অনৈতিক কাজে বাধা : স্ত্রীর হাতে স্বামী খুন

যশোর আঞ্চলিক প্রতিনিধি: নড়াইলের ভ্যানচালক ইবাদুল শেখ ওরফে ইবাদ (৩৬) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন হয়েছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে স্ত্রীর হাতেই খুন হন তিনি। অনৈতিক কাজে বাধা দেয়ায় স্ত্রী আমেনা বেগম (৩০) তাকে হত্যা করে। আমেনা খাতুন ইতোমধ্যেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। নড়াইলের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমাতুল মোর্শেদা এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

স্বীকারোক্তিতে আমেনা বলেছে, ইবাদুল শ্বশুরবাড়িতে অবস্থানের কারণে দু’জন খরিদ্দার আসতে পারছিল না। খরিদ্দার বারবার আমেনার সঙ্গে যোগাযোগ করছিল। মাদক সেবন করা ইবাদুলকে দুধের সঙ্গে উত্তেজক ট্যাবলেট সেবন করায়। এরপর ধাক্কা মেরে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সুপারি গাছে ধাক্কা লেগে ইবাদুল মারা যায়। একপর্যায়ে তার গলায় ফাঁস দিয়ে বাঁশের আড়াই ঝুলিয়ে রাখা হয়। জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পিবিআই যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর বিষয়ে কিছু অসঙ্গতি দেখা দিলে রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করে পিবিআই। যশোর জেলা পিবিআই ভিকটিম ইবাদুলের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে পারিবারিক বিষয়ের ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার আমেনা বেগমসহ তিনজনকে পিবিআইয়ের ক্রাইমসিন টিম জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে আমেনা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দেয়। পিবিআই তাকে সোমবার গ্রেফতার করে। আমেনার স্বীকারোক্তি ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর কালিয়া থানায় হত্যা মামলা হয়। এরপর মঙ্গলবার আমেনাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
আমেনা বেগম আদালতকে জানায়, ১৩/১৪ বছর আগে নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার ফুলদহ গ্রামের সবুর শেখের ছেলে ইবাদুল শেখের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের ঘরে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ইবাদুল শেখ মাদক সেবন করত ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো। এক বছর আগে ইবাদুল মাদক মামলায় গ্রেফতার হলে আমেনা তিন সন্তান নিয়ে পিতার বাড়ি চলে যান। মাঝে-মধ্যে স্ত্রী আমেনাকে বাড়িতে নিয়ে আসত, কখনও কখনও শ্বশুরবাড়ি গিয়ে থাকত ইবাদুল।

উল্লেখ্য, ৯ মে ইবাদুল শেখ নিজ বাড়িতে ছিল। রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমেনা মোবাইল ফোন করলে ইবাদুল শ্বশুরবাড়ি যায়। রাতে ইবাদুল মারা গেলে লাশ সুপারি গাছে ঝুলিয়ে রাখে। ১০ মে সকালে স্থানীয়রা ইবাদুলের লাশ ঝুলতে দেখে কালিয়া থানায় খবর দিলে পুলিশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় কালিয়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More