খোশ আমদেদ মাহে রমজান

।। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ আলী।।
আজ ১৯ রমজান। শেষ হতে যাচ্ছে মাগফেরাতের দশক। রমজান মাসের অন্যতম সুন্নত আমল হলো এতেকাফ। রমজানের মধ্যে একটি রাত আছে যা হাজার মাস থেকেও উত্তম। এই রাতটিকে লাইতুল কদর বা কদরের রাত বলা হয়। এই রাতে ইবাদত করলে হাজার মাসের চেয়েও বেশি ইবাদতের ছওয়াব পাওয়া যাবে।। হাদিসের বর্ণনা মতে শেষ দশকেই রয়েছে এই মর্যাদাশীল রাতটি। এই মহিমান্বিত রজনীর খোঁজেই ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগণ শেষ দশ দিন মসজিদে এতেকাফ করে থাকেন। হুজুরে আকরাম (সাঃ)-ও রমজানের শেষ দশ দিন মসজিদে নিয়মিত এতেকাফ করতেন। হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, নবী করীম (সাঃ) হায়াতের শেষ পর্যন্ত নিয়মিত শেষ দশকে এতেকাফ করেছেন এবং তার ওফাতের পর তার পবিত্র স্ত্রীগণও এতেকাফ করেছেন (বুখারী, মুসলিম)। এতেকাফ অর্থ কোন স্থানে নিজেকে আবদ্ধ রাখা। শরিয়তের পরিভাষায়, এক বিশেষ সময়ে এক বিশেষ নিয়মে নিজেকে মসজিদে আবদ্ধ রাখাকে এতেকাফ বলা হয়। হাদিসে এতেকাফের বহুত ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। রাসুলে করীম (সাঃ) এরশাদ করেন, এতেকাফকারী যাবতীয় গোনাহ হতে মুক্ত থাকে এবং তার জন্য নেকীসমূহ লিখা হয় ঐ ব্যাক্তির ন্যায় যে (বাহিরে থেকে) যাবতীয় নেক আমল করে (মেশকাত, ইবনে মাজাহ)। অপর এক হাদিসে এসেছে, যে ব্যাক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এক দিন এতেকাফ করবে আল্লাহপাক তার এবং জাহান্নামের মধ্যে তিন খন্দক দূরত্ব সৃষ্টি করে দিবেন। যার এক খন্দকের দূরত্ব আসমান ও জমিনের দূরত্বের চেয়েও বেশী (তাবারানী, বায়হাকী, হাকিম)। রমজানের শেষ দশকে এতেকাফ করা সুন্নতে মোয়াক্কাদাহ । এ বছর করোনা মহামারীর কারণে সরকারি নিষেধাজ্ঞার ফলে অনেক মুসল্লী ইচ্ছা থাকা স্বত্তেও হয়ত মসজিদে ইতেকাফ করতে পারবেন না। তবে মহল্লার পক্ষ থেকে যদি কেউ এতেকাফ করে তাহলে ঐ মহল্লার সবার জিম্মাদারী আদায় হয়ে যাবে। আর যদি কোন মহল্লার কেহই এতেকাফ না করে তাহলে সবাই গোনাহগার হবে। পাঠক চিন্তা করুন, কেউ যদি আপনার পা জড়িয়ে ধরে নাছোড়বান্দা হয়ে বার বার দশ টাকা চাইতে থাকে, তাহলে আপনি নিশ্চয়ই তাকে তা এক সময় দিয়ে দিবেন। এতেকাফের ব্যাপারটাও এমন। আল্লাহর ঘর মসজিদে বসে কেউ যদি বার বার কিছু চাইতে থাকে তবে মহান আল্লাহতায়ালাও তাকে অবশ্যই দিয়ে দিবেন। তবে এতেকাফকারীর উচিত শুধু নিজের জন্য দোয়া না করে সমগ্র উম্মতের জন্য দোয়া ও এস্তেগফার করা। বিশেষ করে উদ্ভূত করোনা মহামারী থেকে পরিত্রাণের জন্য আল্লাহর দরবারে এতেশাফকারীর দোয়া করা উচিত।
(লেখক: অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More