পরীমনির রিমান্ড : দুই বিচারকের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন হাইকোর্ট

স্টাফ রিপোর্টার: চিত্রনায়িকা শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমনিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ড মঞ্জুরকারী দুই বিচারকের লিখিত বক্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত মনে করছেন, দুই বিচারকের ব্যাখ্যায় হাইকোর্টকে উল্টো হেয় করা হয়েছে। এ বিষয়ে দুই বিচারকের কাছে ফের ব্যাখ্যা চেয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর তারিখ রাখা হয়েছে। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কেএম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল বুধবার আদেশের এই তারিখ দেন।
আদালত বলেছেন, ‘দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ডে কোনো ত্রুটি হয়েছে বলে দুই বিচারক বিশ্বাসই করেন না। তাদের এই ব্যাখ্যায় আমরা সন্তুষ্ট নই। তারা হাইকোর্টকে হেয় করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন এবং প্রচলিত আইনের বিরুদ্ধে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। এ কারণে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করছি।’ গতকাল আদালতে শুনানির সময় আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পক্ষে অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইয়াহিয়া দুলাল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মিজানুর রহমান। এ ছাড়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। পরীমনির রিমান্ড মঞ্জুরকারী ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস ও আতিকুল ইসলাম কী ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তা দেখতে চান অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না। এ সময় আদালত বলেন, এটা এই মুহূর্তে দেখা যাবে না। কারণ বিষয়টি বিচারাধীন। এরপর আদালত কেন দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ড মঞ্জুর করা হলো সে বিষয়ে দুই বিচারক কী ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা শুনতে চান। দুই বিচারকের মধ্যে একজন পরীমনিকে রিমান্ডে পাঠানোর সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে এলএসডি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের আত্মহত্যা এবং ওই মাদকের ভয়াবহতা তুলে ধরেন। সেটি পড়ে শুনিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম বলেন, ‘আমরা তাঁকে শোকজ করেছি কেন তিনি রিমান্ড মঞ্জুর করলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন ছাত্র আত্মহত্যা করেছে সেটার বর্ণনা দিলেন।’ এরপর বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক অন্য ম্যাজিস্ট্রেটের ব্যাখ্যা পড়ে শোনান। সেখানে ম্যাজিস্ট্রেট বলেছেন, ‘উপরোক্ত বিষয় সার্বিক বিবেচনায় দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করার আদেশের ক্ষেত্রে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি নিতান্তই আমার ইচ্ছাকৃত নয়, সরল বিশ্বাসে কৃত ভুল।’ তখন হাইকোর্ট বলেন, ‘তারা যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন এবং আমাদের প্রচলিত আইনের বিরুদ্ধে। এই রিমান্ড মঞ্জুরের ক্ষেত্রে তারা ত্রুটি দেখছেন না। উনাদের (বিচারক) ত্রুটি হয়েছে এটা বিশ্বাস করেন না।’ পরীমনিকে রিমান্ডে নেয়ার বৈধতা প্রশ্নে হস্তক্ষেপ চেয়ে আসকের করা এক আবেদনে গত ২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট এক আদেশে রিমান্ড মঞ্জুরকারী দুই বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সংশ্লিষ্ট দুই বিচারক পৃথক লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করেন। তাতে তারা অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য হাইকোর্টের কাছে ক্ষমা চান।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More