গাংনীতে নিম্নমানের রাস্তার কাজ বন্ধ : অদৃশ্য ইশরায় আবার চালু

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনীর করমদি-কল্যাণপুর কালিতলা সড়কের সংস্কার কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কারণে বাধা দেয় এলাকাবাসী। এক পর্যায়ে কাজ বন্ধ করে দেয় এলজিইডি। অবশ্য কয়েক ঘণ্টা পর আবারও কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সংশ্লিষ্ঠদের অদৃশ্য ইশারায় নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ শুরু হয়েছে অভিযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এলাকার মানুষ।

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অর্থায়নে আইআরডি-৩ প্রকল্পের আওতায় করমদি সন্ধানী বাজার থেকে কল্যাণপুর কালিতলা সড়কের ১.৫ কি.মি রাস্তা সংস্কার হচ্ছে ১কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যায়ে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চুয়াডাঙ্গার মেসার্স আরএম ব্রিকস্ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। জানা গেছে, সড়ক সংস্কারে প্রাইম কোড দিলেও নিয়ম না মেনেই সময়ের আগেই কার্পেটিং শুরু করা হয়। প্রাইম কোড দেয়ার পরে ট্যাগকোড দেয়ার নির্দেশনা থাকলেও তা সঠিকভাবে দেয়া হচ্ছে না। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাস্তার দুই পাশের কাটা মাটির মিশ্রিত বালি দিয়ে বক্স না করেই নিম্নমানের ইট, খোয়া ও কার্পেটিংয়ে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে এ সড়কটিতে। এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ রোববার বিকেলে কাজ বন্ধ করে দেয়। বিটুমিন ও পাথরের মিশ্রণ ঠিক হয়নি তাই মালামাল সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন মেহেরপুর এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী নিঝুম আফরিন। এদিকে কাজ বন্ধ  হলেও গতকাল সোমবার সকাল থেকে প্রতিদিনের মতো আবারও কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। একই নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ শুরু হলে এলাকার মানুষের মাঝে তীব্র সমালোচনা ও ক্ষোভ শুরু হয়। কিন্তু সদুত্তোর  মেলেনি এলজিইডি দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কাছ থেকে। স্থানীয়দের অভিযোগ, গাংনী উপজেলায় উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সরকার বছর বছর কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও সংশ্লিষ্টদের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। প্রকল্প গুলোতে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের ফলে কিছুদিনের মধ্যেই রাস্তাটি ভেঙে জলে যাচ্ছে সরকারি টাকা। কয়েক মাস যেতে না যেতেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে এসব সড়ক। ফলে দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে এলকাবাসী। স্থানীয় যুবক শামীম হোসেন জানান, রাস্তার কাজে অনিয়মের শেষ নেই। নিম্নমানের পিচ, পাথর দিয়ে তৈরি হচ্ছে রাস্তা। তিনি আরো বলেন, বিটুমিন মেশানোর মেশিনের কালো ধোঁয়ায় আমার ১৭দিন বয়সী শিশুর শ্বাসকষ্টসহ আশেপাশে মানুষের অনেক সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস করেনি। তেতুঁলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা বিশ্বাস জানান, আমি গত তিনদিন আগে রাস্তাটি পরিদর্শন করেছি। একদমই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরি হচ্ছে। উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারকে ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে। গাংনী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী ফয়সাল হোসেন জানান, রাস্তাটি সকালে আমি পরিদর্শন করে এসেছি। তাদেরকে ট্যাগ কোড দিতে বলা হয়েছে। তারা যদি সঠিক কাজ না করে তাহলে আমি কাজ বন্ধ করে দিব। মেহেরপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি টিম পরিদর্শন করে এর সত্যতা পেয়েছে। বিটুমিনের যে পরিমাণ তাপমাত্রা দেয়ার কথা ছিলো তার থেকে অধিক পরিমাণ তাপমাত্রা দেয়াই বিটুমিনগুলোকে ফেলে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। এদিকে এলজিইডি সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তারা কাজের বিভিন্ন দিক নানা ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করলেও কিভাবে কাজ শুরু হলো তা নিয়ে এলাকার মানুষ সন্তুষ্ট নয়। এলাকার মানুষের অভিযোগ, অদৃশ্য কোন হাতের ইশারায় বন্ধ করে দেয়া কাজ আবারও নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ হচ্ছে তা খতিয়ে দেখার কেউ নেই।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More