চুয়াডাঙ্গার বেগমপুর ও নেহালপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সম্মেলন আসন্ন

গুরুত্বপূর্ণ পদপদবি পেতে নেতা-কর্মীদের নানা তদবির
বেগমপুর প্রতিনিধি: দীর্ঘ ১৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চুয়াডাঙ্গার বেগমপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সম্মেলন। এ সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে বাড়তি উন্মাদনা। দলীয় গুরুত্বপূর্ণ পদপদবি ধরে রাখতে এবং নতুন করে পদ পেতে সম্ভব্য প্রার্থীরা নীতিনির্ধারনীদের নিকট ধরণা দিতে শুরু করে দিয়েছেন। তবে দলের ত্যাগী ও অবহেলিত নেতাকর্মীদের দাবি সুবিধাভোগী না, তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে যেনো নেতা নির্বাচিত করা হয়। যাতে করে দলকে আরও সুসংগঠিত করে রাখতে পারেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা।
দলীয়সূত্রে জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার অধীনে রয়েছে ১০টি ইউনিয়ন। আগমী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে সদর উপজেলা আ.লীগের সম্মেলন। উপজেলা সম্মেলনে নির্ধারিত হবে আগামী নেতৃত্ব। আর উপজেলা সম্মেলনে নেতৃত্ব নির্বাচনে ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকদের মতামতের গুরুত্ব অপরিসীম। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও নানা কারণে বেগমপুর ইউনিয়নে ১৮ বছর ও নবগঠিত নেহালপুর ইউনিয়নে ৩ বছর অনুষ্ঠিত হয়নি সম্মেলন। সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী এক মাসের মধ্যে এ দু’টি ইউনিয়নে সম্মেলন করা হবে বলে দলীয়সূত্রে জানাগেছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান নান্নু বলেন, উপজেলা সম্মেলনের আগেই মাসখানের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে বেগমপুর ও নেহালপুর ইউনিয়ন সম্মেলন। তিনি আরও জানান, কয়েকটি ওয়ার্ডের সম্মেলন বাকি আছে; ইউনিয়ন সম্মেলনের আগেই সেগুলো সেরে ফেলা হবে। সদর উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদৎ হোসেন বলেন, উপজেলা সম্মেলনের আগেই বাকি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন সম্মেলন সম্পন্ন করা হবে। ইউনিয়ন দু’টিতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন না হলেও সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির মাধ্যমে কার্যপরিচালিত হয়ে আসছে। বেগমপুর ইউনিয়নের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জামাল উদ্দিন, যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্বাচ আলী ও ওমর আলী। নেহালপুর ইউনিয়নের আহ্বায়ক মোবারক হোসেন ও যুগ্ম-আহ্বায়ক হিসেবে হামিদুল্লাহ দায়িত্ব পালন করছেন। সাধারণত আহ্বায়ক এবং যুগ্ম-আহ্বায়ক হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করে থাকেন তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সভাপতি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে থাকেন। তবে ব্যাতিক্রম যে হয় না তা কিন্তু না। ইউনিয়ন সম্মেলনের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে এরই মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পদের প্রার্থীরা নানা তদবির শুরু করে দিয়েছেন। তবে তৃণমূল নেতাকর্মীদের নীতিনিধারণীদের নিকট দাবি সুবিধাভোগী ব্যক্তি, স্বজনপ্রীতি কিংবা আস্থাভাজন নয়, আগামী নেতৃত্ব যেনো দলের স্বার্থে দলীয় নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে হয় ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গণতন্ত্র চর্চা থাকায় সম্মেলন খুবই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এতে দলের আশু লক্ষ্য ও কর্মসূচি নির্ধারণের পাশাপাশি নতুন কমিটি নির্বাচিত হয়ে থাকে। সম্মেলনে আর যে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হয় তা হলো পূর্ববর্তী সম্মেলনের পরবর্তী সময়ের দলের কর্মকা- পর্যালোচনা করা এবং ওই সময়ে নেতৃত্ব কী কী সঠিক ও ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার বিচার-বিশ্লেষন করা হয়। ইউনিয়ন নেতাদের ওয়ার্ড এবং গ্রামপর্যায়ের দলীয় কর্মীদের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। এসব কারণে রাজনৈতিক সংগঠনের সম্মেলন গুরুত্ব শুধু দলীয় লোকদের কাছে নয়, সাধারণ মানুষের কাছেও অসামান্য। তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মী বলেন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সম্মেলন হলে নতুন নেতৃত্ব তৈরি হবে। অন্যদিকে নেতারা পদ হারানোর ভয়ে, ক্ষমতা খোয়ানোর আশঙ্কায় সারাক্ষণ তটস্থ থাকেন। সুবিধাবাদী নেতারা যোগ্যতাকে হিংসা করেন। তাকে দলের নেতৃত্ব থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে নেতাকে প্রভাবিত করেন। কোন নেতার জনসমর্থন কতটা, দলের প্রতি আনুগত্য কতটা, তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নেতার আস্থাভাজন কে কতটা। এসব সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের দলীয় পদপদবী দেয়ার আগে প্রার্থীর যোগ্যতা এবং গ্রহণযোগ্যতা অবশ্যই যাচাই বাচাই করা উচিত বলে ইউনিয়ন আ.লীগের নেতাকর্মীরা মনে করছেন।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More