার কর্তন করা হত।
অন্যদিকে অধ্যাদেশের ফলে বিদ্যমান নির্বাচনি এলাকা বা, ক্ষেত্রমত, ভোটার এলাকা থেকে অন্য নির্বাচনি এলাকায় বা, ক্ষেত্রমত, ভোটার এলাকায় আবাসস্থল পরিবর্তন করা হলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম পূর্বের এলাকার ভোটার তালিকা থেকে কেটে স্থানান্তরিত এলাকার ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More