কুষ্টিয়ায় শিক্ষকের হাত কর্তনের ঘটনায় ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় আধিপত্যকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদমান দ্বন্দ্বের জেরে তোফাজ্জেল বিশ্বাস (৫০) নামে এক কলেজ শিক্ষককে কুপিয়ে তার ডান হাতের কবজি দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ঘটনায় হত্যাচেষ্টা, চুরি-ছিনতাইসহ দন্ডবিধির কয়েকটি ধারায় মামলা হয়েছে কুষ্টিয়া মডেল থানায়। ঘটনার প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পর বুধবার রাতে গুরুতর আহত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই শিক্ষকের ছেলে নাজমুস সাকিব বদি হয়ে ২৬ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে দেয়া এজাহারটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) সাব্বিরুল আলম। তবে এঘটনায় জড়িত কাউকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ এমন কথা জানিয়ে মডেল থানার এই পুুলিশ কর্মকর্তা দাবি করেন এজাহার নামীয় আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।

কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের শালঘর মধুয়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা আক্রান্ত শিক্ষক তোফাজ্জেল হোসেনের গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য নিয়ন্ত্রনকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিলো। ইতোপূর্বে গত দুই বছরে এই দুইপক্ষের মধ্যে একাধিক হামলা পাল্টা-হামলা, ভাংচুর লুটপাটসহ হত্যাকান্ডের ঘটনায় একাধিক মামলাও হয়েছে। প্রায়ই এসব মামলার আসামিরা গ্রেফতার এড়াতে গ্রামছাড়া হওয়ায় গ্রাম হয়ে যায় পুরুষশুন্য। এরা অনেকেই আদালত থেকে জামিন নিয়ে নিজ গ্রাম ও বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করেন। সেই সাথে পক্ষগণ প্রতিপক্ষের লোকজনকে বাগে পেলেই হামলা ও মারধর করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়। বলা যায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইন শৃংখলা বাহিনীর কোনো তৎপরতাও কাজে আসছে না। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে চরম উদ্বিগ্নের মধ্যে ভীত সন্ত্রস্ত জীবন যাপন করছি।’

এ মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত (৩১ মে) দুপুরে কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রাম আলাউদ্দিন আহমেদ ডিগ্রী কলেজ থেকে কুষ্টিয়া শহরে ফিরছিলেন তোফাজ্জেল হোসেন। এসময় সদর উপজেলার বংশীতলা নতুন ব্রিজের ওপর রাস্তার কাজে ব্যবহৃত রোলার মেশিন দাঁড়ানো ছিলো এবং সেই রোলার মেশিনের পেছনে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক আগে থেকেই এজাহার নামীয় আসামিরা লুকিয়ে ছিলো। ঘটনাস্থলে তোফাজ্জেল হোসেন মোটরসাইকেল যোগে পৌছানো মাত্রই তার পথরোধ করে আসামিরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। ধারালো অস্ত্রের উপর্যুপুরি আঘাতে তার ডান হাতের কবজি কেটে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে এবং দেহের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে ওই শিক্ষকের সাথে থাকা দেড়লাখ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসীরা ছুটে এসে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের পরামর্শে ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। হামলার শিকার ওই কলেজ শিক্ষক তোফাজ্জেল বিশ্বাস কুমারখালী বাঁশগ্রাম কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তিনি কুমারখালী বাগুলাট ইউনিয়নের শালঘর মধুয়া এলাকার জালাল বিশ্বাসের ছেলে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক সাব্বিরুল আলম জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় হামলার শিকার ওই শিক্ষকের ছেলে বাদি হয়ে মামলা দিয়েছে। পুলিশ এজাহার নামীয় আসামিদের গ্রেফতারে অভিযানে নেমেছেন। যারাই জড়িত থাক না কেনো তাদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More