চুয়াডাঙ্গায় জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষায় তামাক কর নীতি প্রণয়নের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় বিশ^ তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষায় তামাক কর নীতি প্রণয়নের দাবিতে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি, এইড ফাউন্ডেশনের সহায়তায় চুয়াডাঙ্গা জেলার তামাক বিরোধী জোটভুক্ত সংগঠন পল্লী উন্নয়ন সংস্থা (পাস) মানববন্ধনের আয়াজন করে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পাস’র নির্বাহী পরিচালক ইলিয়াস হোসেন, গ্রামীণ সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান লিপু, রিসোর সমন্বয়কারী আদিল হোসেন। এসময় বক্তারা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে দক্ষিণ এশিয়া স্পিকার সামিটে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাকের ব্যবহার সম্পুর্ণভাবে নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দেন। এ লক্ষ্য অর্জনের কৌশল হিসেবে তিনি দেশে একটি শক্তিশালী তামাক কর নীতি প্রণয়নের ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার ৬ বছরেও  দেশে তামাক কর নীতি প্রণয়ন হয়নি। বাংলাদেশে কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণের অতি সত্ত্বর একটি শক্তিশালী তামাক কর নীতি প্রণয়ন করতে হবে। বক্তারা আরও বলেন, তামাক পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপকভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের কারণে প্রতি বছর ১ লাখ ৬২ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে, প্রায় ৪ লাখ মানুষ পঙ্গুত্ব। মানুষের মৃত্যু ও অর্থনৈতিক ক্ষতি কমিয়ে আনতে হলে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নিতে হবে। মানববন্ধন শেষে তামাক বিরোধী সংগঠনসমূহের একটি প্রতিনিধি দল জাতীয় তামাক কর নীতি প্রণয়নসহ তামাক নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে প্রেরণের জন্য চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খানের কাছে প্রদান করেন। স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক সাজিয়া আফরিন। এসময় উপস্থিত ছিলেন পাস’র নির্বাহী পরিচালক ইলিয়াস হোসেন, গ্রামীণ সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান লিপু, রিসোর সমন্বয়কারী আদিল হোসেন। তামাকজাত দ্রব্যের উচ্চ মূল্য ও এর ওপর উচ্চ হারে করারোপ তামাক নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে কার্যকর ও সাশ্রয়ী পদ্ধতি হিসাবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ১০ ভাগ বৃদ্ধি পেলে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে তামাকের ব্যবহার ৮ ভাগ পর্যন্ত কমে আসে। বাংলাদেশে তামাক কর ব্যবস্থা জটিল ও ত্রুটিপূর্ণ তাই এটি তামাকের ব্যবহার কমাতে কার্যকর অবদান রাখতে পাছে না। দেশে তামাক কর নীতি প্রণীত হলে তামাকজাত দ্রব্যের ওপর করারোপ একটি সাধারণ নিয়মের মধ্যে আসবে। এর মাধ্যমে আধুনিক ও কার্যকর করারোপ পদ্ধতি ও কর আদায় পদ্ধতির প্রচলন হবে ফলে তামাক কর ব্যবস্থার জটিলতা কমে আসবে। জাতীয় তামাক কর নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে কর প্রশাসন আরো কার্যকর ও দক্ষ হয়ে উঠবে, তামাক কোম্পানীর হস্তক্ষেপ এবং কর ফাঁকি রোধ করা যাবে। এর মাধ্যমে সকল তামাকজাত দ্রব্য, তামাক উৎপদন ও বিক্রয় চেইন, তামাক চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ, তামাক রফতানী ইত্যাদি বিষয়কে করজালের আওতায় আনা যাবে। এর ফলে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পাবে এবং তামাকের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনকে এগিয়ে নেবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More