আলমডাঙ্গায় টাকা নিয়ে জমি না দিয়ে যুবককে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: জমি বিক্রির বায়নানামা করে টাকা হাতিয়ে জমি না দিয়ে প্রতিবন্ধীকে বিষ খাইয়ে হত্যা চেষ্টার  অভিযোগ উঠেছে চার প্রতারকের বিরুদ্ধে। তরকারির সাথে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে প্রতারকরা ওই প্রতিবন্ধীকে মেরে ফেলার  চেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিষের বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রতিবন্ধী আনিসুর রহমান সটকার স্বজনরা তাকে  হাসপাতালে নিয়ে  ভর্তি করেন। গত শনিবার রাতে আলমডাঙ্গার ডাউকি ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। প্রতারণার শিকার হয়ে মৃত্যুর মুখে পড়া আনিসুর রহমান সটকা প্রতারকদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। প্রতিবন্ধী আনিসুর রহমান সটকা বিনোদপুর গ্রামের মৃত মনোয়ার উদ্দিনের ছেলে।

সটকা জানান, বিনোদপুর গ্রামের মৃত আজিজ বিশ্বাসের ছেলে জহুরুল ইসলাম ঠা-ু, বাদেমাজু গ্রামের ছকিরদ্দিন, হাউসপুরের রইচ উদ্দিন নামের তিন প্রতারক কিছুদিন ধরে অল্প টাকায় ভালো মানের জমি কিনে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন। গ্রামের প্রতারক ঠান্ডু বিশ্বাস প্রতিবন্ধী সটকাকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে খানাপিনা করায়। প্রতারকদের জমি  দেয়ার প্রলোভনে পড়ে সটকা তার বাড়ির একমাত্র গরুটি বিক্রি করে ৪০ হাজার টাকা ঠান্ডু বিশ্বাসের হাতে তুলে দেন।  টাকা জায়েজ করতে প্রতারকরা একই দিনে আলমডাঙ্গা শহরের নজির উদ্দিন ভেন্ডারের কাছ থেকে স্ট্যাম্প কিনে জমির বায়নানামাও করে দেয়। কিন্তু প্রতারক ঠান্ডু বিশ্বাস বায়নানামার স্ট্যাম্প নিজের কাছে রেখে দেয়। প্রতিবন্ধী সরল মনে তা  মেনেও নেন। কিন্তু জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে টালবাহানা করতে থাকে প্রতারকরা। স্ট্যাম্পও ছিড়ে ফেলে তারা। এ পর্যায়ে প্রতারকদের সাথে যোগ দেয় বিনোদপুর গ্রামের আরেক প্রতারক আলম হোসেন।

চার প্রতারক যুক্তি করে গত শনিবার রাতে প্রতিবন্ধী সটকাকে ঠান্ডু বিশ্বাসের বাড়িতে ডেকে নেয়। আয়োজন করা হয় রাতের খাবার-দাবারের। সটকা ঠান্ডুর বাড়িতে রাতের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে বিষ খাওয়ানো হয়েছে দাবী করে রাতেই পাশের ডাউকি গ্রামের সানোয়ার ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান তার স্বজনরা। এরপর ওই রাতেই ভর্তি করা হয় হারদী হাসপাতালে। কিছুটা সুস্থ হয়ে তিনি রোববার বাড়িতে ফেরেন।

ঘটনা গ্রামে জানাজানি হলে প্রতারকদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠে গ্রামবাসী। গত সোমবার রাতে গ্রামে সালিস বৈঠক বসে। প্রতারকদের মূলহোতা ঠা-ু বিশ্বাসকে ৪০ হাজার টাকাসহ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু অসুস্থ প্রতিবন্ধী আনিসুর রহমান সটকা জরিমানার ৮০ হাজার টাকা দুদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও হাতে পাননি বলে জানান।

স্থানীয়রা জানান, ঠান্ডু বিশ্বাস, সকিরদ্দিন, রইস ও আলমরা এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক হিসেবে চিহ্নিত। এই চক্রটি জমি কেনাবেচাসহ নানা প্রতারণার সাথে জড়িত। এদের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছে প্রতিবন্ধী সরল সটকা।

গ্রামে সালিস বৈঠকে প্রতারকের ৮০ হাজার টাকা জরিমানার ঘটনার সত্যতা জানিয়ে থানার এসআই শরিয়ত উল্লাহ জানান, বিষ খাওয়ানোর বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ সাঈদ জানান, তাকে বিষ খাওয়ানো হয়েছে দাবী করে আনিসুর রহমান সটকা নামে একজন হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু তার শরীরে বিষের কোনো নমুনা পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More