আলমডাঙ্গা উপজেলার নির্দিষ্ট এলাকায়া ক্ষুরারোগের প্রাদুর্ভাব

অসুস্থ অধিকাংশ গরু কসাইরা কিনে বাজারে মাংস বিক্রি করছেন

ভালাইপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নির্দিষ্ট এলাকায় ক্ষুরারোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রায় অর্ধশতাধিক গরু মারা গিয়েছে। অসুস্থ প্রায় চার শতাধিক। আর অসুস্থ অধিকাংশ গরুই নাম মাত্র দামে কসাইরা কিনে, বর্তমান দামেই গরুর মাংস বাজারে বিক্রি করছে। চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার কুলপালা, রুইতনপুর, চিৎলাসহ আশপাশ এলাকায় প্রচুর ক্ষুরারোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ক্ষুরারোগে আক্রান্ত অধিকাংশ গরুই মারা যাচ্ছে।    সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, মারা যাওয়া এসব গরুর মালিকেরা বেশির ভাগই দরিদ্র, প্রান্তিক চাষী, দিনমুজুর এবং অসহায় নারী। হঠাৎ এ রোগে আক্রান্ত হয়ে গুরু মারা যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবারগুলো। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আলমডাঙ্গা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করে চিকিৎসা প্রদান করছেন বলে জানাগেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক চাষী মজিবর রহমানের ছেলে মোহর আলী, মৃত হামিদ শাহ’র ছেলে ইমরুজ শাহ, তাইজাল মন্ডলের ছেলে উম্বাত আলী, ইসলাম উদ্দিনের ছেলে রফিকুল ইসলাম, মজিবুল হক, খুদে মিয়া, মুনছার হোসেনের ছেলে শিপলু বলেন, গত প্রায় দেড়মাস আগে আমাদের এলাকায় কয়েকটি বাড়িতে পালন করা গরুর পায়ে ক্ষুরারোগের প্রাদুর্ভাব দেখাদেয়, এর কিছু দিনের ব্যবধানে মহামারি আকার ধারন করে ছোটছোট খামার বা বাড়িতে পালন করা গরুর পায়ে ক্ষুরারোগসহ বিভিন্ন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সাড়ে ৪শত থেকে সাড়ে ৫শত গরু এরোগে আক্রান্ত হয়েছে। মারাগেছে ৫০টির ওপরে গরু। কসায়ের কাছে বিক্রি করেছে ৭০-৭৫টি গরু। মুমূর্ষ অবস্থায় জবাই করছেনে ১২-১৩ টির বেশি গরু।

খামারি ও গরু পালনকারিরা জানান, গরুর ক্ষুরের ভিতরে প্রথমে লাল হচ্ছে, তারপর ক্ষুরের ভিতর ক্ষত সৃষ্টি হচ্ছে। আস্তে আস্তে শুষে পড়ছে। যদিও গরু হাটছে সেটাও খুড়িয়ে খুড়িয়ে। চাষী স্বপন জানান মাসখানেকের ভিতর প্রায় ২৫/২৬টা গরু মারা গিয়েছে, কিন্তু প্রশাসনের কেউ কোন উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা নেয়নি। এদিকে খামারিরা গরু ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হলেই নামমাত্র দামে কসাইদের নিকট বিক্রি করে দিচ্ছে। এলাকাবাসী ও খামারি বলেন আগে কখনও ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে গরু মারা যায়নি। এবারই প্রথম ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে গরু মারা যাচ্ছে। তিনারা আরো জানান, গরু জবাই করে দেখা যাচ্ছে ভেতরে পিত্তথলীসহ বিভিন্ন জায়গাতে ক্ষতসৃষ্টি হয়েছে। খামারি ও এলাকাবাসী জানান, প্রাণি সম্পদের কর্মকর্তারা ঠিকমত গরুর চিকিৎসা দিচ্ছেননা বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও ক্ষুরারোগের ভ্যাকসিনও ঠিকমত সরবরাহ করেনা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপ পরিচালক ডা. মিহির কান্তি বিশ্বাস বলেন, ইবি মেরাল ফেবার, থ্রি ডে সিকনেন্স নামক এই ভাইরাসটির পাশাপাশি ক্ষুরারোগ ছড়িয়ে পড়ে গরু আক্রান্ত হচ্ছে। তবে আলমডাঙ্গা চিৎলা ইউনিয়নের কুলপালা, রুইথনপুর, চিৎলা ও কুলপালার পাশ্ববর্তী এলাকার এই ঘটনা আমি শুনেছি। এই ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রন করা বা সঠিক চিকিৎসা প্রদানের জন্য আলমডাঙ্গা প্রাণি সম্পদ দপ্তরের ৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করে চিকিৎসা প্রদান করার ব্যবস্থা করেছি। তিনি আরো বলেন ইবি মেরাল ফেবার বা থ্রি ডে সিকনেন্স ও ক্ষুরারোগ এগুলো ভাইরাস জনিত রোগ, অনেক সময় এই ভাইরাসের চরিত্র পরিবর্তন হয়ে গরুমারা যাচ্ছে। এদিকে ক্ষুরা রোগের প্রাদুর্ভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে খামারি ও গরু পালনকারীরা। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More