যেসব পণ্যের দাম বাড়বে

স্টাফ রিপোর্টার: নতুন অর্থবছরে শুল্কহার বাড়ানোর প্রস্তাব করায় কিছু পণ্য ও সেবার দাম বাড়তে পারে। গতকাল রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে শুল্কহার পরিবর্তনের এই প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। বাজেট বক্তৃতা, অর্থ বিল ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের পাঠানো নির্দেশিকা ঘেঁটে দেখা যায়, বেশ কিছু পণ্যের ওপর শুল্ককর বাড়ানো হয়েছে। যেসব পণ্য ও সেবার মধ্যে রয়েছে মোবাইল ফোন। মোবাইল ফোন উৎপাদন ও সংযোজনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা কিছুটা কমিয়ে এর মেয়াদ ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। দুই ক্ষেত্রে আড়াই শতাংশ করে ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে সিগারেট পেপার আমদানির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্কহার ১৫০ শতাংশের পরিবর্তে ৩০০ শতাংশের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। লিফটের ক্ষেত্রে স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা কিছুটা কমিয়ে মেয়াদ ২০৩০ সালের ৩০শে জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডারের ক্ষেত্রে স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা কিছুটা কমানো হয়েছে। তবে এর অব্যাহতির মেয়াদ ২০২৭ সালের ৩০শে জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন ও ইলেকট্রিক ওভেনের ওপর স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা কিছুটা কমিয়ে ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ব্লেন্ডার, জুসার, মিক্সার, গ্রাইন্ডার, ইলেক্ট্রিক কেটলি, আয়রন, রাইস কুকার, মাল্টি কুকার ও প্রেসার কুকারের ক্ষেত্রে স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা কিছুটা কমিয়ে মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ফোর স্ট্রোক থ্রি-হুইলারের ক্ষেত্রে স্থানীয় উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা কিছুটা কমানো হয়েছে। তবে এর অব্যাহতির মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সাবান ও শ্যাম্পুর কাঁচামালের স্থানীয় উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা কমিয়ে মেয়াদ ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার, এয়ারকন্ডিশনার ও তাদের কম্প্রেসর, পলিপ্রোপাইলিন স্ট্যাপল ফাইবার এবং আইডল স্টার্ট-স্টপ ব্যাটারি স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে দাম বাড়তে পারে এসব পণ্যের। কিছু সার্জিক্যাল পণ্য, টিভি দেখার সেট টপ বক্স এবং বলপয়েন্ট কলমের আমদানি পর্যায়ের ভ্যাট অব্যাহতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। হালকা ইস্পাতের উৎপাদন পর্যায়ে সুনির্দিষ্ট কর প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্মাণ সংস্থা সেবার মূল্য সংযোজন কর ৭ দশমিক ৫ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশের কথা বলা হয়েছে। অনলাইনে পণ্য বিক্রির কমিশনের ওপর মূল্য সংযোজন কর ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সেল্ফ কপি পেপার, ডুপ্লেক্স বোর্ড, কোটেড পেপারের ক্ষেত্রে উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ৭ দশমিক ৫ শতাংশের পরিবর্তে ১৫ শতাংশ করার কথা বলা হয়েছে। প্লাস্টিকের তৈরি সব ধরনের টেবিলওয়্যার, কিচেনওয়্যার, গৃহস্থালি সামগ্রী, হাইজেনিক ও টয়লেট সামগ্রীর উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। কটন সুতার উৎপাদন পর্যায়ে সুনির্দিষ্ট করহার ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। কৃত্রিম আঁশ ও অন্যান্য আঁশের সংমিশ্রণে তৈরি ইয়ার্ন উৎপাদন পর্যায়ে সুনির্দিষ্ট করহার ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। উৎপাদন পর্যায়ে ব্লেডের ভ্যাট হার ৫ শতাংশের পরিবর্তে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ফলে দাড়ি কাটতে গুনতে হতে পারে বাড়তি অর্থ। তারকাঁটা ও টোপকাঁটাসহ বিভিন্ন প্রকারের স্ক্রু, জয়েন্ট (কানেক্টর), নাট, বোল্ট, ইলেকট্রিক লাইন হার্ডওয়্যার এবং পোল ফিটিংস উৎপাদনের ক্ষেত্রে উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট হার ৫ শতাংশের পরিবর্তে ৭ দশমিক ৫ শতাংশের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দামও বাড়তে পারে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More