ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু

দুর্গোৎসবে পুজাণ্ডপগুলোতে মানতে হচ্ছে বাড়তি সতর্কতা ও স্বাস্থ্যবিধি
স্টাফ রিপোর্টার: ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হচ্ছে আজ সোমবার। পাঁচ দিনের এ উৎসব আগামী শুক্রবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় এ ধর্মীয় উৎসবকে আনন্দমুখর করে তুলতে দেশজুড়ে প্রস্তুতিও শেষ হয়েছে। তবে করোনার সংক্রমণ এড়াতে গত বছরের মতো এবারও সারাদেশের পূজাম-পগুলোয় দুর্গোৎসব আয়োজনে মানতে হচ্ছে বাড়তি সতর্কতা ও স্বাস্থ্যবিধি। পূজার আয়োজনকে ঘিরে নানা বিধিনিষেধের কথাও জানিয়ে দেয়া হয়েছে এরই মধ্যে। গত বছরের মতো এবারও উৎসব-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে এ পূজাকে সাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।
এর আগে গত ৬ অক্টোবর দেবীদুর্গার আবাহন বা মহালয়ার মধ্যদিয়ে সূচনা হয় দেবীপক্ষের। সাধারণত দেবীপক্ষ শুরুর সাত দিন পর পাঁচ দিনের দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটে থাকে। তবে এবার পঞ্চমীর বোধন ও ষষ্ঠী তিথি একই দিনে পড়ায় দূর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরুর দিনক্ষণও একদিন এগিয়ে এসেছে।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় বোধনের মাধ্যমে দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙার জন্য বন্দনা পূজা করা হবে। এর আগে ষষ্ঠী তিথিতে সকাল ৭টা ৩১ মিনিটের মধ্যে দেবীদুর্গার ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠীবিহিত পূজা হবে। পরে সন্ধ্যায় বোধন শেষে দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হবে মূল দুর্গোৎসব। মঙ্গলবার মহাসপ্তমী, বুধবার মহাষ্টমী, বৃহস্পতিবার মহানবমী এবং শুক্রবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন হবে।
পুরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তে তিনি পূজার আয়োজন করায় দেবীর এ পূজাকে বাসন্তী পূজা বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে লঙ্কা যাত্রার আগে শ্রী রামচন্দ্র দেবীর পূজার আয়োজন করেছিলেন শরৎকালের অমাবস্যা তিথিতে, যা শারদীয় দুর্গোৎসব নামে পরিচিত। দেবীর শরৎকালের পূজাকে এজন্যই হিন্দুমতে অকালবোধনও বলা হয়।
সনাতন বিশ্বাস ও পঞ্জিকামতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবীদুর্গা এবার ঘোটকে (ঘোড়া) চড়ে স্বর্গালোক থেকে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) আসবেন (আগমন)। যার ফল হচ্ছে ফসল ও শস্যহানি। দেবী স্বর্গালোকে বিদায় (গমন) নেবেন দোলায় (পালকি) চড়ে। যার ফল হচ্ছে মড়ক। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগ ও মহামারির প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাবে।
দুর্গোৎসব চলাকালে পূজার প্রতিদিনই অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ ও ভোগআরতির আয়োজন করা হবে। এছাড়া দেশজুড়ে ম-পে ম-পে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আরতি প্রতিযোগিতা, স্বেচ্ছায় রক্তদান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনাসভা, নাটক, নৃত্যনাট্যসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজনও থাকবে। দুর্গোৎসব উপলক্ষে পৃথক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। সারাদেশের প্রতিটি পুজাম-পের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশ এবং র‌্যাবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি ম-পে দায়িত্ব পালন করবে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More