করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় চুয়াডাঙ্গায় প্রশাসনের তৎপরতা শুরু : জনসচেনতামূলক মাইকিং ও পোস্টারিং

মাস্ক না পরায় বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা : স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তাগিদ
স্টাফ রিপোর্টার: দ্বিতীয় দফায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় প্রশাসনও আগাম ব্যবস্থা গ্রহণে তৎপরতা শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রচার-প্রচারণা ও মাস্ক না পরায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারকগণ সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বলেন, শীত পড়তে না পড়তেই দেশে করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। বাড়ির বাইরে চলাচলরত অবস্থায় ব্যক্তিকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মনে চলতে হবে। কোনো ব্যক্তি এ আইন অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে সংক্রমণ আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শহরে মাস্ক পরিধান না করলে কাউকে সেবা প্রদান করা যাবে না। মাস্ক পরিধান ব্যতীত গণপরিবহনে ভ্রমণের কোনো সুযোগ নেই। দোকানে কিংবা মার্কেটে মাস্কবিহীন কেউ কেনাকেটা করতে পারবেন না। কঠোরভাবে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে। এ ব্যাপারে শতভাগ আইন প্রয়োগে আমরা দ্ব্যর্থহীন।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক দ্বিতীয় দফা করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে বড় ধরনের আঘাত আনতে পারে। করোনা ভাইরাস যাতে ছড়াতে না পারে সেই লক্ষ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মাস্ক পরিধান করে শপিং করতে হবে। এছাড়া বাসে, ট্রেনসহ সকল অফিসে মাস্ক পরে চলাচল করতে হবে। কোনো ক্রমে আইন অমান্য করা যাবে না। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সরোজগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ‘নিজে মাস্ক পরিধান করুন, অন্যকে উৎসাহিত করুন’ এ সেøাগানকে সামনে রেখে প্রচারণা চালিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান কুতুবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে জনসচেনতামূলক মাইকিং ও পোস্টারিংয়ের উদ্বোধন করেন। প্রচারণায় সহযোগিতা করেন কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান আলি আহম্মদ হাসানুজ্জামান মানিক ও পুলিশ সদস্যবৃন্দ।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। গতকাল মঙ্গলবার এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দিনভর শহরে অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। অন্যান্য স্থানের মতো আলমডাঙ্গায়ও শতভাগ মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতে উপজেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। গতকাল মঙ্গলবার আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধানের ব্যাপারে সচেতন করতে মাইকিং করা হয়। শতভাগ মাস্ক পরিধান নিশ্চিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন আলীর নেতৃত্বে শহরের সর্বত্র অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৮ জনকে জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা থানার এসআই তৌকির, আলমডাঙ্গা পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক আনিছুর রহমান, স্যানেটারি ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান রানা, সহকারী লাইসেন্স পরিদর্শক সৈয়দ বাবুল আক্তার, আবু সায়েম প্রমুখ।
দামুড়হুদা অফিস জানিয়েছে, দামুড়হুদার দেউলী মোড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৬জনকে জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে আদালতের বিচারক দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মহিউদ্দিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় দ-বিধি ১৮৬০ সালের ১৮৮ ধারায় সরকারি কর্মচারী কতৃক জারীকৃত আদেশ অমান্য করে মাস্ক পরিধান না করার অপরাধে ৫জনকে ও সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ সালের ৬৬ ধারায় ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকার অপরাধে ১ জনকে জরিমানা করে আদালতের বিচারক। এ সময় দ-িত ৬ জনের কাছ থেকে ২৫’শ টাকা জরিমানা আদায় করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সহযোগিতা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসের পেশকার জিহন আলী, দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশ সদস্যবৃন্দ।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা জীবননগর শহরের প্রাণকেন্দ্র বাসস্ট্যান্ড ট্রাফিক আইল্যান্ড এলাকায় মঙ্গলবার দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে মাস্ক ব্যবহার না করায় ১৮ জনকে নগদ অর্থদ- প্রদান করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম মুনিম লিংকন। ভ্রাম্যমাণ আদালতসূত্র থেকে জানা যায়, বর্তমান করোনা প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে মাস্ক ব্যবহার না করার অপরাধে সোমবার বেলা সাড়ে ১২টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত শহরের বাসট্যান্ড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ১৮৬০ সালের ২৬৯ এর ধারার অপরাধে ১৮ জনকে নগদ ২ হাজার বিশ টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More