চুয়াডাঙ্গার টেইপুরে পাওনা টাকা ও জমিজমা নিয়ে দুই ভাইয়ের বিরোধে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ ৯জন আহত : থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার টেইপুরে পাওনা টাকা চাওয়া ও জমিজমা দখল করাকে কেন্দ্র করে দুই ভাইয়ের মধ্যে দফায় দফায় ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের নারীসহ মোট ৯জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে ৮জন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরলেও একজনের শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ভর্তি করেছেন চিকিৎসক। গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে টেইপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন ওসি খালেদুর রহমান। এক পক্ষের আহতরা হলেন-চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার অলোকদিয়া ইউনিয়নের টেইপুর গ্রামের মৃত আবু তাহেরের ছেলে জিয়ারুল রহমান (৪৫), জিনারুলের ছেলে মাহাবুব হাসান মাসুম (১৪), মেয়ে সুমাইয়া খাতুন (১৮), স্ত্রী রাশিদা খাতুন (৩৫), একই গ্রামের আব্দুর রশিদের স্ত্রী আঙ্গুরা খাতুন (৪৫), ইদ্রিস আলীর স্ত্রী খাদিজা খাতুন (৩৫)। অপর পক্ষের আহতরা হলেন-একই গ্রামের মৃত আবু তাহেরের আরেক ছেলে আব্দুল হালিম (৬৭), তার স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন (৫০) এবং মেয়ে সাদিয়া খাতুন (২০)।
জানা গেছে, পৈতৃক জমিজমা ভাগবাটোয়ারা নিয়েই দীর্ঘদিন যাবত দুই ভাই আব্দুল হালিম ও জিয়ারুল রহমানের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়েই বুধবার সকালে কথাকাটাকাটির জেরে সংঘর্ষ হয়। জিনারুল ইসলাম বলেন, পৈতৃক সূত্রে পাওয়া আমার জমি জোরপূর্বকভাবে ভাই আব্দুল হালিম ও তার পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন যাবত ভোগ-দখল করে আসছে। থানায় অভিযোগ দেয়ার পরও কোনো ফলাফল পাইনি। উলটো আমাদেরকে হেনস্থার স্বীকার হতে হচ্ছে। তার এক ছেলে এবং মেয়ে জামায় সেনাবাহিনীতে কর্মরত। এই প্রভাবেই তাদেরকে কেউ কিছু বলতে পারেনা। জমি দখলের প্রতিবাদ করতে গেলে আমাদেরকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে তারা। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। আব্দুল হালিম বলেন, ছোট ভাই জিনারুলের নিকট ঘর বিক্রির ৮০ হাজার টাকা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত আমার সঙ্গে বিরোধ চলে আসছে। এ জন্য আমি অন্যস্থানে বাড়ি করে বসবাস করছি। গত পরশু মঙ্গলবার আমার পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে কথা-কাটাকাটির সৃষ্টি হয়। পরদিন বুধবার সকালে এরই জের ধরে আমার বাড়িতে গিয়ে হামলা করে তারা। আমাদেরকে লাঠিসোঁটা দিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছে। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সব সময় তারা আমাদেরকে অত্যাচার করে আসছে। তারা আমার বিরুদ্ধে সেসব অভিযোগ করছে সব মিথ্যা। এ ঘটনায় সদর থানায় আমি অভিযোগ করেছি। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোরশেদ আলম দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, উভয়পক্ষের মোট ৯জন আহত অবস্থায় জরুরি বিভাগে আসেন। তাদের প্রত্যেকের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ৮জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। রাশিদা খাতুনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) খালেদুর রহমান দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমরা বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More