শ্রীমঙ্গলে তেলের লাইনে ভয়াবহ আগুন, দ্বগ্ধ ২

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ২ নম্বর ভূনবীর ইউনিয়নের শাসন কদম তলা এলাকায় পেট্রো বাংলা কোম্পানির তেলের লাইন লিক হয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থা পেট্রো বাংলা কোম্পানির নিয়ন্ত্রণাধীন ওই এলাকায় মাটির নিচ দিয়ে পাশাপাশি গেছে সিলেটের হরিপুর হতে রশিদপুর হয়ে জাতীয় গ্রিডের গ্যাস ও তেলের পাইপ লাইন। এরমধ্যে মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে ওই এলাকায় তেলের লাইন থেকে তেল লিক হতে দেখেন এলাকাবাসী। পরে দায়িত্বরত পাহারাদারকে খবর দিলে তারা এসে দেখে দুটি পয়েন্টে তেলের প্রবাহ বন্ধ করত লক টানেন। কিন্তু এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে তেল চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যা পর হঠাৎ আগুন ধরে যায় তেলের লাইনে।

এরপর আগুন প্রায় এক কিলোমিটার ব্যাপ্তি নিয়ে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজার থেকে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট রাত সাড়ে ৯টা থেকে চেষ্টা করে রাত ১০টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় বলে জানা গেছে।

এদিকে তেল ছড়ায় ছড়িয়ে পড়লে ছড়ার মাছ মরে ওঠে। মাছ ধরতে গিয়ে হঠাৎ আগুনের কবলে পড়ে দ্বগ্ধ হন পিতা ও ছেলে। দ্বগ্ধ দুজন হলেন- ভূনবীর এলাকার বশির মিয়া (৫০) ও তার ছেলে রেদোয়ান (২৪)। প্রথমে তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সর্বশেষ তাদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিসের পুরো টিম কাজ করেন। রাষ্ট্রীয় এ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে নাশকতা হতে পারে বলে অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেছেন। অতীতে তেল চোর চক্রের সদস্যরা এভাবে তেল চুরি করতে যেয়ে পুরো হাইল হাওড়ে তেল ছড়িয়ে দেয়। ফলে রাষ্ট্রের প্রচুর অর্থের ক্ষতি হয়।

এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিসের ওয়ার হাউজের ইন্সপেক্টর সোলেমান আহমেদ বলেন, রাত ৯ টায় খবর পেয়ে তারা ৪টি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মৌমিতা জানান, বশির মিয়া ও তার ছেলে রেদোয়ান অগ্নিদ্বগ্ধ অবস্থায় আসলে তাদের দ্রুত মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিটকে নিয়ে ঘটনাস্থলে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পেট্রো বাংলা ও সেভরন কোম্পানির এক্সপার্ট টিম যৌথভাবে অনুসন্ধান করে দেখবে ক্ষতি কত টাকার হয়েছে, কিভাবে তেলের পাইপ লাইন লিকেজ হলো ও আগুনের সূত্রপাত কিভাবে হলো। বর্তমানে পুরো এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ও পাহারাদার রয়েছেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More