আলমডাঙ্গার বেলগাছি মন্ডলপাড়ার রাস্তা যেন উন্নয়ন বঞ্চনার প্রতিচ্ছবি দীর্ঘ বছরেও হয়নি পাকা রাস্তা : প্রতিশ্রুতির জবাবদিহি চায় গ্রামবাসী
শরিফুল ইসলাম রোকন: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মন্ডলপাড়ায় কাঁচা রাস্তায় চরম দুর্ভোগে রয়েছেন এলাকাবাসী। বর্ষা এলেই প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তাটি কাদা-মাটিতে পরিণত হয়। ফলে প্রতিদিনের চলাচল হয়ে পড়ে কষ্টকর ও বিপদজনক। এই পাড়ায় প্রায় ১৫শ থেকে ২ হাজার মানুষের বসবাস। দীর্ঘ বছরেও রাস্তার কোনো উন্নয়ন না হওয়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। জানা গেছে, বেলগাছি ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডের রাস্তা ইতিমধ্যে পাকা করা হলেও অজানা কারণে শুধু মন্ডলপাড়ার আবু বক্কর মাস্টারের বাড়ি থেকে কামাল শেখের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটি আজও কাঁচা রয়েগেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, একাধিকবার মাপজোক হলেও হয়নি কোনো কার্যকর উদ্যোগ। দীর্ঘ বছরে পার হয়ে গেছে বেশ কয়েকজন চেয়ারম্যান। দীর্ঘ বছরে সাবেক চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মন্টু এবং চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান চঞ্চল দুজনেই বারবার রাস্তাটি পাকাকরণের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা কেবল কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছে। মন্ডলপাড়ার পাশ দিয়ে যাওয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি রাস্তা পাকা হয়েছে। মন্ডলপাড়াবাসির দাবী করেছে ওই রাস্তাটির তেমন গুরুত্ব নেই। মন্ডলপাড়ার রাস্তাটি সরকারি তালিকাভুক্ত হওয়ার পরও উন্নয়ন হচ্ছে না। স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি আক্তার হোসেন বলেন, “প্রতিটি বর্ষা যেন আমাদের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দেয়। কাদার মধ্যে হেঁটে চলা একমাত্র উপায়। বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে না, অসুস্থ কেউ হাসপাতালে নিতে হলে মারাত্মক কষ্ট হয়।” এক শিক্ষার্থীর মা মালা খাতুন জানান, “বৃষ্টির দিনে ছেলে মেয়েরা স্কুলে যেতে গিয়ে অনেকবার পড়ে গেছে। কাপড়চোপড় নষ্ট হয়, অনেক সময় তাদের স্কুলেই হয় না। এই কষ্ট কি কারও চোখে পড়ে না?” কৃষক নিয়াত আলী বলেন, “চাষের ধান, সবজি বাজারে নিতে পারি না। গরুর গাড়ি বা ভ্যান কাদায় আটকে যায়। প্রতিবছর লোকসান গুনছি। রাস্তা থাকলে লাভবান হতাম।” কাজল হোসেন বলেন, “পাশের মহল্লাগুলোর রাস্তায় দৃষ্টিনন্দন পিচ ও ঢালাই হয়েছে। অথচ আমাদের পাড়ায় সাইকেলও চালানো যায় না। এটা চরম বৈষম্য। জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহি চাই আমরা।” স্থানীয় সমাজকর্মী মোস্তফা বলেন, “এটা খুবই দুঃখজনক যে উন্নয়নের ছোঁয়া সবাই পেলেও আমাদের মন্ডলপাড়া এখনো পিছিয়ে আছে। গত কয়েকদিন আগে মন্ডলপাড়ার এক প্রবাসী বাড়ি এসে নিজ উদ্যোগে রাস্তায় কিছু মাটি দিয়েছে চলাচলের জন্য। বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনপ্রতিনিধিরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এবার আর আশ্বাস নয় আমরা কাজ চাই।” মন্ডলপাড়ার বাসিন্দারা দাবি করেছেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন রাস্তাটি পাকাকরণ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং তাদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান হয়। মন্ডলপাড়াবাসী চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.