অর্থ আত্মসাতের মামলায় আদিয়ান মার্টের সিইওসহ তিনজনের রিমান্ড শেষ হচ্ছে আজ

সম্পত্তি বেঁচে হলেও গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে চান জুবায়ের

স্টাফ রিপোর্টার: গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া সব টাকা ফিরিয়ে দেবো। প্রয়োজনে সম্পত্তি বিক্রি করে হলেও তাদের টাকা পরিশোধ করা হবে। এমনটিই জানিয়েছেন অর্থ আত্মসাতের মামলায় রিমান্ডে থাকা আদিয়ান মার্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জুবায়ের সিদ্দিকী মানিক। গতকাল শনিবার ২য় দিনের পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এ কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে, গত ২৯ অক্টোবর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আদিয়ানের মার্টের সিইওসহ চারজন গ্রেফতারের পর তাদের বিরুদ্ধে আরও একাধিক অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ জমা পড়ে। এছাড়াও আদিয়ান মার্টের প্রতারণার শিকার অনেক গ্রাহককে আইনের আশ্রয় না নেয়ার জন্য জুবায়ের সিদ্দিকী মানিকের আত্মীয়-স্বজনেরা বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করছে। এমনকি হুমকি-ধামকিও দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন গ্রাহকরা।
সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বোয়ালমারি গ্রামের মৃত ওহিদুল ইসলামের ছেলে আতিকুর রহমান উজ্জলের কাছ থেকে ১৮ লাখ ৫২ হাজার ৪৮০ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আদিয়ান মার্ট। এই অভিযোগে গত ২৯ অক্টোবর শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জুবায়ের সিদ্দিকী মানিক, তার বাবা আবু বক্কর সিদ্দিক, ভাই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ সিদ্দিক ওরফে রতন এবং ম্যানেজার মিনারুল ইসলামের নাম উল্লেখ করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন উজ্জল। আসামি করা হয় অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে। ওই মামলার প্রেক্ষিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা সদরের মোমিনপুর গ্রামে আদিয়ান মার্টের প্রধান কার্যালয় ঘিরে রাখা হয়। রাতে সিইও জুবায়েরকে খুলনা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয় জুবায়েরের বাবা আবু বক্কর সিদ্দিক, ভাই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ সিদ্দিক ওরফে রতন এবং ম্যানেজার মিনারুল ইসলামকে।
পরে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত জুবায়ের সিদ্দিকী মানিক, মাহমুদ সিদ্দিক রতন এবং ম্যানেজার মিনারুল ইসলামকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এছাড়া মামলার আরেক আসামি সিইও জুবায়েরের বাবা আবু বক্কর সিদ্দিককে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেয়া হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই গোপাল চন্দ্র ম-ল গতকাল শনিবার মাথাভাঙ্গাকে বলেন, গত শুক্রবার সিইও জুবায়েরসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা বিভিন্ন ধরনের তথ্য দিয়েছেন। গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া সব টাকা তারা ফেরত দেবেন বলেও জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, জুবায়েরসহ চারজন গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে তাদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। দুজন লিখিতও দিয়েছেন। সেগুলোর তদন্ত চলছে।
এদিকে, আদিয়ান মার্টের প্রধান কার্যালয় এলাকা অর্থাৎ চুয়াডাঙ্গা সদরের মোমিনপুর গ্রামের একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, আমরা পণ্য নেয়ার জন্য আদিয়ান মার্টে টাকা দিয়েছি। এখনও পর্যন্ত পণ্য বা টাকা কিছুই পাইনি। আদিয়ান মার্টের লোকজন গ্রেফতারের বিষয়টি জানার পর আমরাও টাকা ফেরত পেতে আইনগত সহায়তার নেয়ার প্রস্তুতি নিই। জুবায়েরসহ আদিয়ান মার্টের মালিকপক্ষ একই এলাকার হওয়ায় বিষয়টি জানতে পেরে তাদের আত্মীয়-স্বজন আমাদের বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করছে। হুমকিধামকিও দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, প্রায় ৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে আদিয়ান মার্টের বিরুদ্ধে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ১ হাজার ৮০০-এর মতো এনভয়েস অর্ডার বাকি আছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে রয়েছে ৩২২টি অভিযোগ।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More