কয়েকজন শিক্ষিত যুবকদের আত্নত্যাগ ও বিদ্যানুরাগী ব্যক্তির পরিশ্রমের ফসল কার্পাসডাঙ্গা ডিগ্রী কলেজ

রতন বিশ্বাস : দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গায় একটি স্বনামধন্য ও ঐতিহ্যমন্ডিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কার্পাসডাঙ্গা ডিগ্রী কলেজ। কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের কয়েকজন উল্লেখযোগ্য শিক্ষিত যুকদের আত্নত্যাগ ও বিদ্যানুরাগী ব্যক্তির অক্লান্ত পরিশ্রমে ১৯৯৯ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। জানাযায় কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের সাংবাদিক আতিয়ার রহমান ও আমিনুল ইসলাম মাষ্টার্স পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি এসে কলেজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য বিভোর হয়ে পড়ে। পরে আতিয়ার রহমান আহবায়ক হয়ে কলেজ তৈরীর পরিকল্পনা করে চিঠি তৈরী করে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিকট চিঠি পৌছে দেয় মিটিং করার জন্য। ইউনিয়ন পরিষদে মিটিং শেষে বিদ্যানুরাগী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মরহুম অ্যাডঃ ইউনুস আলী, দামুড়হুদা থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক ও বীর মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মরহুম এম মফিজুর রহমানসহ এলাকার গন্যমাণ্য ব্যক্তিদের নিয়ে কলেজ প্রতিষ্ঠা করার কাজ শুরু হয়।কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বর্তমান অবসরপ্রাপ্ত শওকত আলীকে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি করে ও আব্দুল হামিদকে অস্থায়ী অধ্যক্ষ কলেজের কার্যক্রম কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পুরোন ভবণে শুরু হয়। কিছুদিন ক্লাস হওয়ার পরে কার্পাসডাঙ্গা গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের বিভিন্ন মানুষের কাছে থেকে বাশ নিয়ে এসে এলাকার মানুষের অনুদানের টাকায় টিন কিনে কার্পাসডাঙ্গার মূল কুঠিবাড়ির পাশে ঝাপের বেড়া ও টিনের চাল দিয়ে তৈরী করা হয় দুই কক্ষ বিশিষ্ট কলেজের শ্রেণীকক্ষ ও অফিস। পরের বছর আবারও এলাকার মানুষের সহযোগিতায় কলেজ স্থানান্তর করে বর্তমান স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০০১ সালে মোঃ হামিদুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দ্বায়িত্ব পালন করেন। এবং ২০০২ সালে তিনি অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান। বর্তমানে এখনো তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করছেন। পহেলা মে ২০০৪ সালে কলেজটি এমপিও ভুক্ত হয়। জানাগেছে কলেজ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সহিদুল হক ,২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হবি ,২০০৬ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রনজিত কুমার দাস, ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহরুল হক, ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলি মুনছুর বাবু কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহন করার পর সহযোগিতা ও পরিকল্পনার আলোকে কলেজের শিক্ষা ও সার্বিক উন্নয়নের দিকটাকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা ২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাজি আলী আজগার টগর কলেজের ৪তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন নির্মাণসহ প্রতিটি উন্নয়ন পরিক্রমা বাস্তবায়নে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এবং প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষার অভাবনীয় পরিবর্তন ঘটাতে সুষ্ঠু পরিকল্পনা মাফিক সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। কলেজের অধ্যক্ষ ও প্রভাষকদের মেধা ও বুদ্ধি খাটিয়ে আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে কর্তব্য ও নিষ্ঠার সাথে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে যাচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন করে কলেজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে । মানসম্মত শিক্ষা বিস্তারে কলেজটি বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে । ২০১৬ সালে কলেজ ডিগ্রীতে রুপান্তরিত হয়। বর্তমানে কলেজে ৬৮৭ জন শিক্ষার্থী এইচ এসসি ও ১৫৫ জন শিক্ষার্থী ডিগ্রীতে লেখাপড়া করছে। দেখতে দেখতে ২২ বছরের পুরনো প্রতিষ্ঠান হয়ে গেছে। এই কলেজের অনেক শিক্ষার্থী আজ প্রফেসর, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, আইনজীবী, কবি, লেখক, সাংবাদিক, রাজনীতিক ও সফল ব্যবসায়ী হয়ে স্বস্ব পেশায় কৃতিত্বের সাক্ষর রাখছেন।  সকলের সহযোগিতায় কলেজেটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় আজ এলাকাবাসি তার ফল ভোগ করছেন। এখন আর সাইকেলযোগে দর্শনা কিংবা চুয়াডাঙ্গা কলেজে যেতে হয় না শিক্ষার্থীদের। কলেজ প্রতিষ্ঠায় অনেকেই জড়িত থাকলেও স্থানীয় শিক্ষিত যুবকদের নিরবচ্ছিন্ন শ্রম কৃতজ্ঞতার দাবী রাখে।
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More