কুষ্টিয়ায় ৭ বিয়ে করা সেই রবিজুল মানবপাচার মামলায় গ্রেফতার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: সাতটি বিয়ে করা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচিত কুষ্টিয়ার সেই রবিজুল ইসলামকে মানবপাচার মামলায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার সকালে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ইবি থানা-পুলিশ। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা পুলিশের ওসি মেহেদী হাসানএ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গ্রেফতারকৃত রবিজুল ইসলাম কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নের মিয়াপাড়া গ্রামের আয়নাল ম-লের ছেলে। রবিজুল ইসলাম সাতটি বিয়ে করে এলাকায় আলোচনার জন্ম দেন। দীর্ঘ ১৫ বছর তিনি লিবিয়ায় অবস্থান করেছেন। সে আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, তিনি আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য। কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, রাজবাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার সাধারণ মানুষকে লিবিয়ায় ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাঠানোর পর তাদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী কুষ্টিয়ার তানজির শেখ (২২) জানান, আড়াই বছর আগে রবিজুলের মাধ্যমে ট্যুরিস্ট ভিসায় লিবিয়ায় যান তিনি। সেখানে পৌঁছানোর পর রবিজুল তাকে একটি মাফিয়া চক্রের হাতে তুলে দেন। লিবিয়ায় তাকে ৯ মাস ধরে একটি টর্চার সেলে বন্দি করে রাখা হয়। খাবার না দিয়ে সারাদিন বেঁধে রাখা হতো। লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পেটানো হতো। বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করা হতো। তানজির শেখ বলেন, আমাকে এমনভাবে মারধর করতো, শরীর ফেটে যেত, ইনফেকশন হয়ে পচে যেত। ঠিকমতো খেতেও দিত না। দিনের খাবার ছিল ৫ টাকার পাউরুটি আর সামান্য লবণাক্ত পানি। তিনি আরও জানান, এই চক্রের সঙ্গে বাংলাদেশি কয়েকজনও জড়িত। তাদের বাড়ি মাদারীপুর, সিলেট ও শরীয়তপুরে। চক্রের অন্যতম সদস্য ‘পিচ্চি সোহেল’ মাদারীপুরের বাসিন্দা। তানজিরের পরিবারের দাবি, দফায় দফায় ৩৪ লাখ টাকা নেয়া হয়েছে রবিজুলের মাধ্যমে। তারা এখন সেই টাকা ফেরত ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন। ওসি মেহেদী হাসান বলেন, রবিজুলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তদন্ত চলছে। মানবপাচার চক্রে কারা জড়িত তা শনাক্তে কাজ চলছে। প্রয়োজনে ইন্টারপোলের সহায়তা নেয়া হবে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে সাত বিয়ে করা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনায় আসে রবিজুল ইসলামের নাম। সে সময় স্ত্রীরা মিলেমিশে থাকতেন একই বাড়িতে। মায়ের মানত পূরণ করতেই সাতটি বিয়ে করেন বলে জানান তিনি। রবিজুল ইসলাম ১৫ বছর লিবিয়াতে ছিলেন। লিবিয়াতে থাকার সময় ১৯৯৯ সালে প্রথম বিয়ে করেন। এরপর একে একে করেন আরও ছয় বিয়ে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More