ঝিনাইদহের বংকিরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মতিউর রহমান খানকে টমটম গাড়িতে রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা

লাবলু রহমান: বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা জীবনের তিন দশকেরও বেশি সময় শিক্ষার্থীদের আলোকিত করে বিদায় নিলেন প্রিয় শিক্ষক মাও. মতিউর রহমান খান। তাকে বিদায় জানাতে স্থানীয় এলাকাবাসী ও ছাত্র-ছাত্রীরা আয়োজন করেন এক ব্যতিক্রমধর্মী সংবর্ধনা। ফুলে সাজানো একটি টমটম গাড়িতে রাজকীয় শোভাযাত্রায় ঘুরে দেখানো হয় পুরো এলাকা। টমটম গাড়ি এবং শতশত মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার মাধ্যমে পৌঁছে দেয়া হয় বাড়িতে। ঝিনাইদহ সদরের বংকিরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাও. মতিউর রহমান খান স্যার তার ৩৯ বছরের শিক্ষকতা জীবনের ইতি টানেন গত ৯ জুন সোমবার। তাকে বিদায় জানাতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত হয় এক আবেগঘন অনুষ্ঠান। এতে অংশ নেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সংবর্ধনা শেষে শিক্ষকের জন্য প্রস্তুতকৃত সুসজ্জিত টমটম গাড়িতে তাকে বসিয়ে গ্রামজুড়ে বের করা হয় শোভাযাত্রা। গাড়িটি ফুল এবং রঙিন কাগজে সাজানো ছিল যেন এক রাজকীয় বাহন। পথিমধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা এলাকাবাসী শিক্ষককে শুভেচ্ছা জানান, কেউ কেউ অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। বংকিরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খসরুল আলম বলেন, স্যারের মতো একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষককে আমরা বিদায় দিচ্ছি। তিনি শুধু শিক্ষকই নন, আমাদের পথপ্রদর্শক ছিলেন। বিদায়ী বক্তব্যে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি মাও. মতিউর রহমান খান স্যার নিজেও। তিনি বলেন, দীর্ঘ ৩৯ বছর আমি এই বিদ্যালয়ে আমি শিক্ষকতা করেছি। আমার অনেক স্মৃতি রয়েছে এই বিদ্যালয়ে। দীর্ঘ ৩৯ বছর শিক্ষকতা জীবনের অবসানের পর ছাত্রছাত্রীদের ভালোবাসা আর এলাকার মানুষের এই সম্মান আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন। এই ভালোবাসা চিরদিন মনে রাখবো। বংকিরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি সাকিব মোহাম্মদ আল হাসান বলেন, বিদ্যালয়ের একজন দায়িত্বশীল মানুষ হিসেবে আমার জায়গা থেকে একজন শিক্ষকের সম্মানে যেটা করা প্রয়োজন আমি বিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী এবং এলাকার সুধীজনদের সাথে নিয়ে সেটা করার চেষ্টা করেছি। আমি চাই আগামীতে যেন বিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষক সম্মানের সাথে বিদায় নিতে পারে। বংকিরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক মাও. মতিউর রহমান খান স্যারের এই ব্যতিক্রমী সংবর্ধনা স্থানীয় সমাজে শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা ও মূল্যবোধের একটি অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More