ঝিনাইদহ সড়কে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে অভিনব ইজিবাইক

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের মধ্যে সংসার চালানোর তাগিদে অনেকটা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবার অভিনব পন্থায় ইজিবাইক তৈরি করেছেন ঝিনাইদহের এক ইজিবাইক চালক। সারাদেশে বন্ধ রয়েছে গণপরিবহণ। জেলা শহরের সড়কগুলোতে চলছে গোনা কয়েকটি রিক্সা ও ইজিবাইক। সড়কে বের হতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন এর সাথে জড়িতরা। ইজিবাইক মানেই নজরে আসে ব্যাটারী চালিত একটি বাহন। যেখানে ৪ দিক দিয়ে ঘেরা। ভিতরে বসতে পারে ৪ থেকে ৬ জন। গাদাগাদি করে পাশাপাশি ও সামনা-সামনি বসে গন্তব্যে যেতে হয় যাত্রীদের। দেশব্যাপী মহামারী করোনার কারণে বন্ধ রয়েছে ছোটবড় গণপরিবহণ। জেলা শহরেও সীমিত করা হয়েছে ইজিবাইক চলাচল। সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা আর করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধ করার ধারণা থেকে ইজিবাইককে কেটে ৪ টি গেট ও মাঝখানে পার্টিশন দেওয়ার কথা মাথায় আসে শহরের কাঞ্চনপুর গ্রামের ইজিবাইক চালক নয়ন হোসেনের। নিজেই লেগে পড়েন কাজে। দীর্ঘ ১ সপ্তাহের চেষ্টায় ইজিবাইক কেটে ৪ টি গেট করেন। সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে মাঝ দিয়ে দিয়েছেন পার্টিশন। এতে এক যাত্রির সাথে অন্যযাত্রির থাকছে দূরত্ব। অভিনব এই পদ্ধতির কারণে বেড়েছে তার আয় রোজগার। এতে খুশিও যাত্রীরা। ইজিবাইক চালক রফিকুল ইসলাম নয়ন বলেন, কয়দিন বাড়িতে বসে ছিলাম। ইজিবাইক নিয়ে বাইরে বের হলে পুুলিশ সমস্যা করে। কারণ ইজিবাইকের ভিতরে মানুষ এক সাথে বসে থাকে। এতে করোনার সংক্রমনের ঝুকি বেড়ে যায়। বাড়িতে বসে থাকার কারণে সংসার চলছিল না। কি করব এ নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। পরে আলাদা আলাদা সিট তৈরী করার বিষয়টি মাথায় আসে। কয়েক দিনের চেষ্টায় নিজেই কাজটি করেছি। রাস্তায় বের হলে এখন পুলিশ ভাইয়েরাও কিছু বলছেন না। আবার যাত্রীরাও ভালো বলছে। আমার এখন আয় রোজগারও বেড়েছে। ইজিবাইকে ওঠা বসির আহাম্মেদ নামের এক যাত্রী বলেন, যে পদ্ধতিতে ইজিবাইক তৈরী করা হয়েছে সত্যিই বর্তমান সময়ের জন্য উপকারী। একজন যাত্রী অন্যজনের সংস্পর্শে আসছে না। কেউ কারো সাথে কথাও বলতে পারছে না। ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম বলেন, রফিকুল ইসলাম নয়ন যে পদ্ধতিতে ইজিবাইক তৈরী করেছে তা প্রশংসনীয়। এক্ষেত্রে মাঝখান দিয়ে যা দিয়েছে তা ফিল্টারের কাজ কিছুটা করবে। এক্ষেত্রে কাচ বা আরও ভালো কিছু দিলে ভালো হবে। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, অভিবন কায়দায় একটি ইজিবাইক তৈরি করা হয়েছে। এমন খবর পেয়ে এর উদ্ভাবক রফিকুল ইসলাম নয়নকে আমার অফিসে আমন্ত্রণ জানালাম। তিনি আমার অফিসে আসার পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি উপহার তাকে তুলে দিলাম এবং ধন্যবাদ জানালাম। পাশাপাশি তাকে সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাসও দিয়েছি।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More