জীবননগরের স্থানীয় শহীদ দিবস আজ

এম আর বাবু/সালাউদ্দীন কাজল: আজ ৭ আগস্ট চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের স্থানীয় শহীদ দিবস। ১৯৭১’র মুক্তিযুদ্ধের এই দিনে উপজেলার মাধবখালী সীমান্তে মুক্তিবাহিনীর সাথে পাক হানাদার বাহিনীর তুমুল যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে ৫ বীর মুক্তিযোদ্ধা ইপিআর জওয়ান শহীদ হন।
জীবননগর উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাইদুর রহমার জানান, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ৮নং সেক্টরের বানপুর সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন পরবর্তীতে সেনাবাহিনী প্রধান প্রয়াত অব. জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে লে. মোস্তফা, ইপিআর জওয়ান ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধের সমন্বয়ে গড়া একটি দল দেশে প্রবেশ করেন। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ধোপাখালীর কিশোর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আজহারুল করিম রেজু, রেজাউল করিম আলো, আবুল কাসেম, সদর আলী, রইচ উদ্দীন, দর্শনার আব্দুস সামাদ ও আক্তার হোসেন, জয়রামপুর গ্রামের সাইদুর রহমান, জীবননগরের নিজাম উদ্দীন প্রমুখ ছিলেন। মুক্তিবাহিনীর দলটি ৭ আগস্ট প্রত্যুষে ধোপাখালী সীমান্ত দিয়ে দেশে প্রবেশ করেন; কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের এ প্রবেশের খবর পাক-হানাদার বাহিনীর দোসর স্থানীয রাজাকাররা পূর্বেই পাক ক্যাম্পে পৌঁছে দেয়। পাক হানাদার বাহিনীর ক্যাপ্টেন মুনছুর আলীর নেতৃত্বে শক্তিশালী বেলুচ রেজিমেন্টের সৈন্যরা ধোপাখালী বাজার মোড়ে মুক্তিবাহিনী আসার অপেক্ষায় ওঁৎ পেতে থাকে। মুক্তিবাহিনী ধোপখালী বাজারে প্রবেশ করার সাথে সাথে পাক হানাদার বাহিনী তাদের ওপর অতর্কিতভাবে গুলিবর্ষণ শুরু করলে মুক্তিযোদ্ধারা হতভম্ব হয়ে পড়েন। পজিশন নেয়ার পর মুক্তিবাহিনী পাল্টা আক্রমন চালিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুললে শুরু হয় উভয় বাহিনীর মধ্যে তুমুল যুদ্ধ। যুদ্ধে পাকিস্থানী হানাদার বাহিনী ৫ জন সৈন্যকে হারিয়ে ও ব্যাপক ক্ষতিসাধনের মুখে একপর্যায়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়। যুদ্ধে ৫ জন ইপিআর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদৎ বরণ করেন।
শহীদ ৫ বীর মুক্তিযোদ্ধারা হচ্ছেন হাবিলদার আব্দুল গফুর, নায়েক আব্দুর রশিদ, সিপাহী আবু বকর, সিপাহী আব্দুল আজিজ ও সিপাহী সিদ্দিক আলী। শহীদ ৫ মুক্তিযোদ্ধাকে স্থানীয় গ্রামবাসীরা উদ্ধার করে মাধবখালী-বানপুর সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে একটি গণকবরে পাশাপাশি সমাহিত করেন। সন্মুখ এ সমরে নেতৃত্ব প্রদানকারী ক্যাপ্টেন পরবর্তীতে সেনা প্রধান জেনারেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান যশোর সেনা নিবাসের জিওসি থাকাকালীন ১৯৯৪ সালের ২২ জানুয়ারি জীবননগর পরিদর্শন করেন এবং নিজ উদ্যোগে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবর বাঁধায় করে দেন। সেখানেই এখন প্রতিবছর এ সকল বীর সেনানীদের শ্রদ্ধা জানানো হয়।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More