আলমডাঙ্গায় শহিদ মিনারের বুকে অপমানের দাগ : অবৈধ সেফটি ট্যাংক অপসারণে আইনি লড়াই ও সামাজিক আন্দোলনে ঐক্যমত
আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার যেখানে অমর একুশের চেতনা ও শহিদের রক্তস্মৃতি লালিত হয়-সেই পবিত্র ভূমির মাটির নিচে অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে পায়খানার ১২টি সেফটি ট্যাংক। দীর্ঘদিনের এই গর্হিত অপমান অপসারণে এবার আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলনে ঐক্যমত পোষণ করা হয়েছে। সম্প্রতি আলমডাঙ্গা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক জোট ও ব্যায়ামাগার উদ্ধার কমিটির সভাপতি ইকবাল হোসেন মিয়ার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময়সভায় স্থানীয় সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও নাগরিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ একমত হয়ে সিদ্ধান্ত নেন-শহিদ মিনারের মর্যাদা রক্ষায় প্রয়োজন হলে রাজপথে নেমে আসা হবে। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আশাদুল হক, হাসিবুল হক, আলমডাঙ্গা নাগরিক উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম পিন্টু, ইলিয়াস হোসেন, মহিউদ্দিন, মাগরিবুর রহমান, আব্দুর রশিদ, এস এম সুলতানুল আরেফিন তাইফু, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিক, এমদাদ হোসেন, রেজাউল করিম, ফাহমিদুর রহমান, মোল্লা ফারুক এলাহী, সাদ্দাম খান প্রমুখ। অভিযোগ রয়েছে, ব্রাইট মডেল স্কুলের মালিক জাকারিয়া হিরো প্রভাব খাটিয়ে শহিদ মিনার মাঠের সরকারি জমি দখল করে বহুতল ভবনের জন্য পায়খানার ট্যাংক নির্মাণ করেছেন। কোর্ট কমিশনের মাপজোকে প্রমাণিত হয়েছে, তার তৈরি রাস্তা ও ট্যাংক শহিদ মিনারের জমির উপরই অবস্থিত। দীর্ঘদিন জাকারিয়া হিরোর রাজনৈতিক প্রভাব ও ক্ষমতার ছায়ায় সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি। কিন্তু সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ক্ষোভ উথলে উঠেছে। স্থানীয়দের ভাষায়-জাতীয় মর্যাদার প্রতীক শহিদ মিনারে নোংরা ট্যাংক নির্মাণ কেবল অবৈধ দখল নয়, এটি জাতির প্রতি অবমাননা ও ইতিহাসের প্রতি বেয়াদবি। ব্যায়ামাগার উদ্ধার কমিটির সভাপতি ইকবাল হোসেন মিয়া ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘মাপজোকের পরও মাসের পর মাস কেটে গেছে, কিন্তু ভূমিদস্যু হিরো ট্যাংক সরায়নি। আমরা জেলা প্রশাসকের জরুরি হস্তক্ষেপ চাই।” নাগরিক উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “শহিদ মিনার জাতির গৌরবের স্তম্ভ। সেখানে পায়খানার ট্যাংক নির্মাণ চরম গর্হিত কাজ। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে জনক্ষোভ আরও বিস্ফোরিত হবে।” মতবিনিময়সভায় উপস্থিত ব্যক্তিদের দৃঢ় শপথ-এই অপমানের দাগ মুছে না যাওয়া পর্যন্ত আইনি আদালত থেকে রাস্তাঘাট-সবখানেই লড়াই চলবে। শহিদদের রক্তে রাঙানো এই ভূমি থেকে নোংরা ও অবমাননার সব চিহ্ন মুছে দিতে তারা প্রস্তুত বলে উল্লেখ করেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.