গরিবের হক মেরে খাওয়ার অভিযোগে তদন্তের দাবি: দর্শনায় টিসিবি পণ্য বিতরণে অনিয়ম

বিশেষ প্রতিবেদক:চুয়াডাঙ্গার দর্শনা পৌরসভায় টিসিবি পণ্য বিতরণে চাঞ্চল্যকর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে পৌরসভা চত্বরে নিম্ন আয়ের জনগণের মাঝে টিসিবির নির্ধারিত পণ্য বিতরণের সময় প্রতিজনকে নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে প্রায় ২০০/২৫০ গ্রাম করে কম দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন উপকারভোগী ও স্থানীয়রা।

ঘটনাটি দ্রুত এলাকায় আলোচনার ঝড় তোলে। অভিযোগ ওঠে, গরিবের হক মেরে খাওয়া হচ্ছে, এমন মন্তব্যে বিতরণস্থলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

সেদিন প্রায় এক হাজার উপকারভোগীর মাঝে বিতরণ করা হয়
৫ কেজি চাল,২ কেজি ডাল, ১ কেজি চিনি,২ লিটার তেল করে।

ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন টিসিবি পণ্যের ডিলার দামুরহুদার মো. আলামিন, আর ট্যাগ অফিসার মোজাম্মেল হকের প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন হাফিজুর রহমান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পণ্য কম দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন তুললে প্রথমে হাফিজুর রহমান তা অস্বীকার করেন। পরে মাপে গরমিল ধরা পড়লে তিনি দোষ স্বীকার করেন।

দর্শনা পৌরসভার বড়বাবু রুহুল আমিন বলেন, সেদিন পণ্য বিতরণের সময় কিছুটা ঝামেলা হয়েছিল। প্রথমে মাপে ভুল হচ্ছিল, পরে বিষয়টি ঠিক করে দেওয়া হয়।

তবে বিতরণ শেষে জানা যায়, ওই ভুলের সুযোগে বিপুল পরিমাণ পণ্য কম বিতরণ করা হয়েছে।

ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (সাবেক) যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীর রহমান অনিক। তিনি বলেন, আমি পৌরসভায় উপস্থিত থেকে পুরো বিতরণ প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেছিলাম। অভিযোগ করার পর ট্যাগ অফিসারের প্রতিনিধি প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে অনিয়ম ধরা পড়ে। এসিল্যান্ড কিছুক্ষণ আগে এসে একই অনিয়ম ধরেছিলেন, কিন্তু চলে যাওয়ার পর তারা আবার কম ওজনে বিতরণ শুরু করে।

অভিযোগ অনুযায়ী, প্রতিজনের চাল ও ডাল ২০০/২৫০ গ্রাম করে কম দেওয়ায় কয়েক হাজার টাকার টিসিবি পণ্য আত্মসাৎ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

একজন উপকারভোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,আমরা গরিব মানুষ, সরকার আমাদের জন্য কিছু খাবার সামগ্রী দেয় সেটাও যদি কমিয়ে দেয়, তাহলে আমরা কোথায় যাব?

স্থানীয়দের দাবি, এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।

এ বিষয়ে দর্শনা পৌরসভার প্রশাসক ও ভূমি কর্মকর্তা তাসফিফুর রহমান জানান, ঘটনার কথা শুনেই আমি সরাসরি বিতরণস্থলে উপস্থিত হই। যাচাই করে দেখি, সত্যিই কম ওজনে টিসিবি পণ্য বিতরণ করা হচ্ছিল। এ ধরনের অনিয়ম কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। আমি ঘটনাটি লিপিবদ্ধ করেছি এবং আগামী রবিবার (২৬ অক্টোবর) উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ডিলারশিপ বাতিলের জন্য আনুষ্ঠানিক আবেদন করব।

টিসিবি পণ্যে অনিয়ম, ঘাটতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ নতুন নয়। তবে দর্শনায় এই ঘটনা প্রশাসনের সক্রিয় পদক্ষেপের কারণে দ্রুত আলোচনায় আসে। এখন দেখার বিষয় উপজেলা প্রশাসন কতটা দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা নেয়, যাতে ভবিষ্যতে গরিবের হক কেউ এভাবে লুটতে না পারে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More