কেরুজ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক সাধারণসভায় ছিলো না বরাবরের মতো জোস

কথার তীরে ছিলো না তিক্ততা করা হয়নি একে অপরকে ধবল ধোলাই : ৮ মার্চেই ভোট

হারুন রাজু/হানিফ ম-ল: স্মরণকালের রেকর্ড ভাংলো এবারের সাধারণসভায়। দুপুর ১২টায় সভা শুরু করে বিকেল ৪টার মধ্যেই করা হয়েছে শেষ। এবারের সভায় ছিলো না বরাবরের মতো জোস। নেতাদের কথায় ছিলো না তিক্ততার বিষ। কথার তীরে ঘায়েল করতে দেখা যায়নি কাউকে। বক্তব্যে একে অপরকে করেনি ধবল ধোলাই। শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই দ্বি-বার্ষিক সাধারণসভা হয়েছে শেষ। গতকাল শনিবার সকাল ১০টার দিকে কেরুজ গ্যারেজ সেডে আয়োজন করা হয় শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক সাধারণসভা। নির্ধারিত সময়েও শুনশান ছিলো সভা চত্বর। সাড়ে ১১টার পর থেকে শ্রমিক সংগঠন থেকে দলেদলে মিছিল সহকারে নেতারা কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে হাজির হন সভাস্থলে। দুপুর ১২টার দিকে শুরু হয় আলোচনাপর্ব। পবিত্র কোরআন তেলওয়াত ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে সভার কার্যক্রম শুরু হয়। শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি তৈয়ব আলীর সভাপতিত্বে সভায় বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাবসহ ৫ পৃষ্ঠা বিশিষ্ট প্রতিবেদন পাঠ করেন সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুদ। ২০১৯ সালের আয় দেখানো হয়েছে ১১ লাখ ৫৭ হাজার ৩১৭ টাকা। ওই বছরেই ব্যয় করা হয়েছে ৫ লাখ ৭০ হাজার ৫০০ টাকা। অবশিষ্ট টাকার পরিমাণ ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৮১৭ টাকা। ২০২০ সালে আয় হয়েছে ১২ লাখ ৪৫ হাজার ১৫৩ টাকা এবং ব্যয় হয়েছে ৬ লাখ ৩৬ হাজার ৫৬০ টাকা। ফলে ২ বছরের আয়-ব্যয় হিসাবে অবশিষ্ট টাকার পরিমাণ ৬ লাখ ৮ হাজার ৫৯৩ টাকা। সভায় অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা করেন সভাপতি প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ সবুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম প্রিন্স, বর্তমান পরিষদের সহসম্পাদক খবির উদ্দিন, আবু সাঈদ, হাজি আকরাম আলী, এসএম কবির, মোহন ইসলাম, নুর ইসলাম, ইদ্রিস আলী, হাফিজুল ইসলাম, সাইফ উদ্দিন সুমন প্রমুখ। সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের উপস্থাপনায় আরও আলোচনা করেন সাবেক সহসভাপতি ফারুক আহমেদ, রেজাউল করিম, ইসমাইল হোসেন, বাবর আলী, শরিফুল ইসলাম প্রমুখ। সভায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট প্রস্তাবিত নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) রাব্বিক হাসান, সদস্য সচিব ব্যবস্থাপক (ডিস্টিলারি) ফিদাহ হাসান বাদশা, উপব্যবস্থাপক (সংস্থাপন) আবুল ফাত্তাহ, গ্যারেজ ইঞ্জিনিয়ার আবু সাঈদ ও সহব্যবস্থাপক (ভূমি) জহির উদ্দিনকে। গত নির্বাচনের তুলনায় এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে মাত্র ১দিন আগে। সাধারণসভা অনুষ্ঠিত হলো ৬দিন আগে। কেরুজ নির্বাচন মানেই মহোৎসব। এ নির্বাচন গোটা জেলাবাসীকে জানান দেয়। গোটা মরসুম জুড়ে নির্বাচনী বাতাসশ থাকে গরম। কেরুজ আঙিনা ভোটার ও বহিরাগতদের পদচারণায় মুখরিত থাকে। প্রার্থীদের দৌড়-ঝাপ-ভোটারদের দলে ভেড়ানোর কায়দা-কৌশল অবলম্বনে থাকে না কমতি। ভোটারদের মন গলাতে বানের পানির মতো খরচ করা হয়ে থাকে টাকা। দীর্ঘদিনের এ ধারাবাহিকতা খানেকটা থমকে গেছে এবারের নির্বাচনে। ভোটের বাকি মাত্র ১৫দিন। নেই নির্বাচনী আলোচনা, প্রচারণা, দৌড়-ঝাপ, সংগঠন অফিসগুলোতে নেই ভোটারদের আনা-গোনা, সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে আলোকসজ্জায় সজ্জিত সংগঠন কার্যালয়গুলো পেটভোজনের আয়োজন পড়ছে না চোখে। অনেকটাই যেন ভূতরে অবস্থায় পরিণত হয়েছে কেরুজ এলাকা। এবার প্রার্থীরা ভোটার ও সমর্থকদের নিয়ে কোনই মহড়া দিচ্ছে না। দেখাচ্ছে না দল ভারী দেখানো শো-ডাউন। নেপথ্যে রয়েছে বহু রহস্য। অনেকেই মন্তব্য করে বলেছে, চাকে সেই মধু নেই বলেই কি মৌমাছির গুনগুনানি বন্ধ? থলেতে কি নেই নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য? নাকি অন্যান্য মিল বন্ধের আতঙ্ক বিরাজ করছে কেরুতেও? এখনো পর্র্যন্ত কি নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রধান হাতিয়ার মদ বিক্রয় কেন্দ্রের এজেন্টদের দেখা মিলেনি? নাকি এজেন্টরা অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবে? দীর্ঘদিন সংগঠন কার্যালয়গুলো জনমানবহীন থাকলেও হঠাৎ করেই গতকাল থেকে জমজমাট অবস্থায় পরিণত হওয়ার নেপথ্যের রহস্যই বা কি? তবে গতকাল শনিবার সকাল থেকেই সংগঠনগুলো ছিলো কর্মী, সমর্থক, ভোটার ও বহিরাগতদের ভীড়। প্রত্যেক সংগঠন থেকে বিশাল র‌্যালি সহকারে সভাস্থলে যোগদান করা হয়েছে। এ নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানিয়েছেন, তৈয়ব সংগঠনের কর্ণধর বর্তমান পরিষদের সভাপতি তৈয়ব আলী ও সবুজ সংগঠনের কর্ণধর ফিরোজ আহমেদ সবুজ। সাধারণ সম্পাদক পদে মাঠে থাকবেন বলে জানিয়েছেন মাসুদ সংগঠনের কর্ণধর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান ও প্রিন্স সংগঠনের কর্ণধর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম প্রিন্স। এছাড়া সহসভাপতি ও যুগ্মসম্পাদকসহ সদস্য পদে অসংখ্য প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। কবে নাগাদ নির্বাচন পরিচালনা কমিটি তফসিল ঘোষণা করবে তা এখনো জানা যায়নি।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More