হাসপাতাল ঘুরে রোগীর স্বজনদের মাঝে সেহরি বিতরণ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: সেহরি আর ব্যাগ হাতে হাসপাতালের ভবনের প্রতিটি ওয়ার্ডে ঘুরছে একদল যুবক। উদ্দেশ্য রোগীর সঙ্গে থাকা স্বজনদের মাঝে সেহরি বিতরণ করা। করোনা পরিস্থিতিতে বাসায় রান্না করা খাবার বক্সে এনে দেয়া হচ্ছে তাদের। রাত ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত চলে তাদের এ কার্যক্রম। গতকাল রোববার রাতে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। যুবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সদস্যদের টাকায় কেনা হয় বাজার। এরপর ঘরেই রান্না করা হয়। সাদামাটা আয়োজনে থাকে খিচুড়ি, কোনো দিন আবার সাদা ভাত, ডাল আর মুরগির মাংস। সঙ্গে বোতলজাত খাবার পানি। এরপর অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে যান সেহরি বিতরণে।
মহেমপুর উপজেলা থেকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ছেলেকে নিয়ে ভর্তি হয়েছেন মা রেহানা আক্তার। সেহরিতে কী খাবেন তা জানতেন না। কিন্তু যুবকদের এনে দেয়া খাবার পেয়ে তিনি খুশি। রেহানা আক্তার বলেন, ‘সেহরি নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু দেখি কয়েকজন ছেলে এসে আমাকে এক বক্স খাবার দিয়ে বলে রাতের সেহরিটা আপনার জন্য।’
আরেক রোগীর স্বজন জানান, রাতে তার খাবার নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। তাদের দেয়া সেহরি পেয়ে তিনি খুশি। এটা খেয়ে রোজা রাখবেন। সেহরি বিতরণের উদ্যোক্তা বিশিষ্ট নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠক শামীম আহম্মেদ টফি জানান, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীরা নিয়মিত খাবার পেলেও সঙ্গে থাকা স্বজনদের বাইরে থেকে নিয়ে আসতে হয়। বিশেষ করে গরমের সময় রাতে এনে রাখা খাবার সেহরির আগেই নষ্ট হয়ে যায়। এতে রোগীর স্বজনরা খেতে পারেন না। বেশিরভাগ সময় সেহরি না খেয়েই রোজা রাখেন। সেই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে গত বছরের মতো এবারও সেহরি বিতরণ করা হচ্ছে।
এ কর্মসূচির সমন্বয়কারী আব্দুল্লাহ বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশনায় শহরের সব হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকে। দূর-দূরান্তের রোগীর স্বজনরা সেহরি খেতে পারেন না। তাই রোজার সময় তাদের সাধ্যমতো সেহরি বিতরণ করছেন। তিনি আরও জানান, এ কাজে তাদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে আছেন মো. আব্দুর রহিম, মহিদুল ইসলাম, জুবায়ের, ওমায়ের বাবু, সাজ্জাদ হোসেন, হাসান, মাসুদ বিশ্বাস ও নুর মোহাম্মদসহ আরও কয়েকজন তরুণ। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘এমন উদ্যোগের কথা শুনে খুবই ভালো লাগছে। এই মহৎ কাজের মাধ্যমে আয়োজকরা আল্লাহর রহমত পাবেন বলে মনে করি।’

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More