চুয়াডাঙ্গার খাড়াগোদায় মারামারির ঘটনায় যুবলীগের সভাপতিসহ গ্রেফতার ২

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার খাড়াগোদায় আওয়ামী লীগ-যুবলীগের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় দর্শনা থানায় ৩০ জনকে আসামি করে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ গড়াইটুপি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতিসহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। প্রথম ঘটনা পারিবারিক বিরোধের জেরে চড়থাপ্পড়ের ঘটনা ঘটলেও পরবর্তীতে বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে হামলা এবং মামলা হয়েছে বলে স্থানীয় আ.লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা মনে করছেন।
পারিবারিক বিরোধের জেরধরে চুয়াডাঙ্গা খাড়াগোদার বাজারে আ.লীগ ও যুবলীগের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের ৬জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে আ.লীগ নেতা লিটনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই গোষ্টবিহার গ্রামের লাল মোহাম্মদের ছেলে রাশেদ বাদী হয়ে ৬জনের নাম উল্লেখ করে ৫/৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে দর্শনা থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় সোনামিয়ার ছেলে বিপুল হোসেনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। অপরদিকে লিটনের পিতা তাহাজ উদ্দিন বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এ মামলায় গড়াইটুপি ইউনিয়নের যুবলীগের সভাপতি রাশেদুজ্জাান পলাশকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতাকৃত পলাশ ও বিপুলকে গতকাল শনিবার সকালে আদালতে সোপর্দ করেছে। স্থানীয় আ.লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা মন্তব্য করে বলেন, রাশেদুজ্জামান পলাশের বোনকে নিয়ে গ্রামের ভাটার ছেলে মুকুল ছিনিমিনি খেলছিলো। আর তাতে মদদ যোগাচ্ছিলো ২নং ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি লিটন মিয়া। ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে যুবলীগ নেতা রানা লিটনকে সতর্ক করে চড়থাপ্পড় মারে। এর প্রতিশোধ নিতে লিটন তার বেয়ায় তিতুদহ ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি শুকুর আলী মিয়া এবং গড়াইটুপি ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহিদকে বলেন। যে কথা সেই কাজ লিটন, শুকুর আলী ও জাহিদুল ইসলাম তারা তাদের লোকজন নিয়ে খাড়াগোদা বাজারে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করে দলবল নিয়ে পলাশের ভাই শিমুলের দোকানে যায়। এ সময় দোকানে পলাশ ও শিমুল বসে ছিলো। উভয়পক্ষ মুখোমুখি হতেই উত্তেজনা বেড়ে যায়। একপর্যায়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের রূপ নেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আহত হয় শুকুর আলী পক্ষের বেয়ায় লিটন, রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে ঝন্টু, ছয়রদ্দিনের ছেলে আহাদ আলী। পলাশ পক্ষের আহত হয় পলাশ ও তার ভাই শিমুল এবং রসুলের ছেলে হাবিবুর রহমান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, প্রথম চড় থাপ্পড়ের বিষয়টি আ.লীগ নেতারা আলোচনা করে দলবল নিয়ে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে না গেলে আজকের এ ঘটনা ঘটতো না। কারণ ছবিতেই দেখা যাচ্ছে কাদের হাতে হাতুড়ি, বাটামসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র। আত্মরক্ষার্থে পলাশ ও শিমুল ঘুরে দাঁড়াতেই বেধে যায় সংঘর্ষ। যুবলীগ নেতা পলাশের পারিবারিক বিষয়টি পরবর্তীতে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা এবং মামলায় রূপ নেয়। একটি সূত্র জানায়, মারামারির সময় নিকটবর্তী জনৈক আ.লীগ নেতার বাড়ি থেকে বস্তাভর্তি রামদা, হাতকুড়াল, হেঁসো ছাদের ওপর থেকে নিচে ফেলা হয় যা অনেকেই দেখেছে। পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়া এসব কেন নেতার বাড়িতে থাকবে। যুবলীগ নেতা পলাশ একসময় আ.লীগ নেতা জাহিদ ও শুকুর আলীর অত্যন্ত আস্থাভাজন লোক ছিলো। স্বার্থ আর রাজনৈতিক কারণে আজ একে অপরের শত্রুতায় রূপ নিয়েছে। গড়াইটুপি ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা দলীয়করণ করিনি পারিবারিক বিষয়টি যুবলীগ দলীয়ভাবে নিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে পলাশের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয় গড়াইটুপি ইউনিয়ন আ.লীগের কতিপয় নেতা একটি মেয়ের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা শুরু করে দিয়েছে। বোন বা মেয়ের জীবন নিয়ে কেউ ছিনিমিনি করলে কারো মাথায় ঠিক থাকার কথা না। স্থানীয় আ.লীগ নেতারা মিটিং করে পরিকল্পিতভাবে পলাশকে পূর্বশত্রুতার জের ধরে হত্যা করতে এসেছিলো। ওই হামলায় বাহিরের জেলার লোকও ছিলো। দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মাহাববুর রহমান কাজল বলেন, উভয়পক্ষই মামলা করেছে সে মামলায় মেয়ের ভাই আর ছেলের ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More