ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমূক্ত সমাজ গঠনে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ

বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গার আলোচনায় জেলা প্রশাসক

স্টাফ রিপোর্টার: খাদ্য উৎপাদনসহ ভোক্তাদের মাঝে যথযথভাবে  তা সরবরাহে যাদের অবদান রয়েছে তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিশ^ খাদ্য দিবসে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেছেন, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেদিকেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের অগ্রযাত্রা তরান্বিত করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে আবাদ উপযোগী সকল জমিতে আবাদ করা অতিব জরুরী। কোনো জমি পতিত রাখা উচিত হবে না।

গতকাল ছিলো ১৬ অক্টোবর রোববার। বিশ^ খাদ্য দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘কাউকে পশ্চাতে রেখে নয়, ভালো উৎপাদনে উত্তম পুষ্টি সুরক্ষিত পরিবেশ এবং উন্নত জীবন।’ কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাতি সংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার উদ্যোগে বিশে^র অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশও দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ১০টায় ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ^ খাদ্য দিবসের মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখবেন। এর আগে গতকাল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শোভাযাত্রা, আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বিশ^ খাদ্য দিবসের আলোচনাসভায় স্বাগত বক্তব্যে দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের চুয়াডাঙ্গা উপ পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা। তিনি চুয়াডাঙ্গার উর্বরভূমির কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করে বলেন, ধান, আম পেয়ারা ভূট্টাসহ সকল প্রকারের ফসল ও ফল উৎপাদনে বিশেষ অবদান রেখে চলেছে। বিশ^ জুড়েই খাদ্য নিয়ে অস্থিরতা রয়েছে। আমাদের দেশে তেমনটি পরিলক্ষিত না হলেও পতিত জমির গুরুত্ব বুঝে আবাদ করতে পাররে আগামী দিনে আমাদের খাদ্য সয়ংসম্পূর্ণতা তথা খাদ্য নিরাপত্তা বাড়বে। এদিকে আমাদের বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খান বলেন, খাদ্য অপচয় রোধ করতে হবে। এ বিষয়ে সমাজে সচেতনতা বাড়াতে পারলে সমাজের কেউ খাদ্য বঞ্চিত থাকবে না। আমাদের উর্বর ভূমিতে যে পরিমাণের আবাদ আমরা বৃদ্ধি করতে পেরেছি তা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সম্মত খাদ্য উৎপাদনে আন্তরিক হতে হবে। খাদ্য গ্রহণেও আমাদের সংযোমী হওয়া প্রয়োজন।

গতকাল সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাজিয়া আফরীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি সরদার আল আমিনসহ জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন দফতরের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ তার বাণীতে বলেছেন, বর্তমানে মহামারি, সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন কারণে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী দেখা দেয়ার প্রেক্ষাপটে খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। রাষ্ট্রপতি বলেন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা গেলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি খাদ্যপণ্য উচ্চমূল্যে বিশ্ববাজারে রপ্তানির মাধ্যমে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে। আমি আশা করি, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তাকে টেকসই করতে ফসলের পুষ্টিসমৃদ্ধ নতুন নতুন জাত ও লাগসই প্রযুক্তির উদ্ভাবন এবং তা সম্প্রসারণে কৃষিবিজ্ঞানী, সম্প্রসারণকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সকলে নিরলস প্রয়াস অব্যাহত রাখবে। দিবসটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, সরকারের গৃহীত কৃষিবান্ধব নীতি ও কার্যক্রমে দানাদার খাদ্য, মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ ও দুধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দ্বারপ্রান্তে। ধান, পাট, আম, পেয়ারা আলু প্রভৃতি ফসল ও ফল উৎপাদনে বাংলাদেশ শীর্ষ আটটি দেশের মধ্যে রয়েছে। কৃষির উন্নয়নে এ সাফল্য সারা বিশ্বে বহুলভাবে প্রশংসিত ও নন্দিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিতসহ কৃষি পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে উত্তম কৃষি চর্চা নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। একই সঙ্গে স্থাপন করা হয়েছে অ্যাক্রিডিটেড ল্যাব ও আধুনিক প্যাকিং হাউজ। তিনি বলেন, কৃষি শিক্ষা-গবেষণা খাতে আরো বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে যার ধারাবাহিকতায় খোরপোষের কৃষি আজ উৎপাদনমুখী ও বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার নিরবচ্ছিন্ন, সাশ্রয়ী ও দ্রুত যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More