চুয়াডাঙ্গায় গৃহবধূর আত্মহত্যার প্ররোচনাকারীদের বিচার দাবি

আইনি সহায়তা দিতে স্মৃতির মা-বাবার পাশে মানবতা ফাউন্ডেশন

স্টাফ রিপোর্টার: যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করা হতো গৃহবধূ খাতুনকে। দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় সইতে হতো নানা গঞ্জনা। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতন ও আত্মহত্যার প্ররোচনার একপর্যায়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি। আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে আইনের আওতায় না এনে অপমৃত্যু মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছে পুলিশ। ফলে বিচার না পেয়ে দিশেহারা স্মৃতির পিতা-মাতা। ঘটনাটি ঘটেছে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার কলাবাড়ী গ্রামে। এ ঘটনায় আইনি সহায়তা চেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার মানবতা ফাউন্ডেশনে আবেদন করেছেন স্মৃতির পিতা-মাতা।

ঘটনাসূত্রে প্রকাশের বরাত দিয়ে মানবতা ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের দৌলতদিয়াড় স্কুলপাড়ার নৈশপ্রহরী আব্দুল হামিদের মেয়ে স্মৃতি খাতুনের (২৪) সাথে আড়াইবছর আগে বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের পিরপুর গ্রামের মৃত সাত্তারের ছেলে বিদেশ ফেরত ফারুক হোসেনের (৩০)। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে স্মৃতির ওপর নির্যাতন করা হতো। এরই একপর্যায়ে গত ৬ মে রমজান মাসে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের পর স্মৃতিকে তাড়িয়ে দেয় স্বামী ফারুক। বাপের বাড়ি ফিরে পিতা-মাতার কাছে এসে নালিশ জানায় স্মৃতি। এদিকে, ফারুকের পিতামাতা বেঁচে না থাকায় বর্তমানে তার অভিভাবক হিসেবে রয়েছেন দামুড়হুদার কলাবাড়ী গ্রামের খালা মন্জূরা ও খালু ফরজ আলী। স্মৃতি ওইদিনই পিতা-মাতার কথামতো ফারুকের খালা-খালুর কাছে গিয়ে অভিযোগ জানায়। অপরদিকে, বিষয়টি জানতে পেরে ফারুক তার বোন নাজু ও দুলাভাই জুগা ম-লকে নিয়ে হাজির হয় খালাবাড়ি। যৌতুক না পাওয়ার ক্ষোভে সেখানে সবাই মিলে স্মৃতিকে চরম অপমান করে। তাকে ‘ফকিন্নির মেয়ে টাকা দিতি পারিসনে, বিষ খেয়ে মরলিওতো পারিস’ এধরণের নানা অপমানজনক কথাবার্তা এবং মরার কথাও বলেন তারা। লজ্জা আর অপমান সইতে না পেরে বিষপান করেন গৃহবধূ স্মৃতি। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। পরদিন ৭ মে স্মৃতির মৃত্যু হয়। এঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়। সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করা হয়। তবে, স্মৃতির পিতা আব্দুল হামিদ তার মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যা করতে বাধ্য করার অপরাধে স্মৃতির স্বামী ফারুক হোসেন, ননদ নাজু, ননদাই জুগা ম-ল, খালাশাশুড়ি মঞ্জুরা, খালুশশুর ফরজের বিরুদ্ধে মামলা করতে চাইলে পুলিশ বিচারের জন্য আশ্বস্ত করে তাদের। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এ বিষক্রিয়ার প্রমাণ মেলে। চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ আব্দুল হামিদের মামলা না নিয়ে গত ২১ জুলাই অপমৃত্যু মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দেয়। বিষয়টি স্মৃতির পিতা-মাতাকেও জানানো হয়নি বলে অভিযোগ করেন তারা। গতকাল রাতে আইনি সহায়তা চেয়ে মানবতা ফাউন্ডেশন বরাবর আবেদন করেন স্মৃতির পিতা আব্দুল হামিদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মানবতা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাড. মানি খন্দকার, অপারেশন অফিসার আ্যড. জীল্লুর রহমান জালাল, ইনফরমেশন অফিসার অ্যাড. নওসের আলী প্রমুখ। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। আইনি সহায়তা দেবে মানবতা ফাউন্ডেশন।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More