নাম বদলে মুসলিম মতে আসমাকে বিয়ে করে সৌমেন রায়

কুষ্টিয়ায় আসমা খাতুন, শিশু ছেলে রবিন ও শাকিল খানকে পুলিশের এএসআই সৌমেন রায় গুলি করে হত্যা করে। এদিকে মুসলিম বিধান মতে আসমাকে বিয়ে করে সৌমেন রায়। সে সময় নিজেকে মো. সুমন হোসেন বলে পরিচয় দেয় সৌমেন। নিহত আসমা খাতুনের মা হাসিনা বেগম জানান, কুমারখালী থানায় এএসআই সৌমেন মিত্র চাকরি করাকালীন তাদের সাথে পরিচয় হয়। সেসময় সৌমেন তার নাম বলে মো. সুমন হোসেন এবং সুমন নামেই মুসলিম বিধান মতে তার মেয়ের সাথে বিয়ে হয়। এবং বিয়ের পর থেকেই কুষ্টিয়া আড়ুয়াপাড়া একটি ভাড়া বাসায় তার মেয়েকে রাখে সৌমেন। এদিকে নিহত আসমা খাতুন, তার ছেলে রবিন ও পরকীয়া প্রেমিক শালিক খানের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সোমবার সকালে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও তাপস কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নিহত তিনজনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে রোববার রাত ১২টার পর তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শাকিলের লাশ তার বাবা মেজবা রহমানের কাছে এবং আসমা খাতুন ও তার ছয় বছর বয়সী ছেলের লাশ মা হাসিনা বেগমের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
নিহতদের পারিবারিক সূত্র জানায়, বাদ জোহর নিহত আসমা খাতুন ও তার ছেলে রবিনের জানাজা শেষে নিজ গ্রাম কুমারখালীর বাগুলাট ইউনিয়নের নাতুড়িয়া কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হবে। অন্যদিকে নিহত শাকিল খানের নিজ গ্রাম কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের সাঁওতা কারিগর পাড়া গ্রামের মেছের উদ্দিন দারুল উলুম কওমি মাদ্রাসায় বাদ জোহর জানাজা শেষে সাঁওতা কারিগর পাড়া গোরস্থানে দাফন করা হয়।
সোমবার দুপুর ১টা ১০ মিনিটের দিকে সৌমেন মিত্রকে বিচারক মো. রেজাউল করিমের আদালতে হাজির করা হয়। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফরহাদ হোসেন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তিনজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সৌমেনকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। এর আগে আটকের পর চাকরি থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত এএসআই সৌমেনকে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনের ডিবি কার্যালয়ে রেখে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল আলম বলেন, পরকীয়ার জেরে কুষ্টিয়া শহরে প্রকাশ্যে স্ত্রী, সৎ ছেলে ও এক বিকাশকর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় রোববার রাতে মামলার হয়েছে। এএসআই সৌমেন রায়কে একমাত্র আসামি করে নিহত শাকিল খানের বাবা মেজবার রহমান বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার ওসি (তদন্ত) নিশি কান্ত। পরকীয়ার জেরে কুষ্টিয়ায় দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার পুত্রসহ তিনজনকে গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশের সহকারী পরিদর্শক (এএসআই)। রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় ম. আ. রহিম সড়কের (পিটিআই রোড) কাস্টমস মোড়ের ডা. আজাদুর রহমানের ৪ তলা ভবনের নিচতলার মার্কেটের মধ্যে গুলিবর্ষণের এ ঘটনা ঘটে।
এএসআই সৌমেন নিজের কাছে থাকা অস্ত্র দিয়ে স্ত্রী আসমা ও সঙ্গে থাকা যুবক শাকিলের মাথায় কয়েক রাউন্ড গুলি করেন। এ সময় শিশু রবিন দৌড়ে পালাতে গেলে তাকেও পেছন থেকে গুলি ককরেন। খুলনা ফুলতলায় কর্মরত অবস্থায় সরকারি অস্ত্র নেয়ে কুস্টিয়া এলো কীভাবে? খতিযে দেখছে তদন্ত দল। কুষ্টিয়ায় আলোচিত মা-ছেলেসহ তিন খুনের মামলার একমাত্র আসামি পুলিশের এএসআই সৌমেন রায় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ সময় তিনি বলেন- ‘স্ত্রী পরকীয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনি’। সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. এনামুল হকের আদালতে তিনি জবানবন্দি দেন। 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More