অন্যের স্ত্রী হেনাকে ফুঁসলিয়ে হাতিয়ে নেন আসকারী

চুয়াডাঙ্গায় রুজুকৃত প্রতারণা মামলায় গ্রেফতারকৃত জনিকে জেলহাজতে প্রেরণ
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার জামাই হওয়ার মধ্যেও রয়েছে আসকারীর ছলচাতুরি। মেরিনা আক্তার হেনাকে অন্যের কাছ থেকে ফুঁসলিয়ে নিজের স্ত্রী করে নেন আসকারী। তার অফিসেরই সজিব নামের একজনের স্ত্রী ছিলেন মেরিনা আক্তার হেনা। প্রথমপক্ষের রয়েছে এক ছেলে। ছেলে মেহেরাব ঢাকার একটি মাদরাসার আবাসিক ছাত্র। এদিকে গ্রেফতারকৃত রায়হান উদ্দীন জনিকে গতকাল জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আদালতে সোপর্দ করলে বিজ্ঞ বিচারক তাকে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।
নবাব সল্লিমুল্লাহর নাতি সেজে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বহু মানুষের নিকট থেকে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে ঢাকায় গ্রেফতারকৃত আলী হাসান আসকারী ও তার স্ত্রী চুয়াডাঙ্গা সবুজপাড়ার মেরিনা আক্তার হেনা ও হেনার ভাই জনির বিরুদ্ধে গতপরশু চুয়ডাঙ্গা সদর থানায় মামলা রুজু করা হয়। স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি দেয়ার নামে আসকারী তার স্ত্রী শ্যালকের সহযোগিতায় দামুড়হুদার বিষ্ণুপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের নিকট থেকে তিন দফায় ১৩ লাখ হাতিয়ে নেয়। এ অভিযোগ তুলে রফিকুল ইসলাম মামলা দায়ের করলে সদর থানা পুলিশ পরশু কোর্ট রোড থেকে গ্রেফাতর করে জনিকে। গতকাল মঙ্গলবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন। নবাব পরিবারের ছেলে পরিচয়ে দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকার বহু মানুষের নিকট থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়া আলী হাসান আসকারী সারা দেশে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুবাই আছে স্বর্ণের কারখানা, সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজবেথ হাসপাতালের অংশিদার বলে পরিচয় দিয়েও প্রতারণা করেছেন তিনি। এই আসকারী চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের সবুজপাড়ার জামাই হলেন কীভাবে? এ প্রশ্নও উঠে আসছে আলোচনায়। এ বিষয়ে জানতে গিয়ে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। মেরিনা আক্তার হেনার সাথে সরাসারি কথা বলতে না পারলেও তার প্রতিবেশীসহ নিকটাত্মীয়দের কয়েকজন অভিন্ন ভাষায় বলেছেন, আনুমানিক ১৩/১৪ বছর আগে মেরিনার সাথে বিয়ে হয় সজিব নামের একজনের সাথে। সজিব ঢাকাতেই থাকতেন। ওই সজিব চাকরি করতেন আসকারীর এক অফিসে। মিস্টার ক্যাশ নামে ওই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে গিয়ে সজিব হারান তার স্ত্রী মেরিনা আক্তার হেনাকে। হেনা ওই সময় আসকারীর চোখে পড়ে যায়। নানাভাবে ফুঁসলিয়ে প্রথম স্বামীর সংসার ত্যাগ করিয়ে নিজেই বিয়ে করেন আসকারী। এই আসকারী যখন চুয়াডাঙ্গা সবুজপাড়াস্থ শ্বশুরবাড়িতে আসতেন তখন তার আলগা ফুটুনি দেখে সমালোচনাও হয়েছে বিস্তর। মসজিদে জন্মদিনের কেক কাটতে গিয়ে আসকারীকে প্রতিরোধের মুখেও পড়তে হয়। পক্ষকাল আগে মেরিনা আক্তার হেনা কন্যাসন্তান প্রসব করেন। এ খবর পেয়ে আসকারী চুয়াডাঙ্গায় আসেন। তিনি কয়েকদিন ধরে এলাকায় উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করে উৎসবের আমেজ ফুটিয়ে তোলেন। মেরিনার এক আত্মীয়ের বাড়ি সপ্তাহ জুড়ে চলে উৎসব। চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকায় ফেরার পরপরই গত ২৮ অক্টোবর বুধবার আসকারী তার ৫ সহযোগীসহ ডিএমপি’র কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের ইকোনমিক ক্রাইম ও হিউম্যান ট্রাফিক পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। প্রকাশ পায় আসকারীর নানা অপকর্ম। এরপরই চুয়াডাঙ্গার যারা তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন তাদের কেউ কেউ মামলা দায়েরের উদ্যোগ নেন। এদেরই একজন দামুড়হুদা উপজেলার বিষ্ণুপুরের রফিকুল ইসলাম। তিনি তার বোনের চাকরির জন্য আসকারীকে প্রথম চেকের মাধ্যমে ৭ লাখ ও পরে স্ত্রী-শ্যালকের মাধ্যমে দু’দফায় তিন লাখ করে আরও ৬ লাখ টাকা দেন। মোট ১৩ লাখ টাকা প্রতারণার শিকার হয়ে রফিকুল মামলা দায়ের করলে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। জনিকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি আসকারীকে এ মামলা শোন অ্যারেস্টেরও আবেদন করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই আহসানুর রহমান। জনিকে রিমান্ডের আবেদনও জানানো হয়েছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More