নানা নাটকীয়তায় শেষ হলো জলবায়ু সম্মেলন কপ২৬

মাথাভাঙ্গা মনিটর: স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় দুই সপ্তাহ ধরে চলা বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ২৬ শনিবার গভীর রাতে (বাংলাদেশ সময়) নাটকীয়ভাবে শেষ হয়েছে। এবারের সম্মেলন ঘিরে শেষ মুহূর্তে চুক্তি হলেও জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় কতোগুলো ইস্যু অমীমাংসিতই রয়ে গেছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রিতে সীমাবদ্ধ রাখতে ধনী দেশগুলো অঙ্গীকার করলে কতটুকু বাস্তবায়ন করা সম্ভব, তা নিয়ে সন্দেহ করছেন বিশ্লেষকরা। পরিবেশবাদী আন্দোলনকারীরাও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। এবারের জলবায়ু সম্মেলনের অর্জনকে ‘ঠুনকো বিজয়’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন জলবায়ু সম্মেলনের সভাপতি অলোক শর্মা। আর চুক্তি প্রসঙ্গে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, এটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে তা যথেষ্ট নয়।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করে ধরিত্রী রক্ষায় বিশ্বনেতারা একমত হয়েছেন। কয়লাসহ জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনতেও তারা প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। এসব ব্যাপারে বিশ্বনেতারা চুক্তিতে সম্মত হয়েছেন। কার্বন নিঃসরণ কমানো, জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি এবং সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি রোধ করতে ২০০টি দেশ একমত পোষণ করেছে। কপ২৬-এর অর্জনকে ইতিবাচক হিসাবে দেখলেও সার্বিকভাবে এটিকে ‘ঠুনকো বিজয়’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন জলবায়ু সম্মেলনের সভাপতি অলোক শর্মা। শনিবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করে অলোক শর্মা আরও বলেন, কঠিন কাজ এখন শুরু হলো। আমরা বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রিতে সীমিত রাখার লক্ষ্য টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছি। চুক্তি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিস। তারা বলছেন, চুক্তিটিতে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার লক্ষ্যটাই কেবল টিকিয়ে রাখা হলো।
যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে বলা হয়, ধনী দেশগুলো ২০২০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বার্ষিক জলবায়ু তহবিল দেয়ার প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারেনি। আগামী বছর জাতিসংঘ কমিটির অগ্রগতি নিয়ে প্রতিবেদন দেয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে ২০২২, ২০২৪ ও ২০২৬ সালে সরকারগুলোর মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠানের ওপর জোর দেয় যুক্তরাজ্য। জলবায়ু সম্মেলনে বলা হয়, তহবিল সংক্রান্ত বিরোধের সমাধান কীভাবে করা হচ্ছে তা খুব জরুরি। কারণ, ভবিষ্যৎ বৈশ্বিক উষ্ণতাজনিত ঝুঁকি সীমিত করতে দেশগুলো নতুন কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবে কি না, তা এর মধ্য দিয়েই নির্ধারণ হবে।
জলবায়ু সম্মেলনের চূড়ান্ত চুক্তিতে শেষ মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে ভারত ও চীন। তাদের পক্ষ থেকে কয়লার ব্যবহার ‘ফেজ আউটের’ পরিবর্তে ‘ফেজ ডাউন’ করার কথা বলা হয়। শেষ পর্যন্ত তা অনুমোদন পেলেও অনেক দেশ এতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। এদিকে দাবি মেনে জলবায়ু অভিযোজনের জন্য অর্থায়ন ২০২৫ সালের মধ্যে দ্বিগুণ করতে ধনী দেশগুলোর প্রতি ছোট দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর প্রধানরা আহ্বান জানিয়েছেন। কপ২৬ সম্মেলনের ঘোষণা অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কয়লা ব্যবহারকারী দেশ চীন ও ভারতকে কয়লার ব্যবহার কমাতে হবে। ৪০টিরও বেশি দেশ কয়লার ব্যবহার কমিয়ে আনতে চুক্তি সই করেছে।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More