‘টিকটক-লাইকির ভিডিও’র কথা বলে প্রতারণা : ভারতে গ্রেফতার ৫ বাংলাদেশীর পাসপোর্ট-ভিসা নেই

‘টিকটক-লাইকির ভিডিও তৈরির মাধ্যমে আয়ের সুযোগ’ এমন প্রলোভন দেখিয়ে তরুণ-তরুণীদের ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। পরে বিভিন্ন দেশে পার্লার, সুপার শপ, কিংবা বড় শপিং মলে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করা হচ্ছে।
সম্প্রতি ভারতে বাংলাদেশি তরুণীকে যৌন নির্যাতনের যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, তার সূত্র ধরে নারীপাচারের একটি বড় চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। যৌন নির্যাতনের ঘটনায় ভারতে গ্রেফতার হওয়া পাঁচ জন বাংলাদেশির সবাই অবৈধভাবে সেখানে গিয়েছিল। তাদের কারো পাসপোর্ট কিংবা ভিসা ছিল না বলে জানিয়েছেন তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. শহিদুল্লাহ। শনিবার বিকালে শ্যামলীতে তেজগাঁও উপ-পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ভারতের কেরালা রাজ্যে সংঘটিত ওই ঘটনায় ঢাকার হাতিরঝিল থানাধীন মগবাজার এলাকার রিফাদুল ইসলাম হৃদয় (২৬) নামে এক যুবকে শনাক্ত করে পুলিশ। সংঘবদ্ধ আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রটির নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ, ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইসহ কয়েকটি দেশ পর্যন্ত বিস্তৃত। তাদের টার্গেট স্কুল-কলেজ পড়ুয়া মেয়েসহ বিবাহিত গৃহিনী ও বখে যাওয়া ছেলে-মেয়ে। টিকটকের মডেল বানানোর টোপ দিয়ে তরুণীদের ভারতে পাচারের ফাঁদে ফেলেছে চক্রটি। বিভিন্ন সময় ভারতে নিয়ে যৌনকর্মী হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকজনকে। এই নারীপাচার চক্রটির নেটওয়ার্ক অনেক বিস্তৃত। তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার মো. শহিদুল্লাহ আরো বলেন, যৌন নির্যাতনের ঘটনায় ভারত এবং বাংলাদেশের হাতিরঝিল থানায় পৃথকভাবে মামলা হয়েছে। ভারত ভারতের মতো করে মামলার তদন্ত করবে এবং আমরা আমাদের মতো করে তদন্ত করবো। তবে অপরাধীরা যেহেতু বাংলাদেশি, তাই দুই দেশের মধ্যে আন্তঃসমন্বয়ের মাধ্যমে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে পুলিশ সদর দফতরের সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হচ্ছে। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে ভারতেও মামলা হয়েছে। কিন্তু যেহেতু তারা বাংলাদেশি এবং এখানে মামলা হয়েছে তাই তাদের ফিরিয়ে আনতে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। উপ-কমিশনার মো. শহিদুল্লাহ বলেন, পুলিশ সন্ধান পেয়েছে, টিকটক ভিডিওর জন্য তাদের একত্রিত করে এক পর্যায়ে পাচারের কাজ করা হয়। এ চক্রের মূল আস্তানা ব্যাঙ্গালুরুর আনন্দপুর এলাকায়। পাচারের উদ্দেশ্য হচ্ছে পতিতাবৃত্তি। বিভিন্ন হোটেলের সঙ্গে চক্রটির চুক্তি রয়েছে। বিভিন্ন হোটেলে তারা মেয়েদের সরবরাহ করে এবং আর্থিক সুবিধা পায়। চক্রের সদস্যরা তরুণীদের নেশাজাতীয় দ্রব্যাদি খাইয়ে মোবাইলফোনে ভিডিও করে, পতিতাবৃত্তি করাতে বাধ্য করতো।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More