আলমডাঙ্গায় হামলা পাল্টা হামলায় নৌকা ও মোবাইলফোন প্রতীকের অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় দু’পক্ষের মামলা দায়ের

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গায় আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী হাসান কাদির গনুর নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এম সবেদ আলীর মোবাইলফোন প্রতীকের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় দু’পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের হামলা পাল্টা হামলায় উভয়পক্ষের ৬টি নির্বাচনী অফিস ভেঙে দেয়া হয়েছে। এসময় নৌকা প্রতীকের ৩ কর্মীর উপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে এবং বেশ কয়েকজনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। নির্বাচনী অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ দুজনকে আটক করেছে।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে নৌকা প্রতীকের সমর্থনে শহরে মোটরসাইকেল শোডাউন বের করা হয়। এর পরপরই রাত সাড়ে ১০টার দিকে আলমডাঙ্গা শহরের কলেজপাড়ায় অবস্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী এম সবেদ আলীর মোবাইলফোন প্রতীকের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। নৌকা প্রতীকের কর্মীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে এমন অভিযোগ তুলে এ ঘটনার পরপরই স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরা চাতাল মোড়, কলেজপাড়া ও শেফা ক্লিনিকের পাশে অবস্থিত নৌকা প্রতীকের ৪টি অফিস ভাঙচুর করে। অন্যদিকে, আনন্দধামসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীর আরও ২টি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠে। এসময় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী নজরুল ইসলামের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। নৌকা প্রতীকের ৩ কর্মী আব্দুর রশিদ, বিপ্লব ও শাহীনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এছাড়া কয়েকজন নৌকা সমর্থকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। আহতদের রাতেই প্রথমে শেফা ক্লিনিক ও পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পুলিশ ও নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এসময় পুলিশের মারমুখী অবস্থানে দু’পক্ষের কর্মীরা পিছু হাটে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার হাদী মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন সাঈদ বলেন, আহত তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ক্ষতের ধরণ দেখে মনে হচ্ছে তাদেরকে ইটপাটকেল ও লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। এ ঘটনায় দু’পক্ষই পরস্পরের কর্মীদের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবীর জানান, রাতেই নৌকা প্রতীকের পক্ষ থেকে নৌকার প্রার্থী হাসান কাদির গনুর ছোট ভাই আ.স.ম সালাউদ্দীন বাদী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ৪৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১২০ জনকে আসামি করে এজাহার দায়ের করেছেন।
অন্যদিকে, গতকাল শুক্রবার স্বতন্ত্র প্রার্থী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এম সবেদ আলী ৫২ জন কর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করা হবে। গত বৃহস্পতিবার রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী গোবিন্দপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম ও আলতাফ হোসেন নামের দুজনকে আটক করেছে।
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হাসান কাদির বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সবেদ আলীর লোকজন নিশ্চিত পরাজয় জেনে নিজেরাই নিজেদের কার্যালয় ভাঙচুর করেন। পরে তারা নৌকার কার্যালয়ে এসে ভাঙচুর করে এবং কর্মীদের মেরে জখম করে।
এ বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোবাইলফোন প্রতীকের সবেদ আলী বলেন, ‘১ ফেব্রুয়ারি রাতে নৌকার লোকজন আমার আনন্দধাম এলাকায় নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করে। ওই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও গত ১১ দিনে পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই একই প্রতীকের লোকজন আবারও দুটি কার্যালয়ে হামলা ও একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। আমার কর্মীরা ভোটারদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার রাতের হামলার ঘটনায় প্রশাসন কঠোর ভূমিকা নিয়েছে। গতকাল শুক্রবার অ্যাডিশনাল ডি আই জি একে এম নাহিদুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম আলমডাঙ্গা থানায় উপস্থিত হয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে দিকনির্দেশনা দেন।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More